বিভ্রান্ত আলেমদের প্রচার বর্জন করুন

আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলে অতিথিরা
আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলে অতিথিরা

শবে বরাতসহ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের বিরুদ্ধে একদল আলেম নানা বিভ্রান্তিমূলক প্রচার চালাচ্ছেন। বিভ্রান্ত এই আলেমদের প্রচার বর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন আমেরিকার মদিনার আলো ও লাইট অব দ্য অর্থের প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক আব্দুল ওয়াহিদ টুপন।
পবিত্র লাইলাতুল বরাত উপলক্ষে গত ১৯ এপ্রিল আমেরিকায় মদিনার আলো ও লাইট অব দ্য আর্থের অ্যাস্টোরিয়া কার্যালয়ে আয়োজিত আলোচনা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এতে লাইলাতুল বরাতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান। আব্দুল ওয়াহিদ টুপনের সভাপতিত্বে ও মদিনার আলোর অন্যতম উপদেষ্টা মাওলানা অলি উল্লাহ মো. আতিকুর রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এই আলোচনা ও মিলাদ মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী শেখ আখতারুল ইসলাম।
সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মদিনার আলোর উপদেষ্টা গিয়াস আহমেদ, ইমাম মাওলানা শাহ মোজাক্কির হোসেন, আব্দুর রহমান সামছুদ্দীন আহমেদ শামীম, মোহাম্মদ ফজলুল হক প্রমুখ। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন শেখ এম হোসেন, আবুল খায়ের চৌধুরী, গোলাম মোস্তফা, মোহাম্মদ মনজুর রহমান, মিজানুর রহমান, সৈয়দ আহসান মিলাদ, মোহাম্মদ মনির হোসেন, মোহাম্মদ শাহাদাত উল্লাহ, মো. শাহ আব্দুলাহ, শাহিন আলম, সানোয়ার আলম, কাওছার আহমেদ ভূঁইয়া, মোহাম্মদ নাঈম ভূঁইয়া, মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, মমতাজুর রহমান, আলী মোহাম্মদ, মাহফুজুর রহমান প্রমুখ।
স্বাগত ভাষণে আব্দুল ওয়াহিদ টুপন শবে বরাতের ধর্মীয় গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘ইসলামের আগমনের পর থেকেই বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের মুসলমানরা এই পবিত্র রাত নানা ইবাদতের মধ্য দিয়ে পালন করে আসছেন। কিন্তু ইদানীং বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারী একদল আলেম শবে বরাতসহ বিভিন্ন ধর্মীয় দিবস ও অনুষ্ঠানকে বিদাত বলে প্রচার চালাচ্ছে। এদের প্রচারণাকে সর্বক্ষেত্রে বর্জন করা জরুরি। এমন পরিস্থিতিতে পবিত্র কোরআন ও হাদিস অনুযায়ী শবে বরাত রাতের তাৎপর্য ও গুরুত্ব এবং অন্যান্য ধর্মীয় বিষয়াবলির সঠিক তথ্য ও সংবাদ বিশদ ব্যাখ্যাসহ প্রত্যেক মুসলিম, সম্ভব হলে অমুসলিমের কাছে পৌঁছিয়ে দেওয়াই হলো আমেরিকায় মদিনার আলোর উদ্দেশ্য।’
আব্দুল ওয়াহিদ বলেন, ‘শবে বরাতের রাতে মানুষসহ সৃষ্টিজগতের সবকিছুর আগামী এক বছরের ভালো-মন্দ নির্ধারিত হয়। এই কারণেই লাইলাতুল বরাতকে ভাগ্যরজনী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।’ শবে বরাতকে অস্বীকারকারীদের চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আব্দুল ওয়াহিদ বলেন, ‘পবিত্র কোরআনের সুরা দুকানে শবে বরাত সম্পর্কে সুস্পষ্ট বার্তা রয়েছে। এই বার্তা অনুসরণ করেই সারা বিশ্বের মুসলমানরা এই রাতকে গুরুত্বের সঙ্গে পালন করেন। কিন্তু বিপথগামীরা এখন শবে বরাতকে বিদাত হিসেবে প্রচার করছে, যা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। অথচ ফেরেশতা জিব্রাইলকে (আ.) উদ্ধৃত করে মহানবী (সা.) বলেছেন, এই রাতে আল্লাহর রহমতের সবগুলো দরজা সুবে-সাদেক পর্যন্ত খোলা থাকে।’
প্রধান অতিথির ভাষণে আখতার ইসলাম বলেন, ‘আমরা শিশুকাল থেকেই দেখেছি মুসলমানরা শবে বরাত পালন করছেন। কিন্তু এখন এর বিরুদ্ধে নানা ধরনের অগ্রহণযোগ্য যুক্তি দেখানো হচ্ছে। পবিত্র শবে বরাত মানুষের জন্য আল্লাহর বিশেষ নেয়ামত।’
বিশেষ অতিথি গিয়াস আহমেদ বলেন, ‘যারা পবিত্র লাইলাতুল বরাত, ঈদে মিলাদুন্নবী ও পবিত্র মিরাজুন্নবী পালন করে না এবং এগুলোর বিরোধিতা করে, তারা বিভ্রান্ত। এরা কোনো মুসলমানের মৃত্যুর চার দিন ও ৪০ দিন পর তার রুহের মাগফিরাত কামনা করে খাবার, এমনকি মিলাদ ও দোয়ার মাহফিলের আয়োজনকে বিদাত বলে প্রচার করে।’
অন্যান্য আলোচকেরাও অভিন্ন অভিমত ব্যক্ত করে শবে বরাত পালনের গুরুত্ব সবার কাছে তুলে ধরার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে এমন গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় দিবস পালনের উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে তাঁরা মদিনার আলো কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন।
আলোচনা শেষে মাওলানা মোজাক্কির হোসেনের পরিচালনায় মিলাদ ও মাওলানা অলিউল্লাহ মোহাম্মদ আতিকুর রহমানের পরিচালনায় মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।