ইরানকে হুঁশিয়ার করতে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন রণতরি

ইরানকে পরিষ্কার বার্তা দিতে মধ্যপ্রাচ্যে বিমানবাহী রণতরি ও বোমারু বিমান পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ছবি: রয়টার্স
ইরানকে পরিষ্কার বার্তা দিতে মধ্যপ্রাচ্যে বিমানবাহী রণতরি ও বোমারু বিমান পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বা তার সহযোগীদের ওপর যেকোনো হামলায় ইরানকে ‘অমিত শক্তির’ মোকাবিলা করতে হবে। ইরানকে এই পরিষ্কার বার্তা দিতে মধ্যপ্রাচ্যে বিমানবাহী রণতরি ও বোমারু বিমান পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

গতকাল রোববার এ কথা বলেন বোল্টন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। আর এ অবস্থায় নতুন করে এ সিদ্ধান্তের কথা জানালেন মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা। বোল্টন বলেন, ‘বেশ কিছু সমস্যা, উসকানিমূলক আচরণ ও হুমকির পাল্টা জবাব হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে কোনো যুদ্ধ চায় না। তবে আমরা যেকোনো হামলার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত।’ এ লক্ষ্যে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় কমান্ড অঞ্চলে (সেন্টকম) বোমারু বিমানবাহী রণতরি ইউএসএস আব্রাহাম লিংকন মোতায়েন করা হয়েছে।

গত বছর ইরানের পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে আসার পর থেকে আন্তর্জাতিক মহলে ইরানকে একঘরে করে রাখতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইরানের ওপর চাপের পারদ আরও এক ধাপ বাড়ানোর অংশ হিসেবে সে দেশের ‘এলিট বাহিনী’ রেভল্যুশনারি গার্ডকে (আইআরজিসি) বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকাভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

গত মাসের শেষে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ইরান থেকে যারা এখনো তেল কিনছে, নিষেধাজ্ঞা থেকে তাদের অব্যাহতির বিষয়টি তুলে নেবে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, এপ্রিল মাসের পর চীন, ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও তুরস্ককে নিষেধাজ্ঞার গ্যাঁড়াকল থেকে অব্যাহতির সুযোগ পাওয়ার বিষয়টি আর বাড়াবে না যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের তেল রপ্তানি বাণিজ্যকে শূন্যের কোটায় নিয়ে যেতেই এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের।

২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে বিশ্বের বৃহৎ শক্তিগুলো যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন, রাশিয়া ও জার্মানি পারমাণবিক চুক্তি করেছিল। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন বারাক ওবামা। সে চুক্তির মূল বিষয় ছিল ইরান পারমাণবিক কার্যক্রম বন্ধ রাখবে এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি কমিশন ইরানের যেকোনো পারমাণবিক স্থাপনায় যেকোনো সময় পরিদর্শন করতে পারবে। অর্থাৎ, ইরান যাতে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে না পারে, সে জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইরানকে নজরদারির মধ্যে রাখতে পারবে। এর বিনিময়ে ইরানের ওপর থেকে অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গত বছর ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আবার নতুন করে অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করেছেন ইরানের ওপর।