মিশিগানে স্থানান্তরের আগে জেনে নিন

স্বপ্নের দেশ আমেরিকা। সাত সমুদ্র তেরো নদী পাড়ি দিয়ে এসে বাঙালিরা পাড়ি জমিয়েছে আমেরিকার বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে। মূলত আত্মীয়-স্বজন, ঘর-বাড়ির ভাড়া বা দামের ওপর নির্ভর করে এই অভিবাসীরা কোথায় গিয়ে তাদের তরী ভেড়াবে। কোনো অঞ্চলে বাড়ি ভাড়া বা দাম বেড়ে গেলে তাই অনেককেই দেখা যায় তুলনামূলক কম ব্যয়ের অঙ্গরাজ্যের উদ্দেশে যাত্রা করতে। বর্তমানে বিভিন্ন অঞ্চলে আবাসন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় অনেক বাংলাদেশিই পাড়ি জমাচ্ছেন মিশিগানে। কারণ, জীবনযাত্রার ব্যয় কম।
বহুকাল আগে থেকেই (প্রায় চার দশক) মিশিগানে বাঙালিদের আনাগোনা চলছে। জীবনযাত্রার ব্যয় কম হওয়াই এর পেছনে মূলত কাজ করেছে। এই একই বাস্তবতা এখনো বিদ্যমান। বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য ও শহর থেকে মিশিগানে স্থানান্তরের কথা ভাবছেন অনেকেই। কিন্তু এ ক্ষেত্রে একটি সমস্যা সব সময়ই সামনে এসে দাঁড়ায়। আর তা হলো, স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় তথ্যের ঘাটতি। ফলে অনেকেই সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধায় ভোগেন।
বাঙালি অভিবাসীরা এক অঙ্গরাজ্য থেকে অন্য অঙ্গরাজ্যে স্থানান্তরিত হওয়ার সময় প্রথমেই উদ্দিষ্ট শহরের আবাসন ব্যয়ের বিষয়টি বিবেচনা করেন। আমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চলে বাসা ভাড়া বা বাড়ির দাম আকাশচুম্বী। অনেকে হয়তো যা উপার্জন করেন, তার অধিকাংশই চলে যায় বাসা ভাড়া দিতে। তাই এ বিষয়টিই এ ধরনের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করবে—এটাই স্বাভাবিক। তাই মিশিগানে স্থানান্তরের আগে এ অঙ্গরাজ্যের কোথায় আবাসন ব্যয় কেমন, তা জেনে নেওয়া জরুরি। কারণ মিশিগানের সব অঞ্চলেই আবাসন ব্যয় এক রকম নয়। মিশিগানের যে অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি বাঙালির বসতি, তার নাম হ্যামট্রমিক। এখানে বছরের যেকোনো সময় ঘর ভাড়া পাওয়া দুরূহ। ঘর ভাড়া সাধারণত ৪০০-৫০০ ডলারের মধ্যে পাওয়া যায়। আর ঘর কিনতে চাইলে দাম পড়বে আনুমানিক ১ লাখ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার। মিশিগানের সবচেয়ে বড় শহর ডেট্রয়েট। এই শহরেও রয়েছে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বাঙালির বাস। মোটর সিটি নামে পরিচিত এ শহরে ঘর ভাড়া সাধারণত ৮০০ ডলারের মধ্যে পাওয়া যায়। এ তুলনায় বাড়ি কিনতে ব্যয় করতে হবে কম। আনুমানিক ৭০ হাজার ডলারের মধ্যে ছোটখাটো বাড়ি কেনা যাবে ডেট্রয়েটে।
মিশিগানে সবচেয়ে বেশি আবাসন ব্যয় ওয়ারেনে। এ এলাকায় বাসা ভাড়া পড়বে ৮০০-৯০০ ডলার। আর কিনতে গেলে খরচ পড়বে আনুমানিক ২ লাখ ডলার। মনে রাখা জরুরি যে, এই এলাকায় বাড়ি বাবদ করও বেশি দিতে হবে। এ ছাড়া স্টার্লিং হাইটস, ট্রয়, রচেস্টার, রচেস্টার হিলস, ফারমিংটন, ফারমিংটন হিলস, নোভাই, নর্থভিল, কেন্টন, ডিয়ারবর্ন হাইটস, টেইলর, সাউথগেট, এন আরবার, ফ্লিন্ট, ল্যান্সিং, শাগিনাও, গ্র্যান্ড র‌্যাপিড ও বে-সিটির প্রায় সব শহরে রয়েছে বাংলাদেশি কমিউনিটি।
যারা মিশিগানে স্থানান্তরের কথা ভাবছেন, তাঁদের জন্য আরেকটি তথ্য খুব জরুরি। মিশিগানে বাড়ির নিলাম হয় সেপ্টেম্বর মাসে। এই সময়ে তুলনামূলক কম দামে বাড়ি কেনা যায়।