'স্যালুট টু আমেরিকা' উৎসব করছেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স

রাশিয়া, চীন ও উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্টরা তাঁদের স্বাধীনতা দিবসে রাজধানীতে বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজের আয়োজন করে থাকেন। এমনকি গণতান্ত্রিক ফ্রান্সে বাস্তিল দিবসে সামরিক কুচকাওয়াজ হয়। আমেরিকা বিশ্বের একমাত্র পরাশক্তি, সামরিক শক্তিতে সবার ওপরে। ৪ জুলাই আমেরিকার স্বাধীনতা দিবস। এদিন সে দেশের প্রেসিডেন্টই বা কেন সামরিক কুচকাওয়াজ দেখতে দেখতে স্যালুট করবেন না? মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৪ জুলাই আমেরিকার স্বাধীনতা দিবসে বিশেষ সামরিক কুচকাওয়াজের আয়োজন করছেন। এই উৎসবের নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্যালুট টু আমেরিকা’।

২০১৭ সালে ফ্রান্সে বাস্তিল দিবসে সামরিক কুচকাওয়াজ দেখে এসে ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে ৪ জুলাইয়ের উৎসব হোক আরও বড়, আরও চমকসহ সামরিক কুচকাওয়াজে পূর্ণ। বিভিন্ন মহলের প্রতিবাদের কারণে গত দুই বছরে কিছু করা হয়নি। কিন্তু এ বছর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সে ইচ্ছা পূরণ হবে।

ট্রাম্প জানান, ৪ জুলাই শুধু সামরিক প্যারেড ও ট্যাংকের প্রদর্শনী নয়, বিমানবাহিনীর সদস্যরাও কুচকাওয়াজে অংশ নেবেন। তিনি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে স্যালুট নেবেন, ভাষণ দেবেন। সামরিক বাহিনীর সব শাখার প্রধানদের তিনি এ সময় তাঁর পাশে থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন।

অনেকে বলেছেন, এটি ট্রাম্পের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা দিবস উদ্‌যাপন। অন্যান্য শহরের মতো রাজধানী ওয়াশিংটনেও এত দিন এই দিনটি উদ্‌যাপিত হয়েছে অরাজনৈতিকভাবে। কোনো প্রেসিডেন্ট সেখানে স্যালুট নিতে আসেননি, কোনো সামরিক কুচকাওয়াজ হয়নি। ওয়াশিংটন ডিসির ডেমোক্রেটিক মেয়র ট্রাম্পের পরিকল্পনার তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, এই দিবসটি আমাদের জাতীয় ঐক্যের প্রতীক। ট্রাম্পের উপস্থিতি এই উদ্‌যাপনে বিঘ্ন ঘটাবে। কংগ্রেসম্যান জেরাল্ড কনোলি বলেছেন, আমাদের জাতীয় উৎসবকে ট্রাম্প তাঁর ব্যক্তিগত উৎসবে পরিণত করতে চান।

এমনকি সামরিক বাহিনীর সদস্যরাও বিষয়টি সদয়ভাবে নেননি। মঙ্গলবার ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, সেনা কর্মকর্তারা তাঁর পরিকল্পনায় দারুণ খুশি। কর্মরত সামরিক সদস্যরা মুখে কিছু বলেননি, কিন্তু একাধিক অবসরপ্রাপ্ত সেনা অফিসার তাঁদের আপত্তির কথা জানিয়েছেন।

আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর সাবেক অধিনায়ক অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল ডেভিড বারনো বলেছেন, আমেরিকার জাতীয় উৎসবের বদলে এটি এখন রিপাবলিকান পার্টির উৎসবে পরিণত হবে।

কোড পিঙ্ক নামে পরিচিত যুদ্ধবিরোধী একটি গ্রুপও ট্রাম্পের পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছে। তারা বলেছে, ৪ জুলাইয়ের উৎসবে তারা ডায়াপার বা তোয়ালে জড়ানো ‘বেবি ট্রাম্পে’র ২০ ফুট লম্বা এক বেলুন ওয়াশিংটনের আকাশে ওড়াবে। এ জন্য তারা উদ্যান পরিদপ্তরের অনুমতি পেয়েছে। উদ্যোক্তারা আশা করছেন, ট্রাম্পের ভাষণের সময় পর্যন্ত তাঁরা বেলুনটি আকাশে উড়িয়ে রাখতে সক্ষম হবেন।