ট্রাম্পের মন্তব্যকে 'হুমকি' মনে করছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত

মাশা ইভানোভিচ। ছবি: রয়টার্স
মাশা ইভানোভিচ। ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘হেঁয়ালিপূর্ণ’এক মন্তব্যকে হুমকি বলে মনে করছেন ইউক্রেনে নিযুক্ত দেশটির সাবেক রাষ্ট্রদূত মাশা ইভানোভিচ। তিনি বলেছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে ফোনে ট্রাম্প যে মন্তব্যে করেছেন, তাতে তিনি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।

ওই ফোনালাপে ইউক্রেনে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মাশা ইভানোভিচের প্রতি ইঙ্গিত করে ট্রাম্প জেলেনস্কিকে বলেন, ‘দেখুন, তাঁকে (ইয়োনোভিচ) কিছু একটার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।’

মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিশংসন তদন্তের অংশ হিসেবে কংগ্রেস কমিটির কাছে দেওয়া সাক্ষ্যে এ কথা জানান সাবেক এই রাষ্ট্রদূত। গতকাল সোমবার রুদ্ধদ্বার ওই সাক্ষ্যর প্রথম পাণ্ডুলিপি প্রকাশ করেছে ডেমোক্র্যাট নেতৃত্বাধীন কমিটি। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে অপ্রমাণিত দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে চাপ দেওয়ার অভিযোগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন তদন্ত শুরু করেছে কংগ্রেস কমিটি। গত বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) অভিশংসন তদন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে শুরুর লক্ষ্যে প্রতিনিধি পরিষদে প্রস্তাব পাস হয়। এরপর গতকাল সোমবার সংশ্লিষ্টদের সাক্ষ্যর প্রথম পাণ্ডুলিপি প্রকাশ করেছে এ-সংক্রান্ত কমিটি।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২৫ জুলাই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমিয়ার জেলেনস্কিকে ফোন করে জো বাইডেন ও তার ছেলে হান্টার বাইডেনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করতে চাপ দেন। জো বাইডেনের ছেলে ইউক্রেনের গ্যাস কোম্পানি বুরিসমায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছিলেন। ট্রাম্পের ভাষায়, ওই গ্যাস কোম্পানিতে থাকার সময় বাইডেনের ছেলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল এবং বাইডেন ক্ষমতা প্রয়োগ করে সেই দুর্নীতির তদন্ত বন্ধ করেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনালাপে তিনি ওই তদন্ত আবারও শুরু করতে চাপ দেন এবং এই চাপ প্রয়োগের অংশ হিসেবে তিনি ইউক্রেনে মার্কিন সামরিক সহায়তাও সাময়িকভাবে বন্ধ রাখেন। ফোনালাপের একপর্যায়ে মাশা ইভানোভিচের বিষয়ে ট্রাম্প ওই মন্তব্য করেন।

ট্রাম্পের এই মন্তব্যকে ‘হেঁয়ালিপূর্ণ’ বলে দাবি করে কংগ্রেস কমিটিকে মাশা ইভানোভিচ বলেছেন, ওই মন্তব্যে তিনি খুবই হতভম্ব হয়ে পড়েন। এতে তিনি ভীষণ উদ্বেগে পড়েছেন। গত ১১ অক্টোবর দেওয়া সাক্ষ্যে ইয়োনোভিচ বলেন, ‘আমি জানি না এর অর্থ কী। আমি খুবই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। এখনো আছি।’

এই কূটনীতিক তাঁর সাক্ষ্যে বলেন, উদ্বিগ্ন হয়ে তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত গর্ডন সনল্যান্ডের পরামর্শ চান। তখন গর্ডন তাঁকে ট্রাম্পের প্রশংসা করে টুইট করার পরামর্শ দেন । তবে ওই পরামর্শমতো তিনি টুইট করেননি।

মাশা ইভানোভিচ জানান, গত এপ্রিলে তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাঁকে দ্রুত যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসার নির্দেশ দেন। ফলে মেয়াদ শেষ হওয়ার কয়েক মাস আগেই দেশে ফিরে আসেন তিনি।