নান্নু ভাই দেশের হয়ে টেস্ট খেলতে পারেননি, এটা আমাকে খুব পোড়ায়

আমিনুল ইসলামের প্রিয় লেখক রাহুল সাংকৃত্যায়ন। ছবি: অন্য আলো
আমিনুল ইসলামের প্রিয় লেখক রাহুল সাংকৃত্যায়ন। ছবি: অন্য আলো
আমিনুল ইসলাম। সবাই তাঁকে চেনেন বুলবুল নামে। ছিলেন বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম অধিনায়ক। টেস্টে বাংলাদেশের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান। দেশের ক্রিকেটের অন্যতম সেরা এই তারকা ক্রিকেটার এখন ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা আইসিসির কর্মকর্তা। তিনি বলেছেন তাঁর প্রিয় ৫ নিয়ে।

১. প্রিয় খেলোয়াড়

মোহাম্মদ আলী আমার রোমাঞ্চ

আমি বেড়ে উঠেছি ঢাকায়। একসময় ফুটবলে মেতে থাকতাম। নিয়মিত বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে (সে সময়ের ঢাকা স্টেডিয়াম) গিয়ে খেলা দেখেছি। আশির দশকে সম্রাট হোসেন এমিলি খুব প্রিয় ফুটবলার ছিলেন। আবাহনী-মোহামেডান দুই দলেই খেলেছেন। তিনি বোধ হয় দেশের একমাত্র ফুটবলার যিনি টানা ৬ বছর চ্যাম্পিয়ন দলে খেলেছিলেন! রীতিমতো পাগল ছিলাম এমিলি ভাইয়ের খেলা দেখার জন্য। দেশের ক্রিকেটে আমার সবচেয়ে প্রিয় মিনহাজুল আবেদীন, যাকে আমি বলি নান্নু ভাই। তাঁর সঙ্গে মোহামেডানে খেলেছি, খেলেছি জাতীয় দলে। দেশের ক্রিকেটের শুরুর দিকের অর্জনগুলোর সময় আমরা ছিলাম সতীর্থ। কিন্তু মুগ্ধতা কখনোই যায়নি। নান্নু ভাই দেশের হয়ে টেস্ট খেলতে পারেননি, এটা আমাকে খুব পোড়ায়। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে কী অসাধারণ খেলাটাই না খেলেছিলেন। আর বিদেশি খেলোয়াড়দের কথা বললে মোহাম্মদ আলী আমার রোমাঞ্চ। ছোটবেলায় টেলিভিশনে তাঁর লড়াইগুলো দেখে অবাক হতাম। এত ক্যারিশমাটিক কোনো ক্রীড়াব্যক্তিত্ব হতে পারে, জানতাম না।

২. প্রিয় নায়িকা

সুচিত্রা সেন ও ববিতা

কলকাতার সুচিত্রা সেন আর আমাদের ববিতা—দুজনই আমার প্রিয় নায়িকা। উত্তম–সুচিত্রার সব ছবি কতবার যে দেখেছি। ববিতার বেলায়ও ঘেটেছে একই ব্যাপার। অবশ্য ববিতা আপার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। তিনি যে আমার কত প্রিয় অভিনেত্রী, দেখা হওয়ার পর তাঁকে জানিয়েছিলাম সেটি। সুচিত্রা আর ববিতার মতো অভিনয়শিল্পী বাংলা চলচ্চিত্রে আর আসবেন কি না, কে জানে!

৩. প্রিয় বই

ক্রিকেট-সংক্রান্ত যেকোনো বই ভালো লাগে

একসময় প্রচুর বই পড়তাম। গল্প-উপন্যাস আরকি! ছোটবেলায় দস্যু বনহুর সিরিজটি খুব প্রিয় ছিল। বড় হওয়ার পর প্রিয় হয়ে ওঠেন রাহুল সাংকৃত্যায়ন। তবে ক্রিকেট-সংক্রান্ত যেকোনো বইই আমার ভালো লাগে। সুনীল গাভাস্কারের আইডলস পড়ে মুগ্ধ হয়েছি। সত্যি বলতে, এখন ক্রিকেট নিয়ে লেখা বইই পড়া হয় বেশি।

৪. প্রিয় শিল্পী

সব সময়ের প্রিয় হেমন্ত মুখোপাধ্যায়

হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গান সব সময়ই প্রিয়। সেই সঙ্গে মান্না দে। গানের ব্যাপারে আমি বেশ পুরোনোপন্থী। আমার মনে হয়, হেমন্ত-মান্না দের গানগুলোর কোনো বিকল্প নেই। রবীন্দ্রসংগীত বেশ ভালো লাগে। আর তপন চৌধুরী, সামিনা চৌধুরী—এঁরা আমাদের তারুণ্যের শিল্পী। আমাদের নস্টালজিয়া। দেশের ব্যান্ড সংগীত একসময় খুব শুনতাম। প্রিয় ছিল এলআরবি, মাইলস—দুই ব্যান্ডই। ও হ্যাঁ, কান্ট্রি মিউজিকেরও দারুণ ভক্ত আমি। 

৫. প্রিয় চলচ্চিত্র

সুযোগ পেলেই দেখি ‘হীরক রাজার দেশে’

সত্যজিৎ রায়ের অমর সৃষ্টি হীরক রাজার দেশে ছবিটি এখনো দেখি আমি। যতবার দেখি, মনে হয়, বারবার দেখলেও এর আবেদন কখনো পুরোনো হবে না। গোটা ছবিতে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, রবি ঘোষ, উৎপল দত্তদের সে কী অভিনয়! এ চলচ্চিত্র ছাড়াও সত্যজিতের অন্য ছবিগুলোও ভালো লাগে। আমাদের দেশের ছবিও প্রচুর দেখতাম একসময়। রীতিমতো হলে গিয়ে। গোলাপী এখন ট্রেনে আমার প্রিয় ছবিগুলোর একটি। আরেকটি প্রিয় ছবি সূর্য দীঘল বাড়ি। ইংরেজি ছবি আমি একটু কমই দেখি। যা দেখেছি তার মধ্যে ভালো লেগেছে শিকোগা আর আ বিউটিফুল মাইন্ড।

অনুলিখন: নাইর ইকবাল