দুই-রাষ্ট্র থেকে এক-রাষ্ট্রনীতি?

ইসরায়েলের প্রধ​ানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে মার্কিন প্রেসি​ে​ডন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
ইসরায়েলের প্রধ​ানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে মার্কিন প্রেসি​ে​ডন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির প্রশ্নে এক নতুন প্রস্তাব রেখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন, এই দুই রাষ্ট্র শান্তি ও নিরাপদে পাশাপাশি অবস্থান করবে, সাম্প্রতিক সময়ের প্রতিটি মার্কিন প্রশাসন এই দুই-রাষ্ট্রনীতি সমর্থন করে এসেছে। কিন্তু গত বুধবার হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে পাশে রেখে এক লাইনের এক বক্তব্যে তা পাল্টে দিলেন ট্রাম্প। তিনি বললেন, ‘আমি দুই-রাষ্ট্র ও এক-রাষ্ট্র, উভয়ই (প্রস্তাব) বিবেচনায় রাখছি। ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন যে প্রস্তাবে খুশি, আমি তাকেই সমর্থন করব।’
এই দুই-রাষ্ট্রনীতি এত দিন পর্যন্ত শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, জাতিসংঘ, রাশিয়া ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন সমর্থন করে এসেছে। এই চার পক্ষকে নিয়ে গঠিত ‘কোয়ার্ট্রেট’, যা ২০০৩ সাল থেকে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রশ্নে আলোচনায় নেতৃত্ব দিচ্ছে, তাদের অনুসৃত নীতির ভিত্তিমূলেও রয়েছে দুই-রাষ্ট্রনীতি। সে সময় থেকে এখন পর্যন্ত প্রতিটি ইসরায়েলি সরকার এই কোয়ার্ট্রেটের প্রস্তাবিত ‘রোড ম্যাপ’ সমর্থন করে এসেছে। এমনকি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ২০০৯ সালে এক ভাষণে শর্ত সাপেক্ষে সেই নীতির প্রতি নিজের সমর্থন ব্যক্ত করেছিলেন। আগপাছ বিবেচনা না করে, নিকট মিত্রদের সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এককথায় মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রশ্নে আন্তর্জাতিক কূটনীতির সেই মূল ভিত্তি এককভাবে বদলানোর পক্ষে মত দিলেন।
ট্রাম্পের এই বক্তব্যের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সম্পূর্ণ ভিন্ন বক্তব্য দেন জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী প্রতিনিধি নিকি হেইলি। জাতিসংঘ সদর দপ্তরে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র দুই-রাষ্ট্রনীতির প্রতি সম্পূর্ণ অঙ্গীকারবদ্ধ, যারা ভাবে আমরা এই নীতি সমর্থন করি না, তারা ভুল ভাবে।’
এই স্ববিরোধী অবস্থানের কারণে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আসলেই কি দুই-রাষ্ট্রনীতি ত্যাগ করতে যাচ্ছে? যে এক-রাষ্ট্রনীতি প্রস্তাব করা হচ্ছে, তাতে ফিলিস্তিনিদের অবস্থান কী হবে? তারা কি এক ইহুদি রাষ্ট্রের নাগরিক হবে, না তাদের জন্য ভিন্ন ব্যবস্থা হবে? হোয়াইট হাউসের সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু এ প্রশ্নের সরাসরি কোনো উত্তর দেননি। তবে তিনি ইসরায়েলকে একটি ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে ফিলিস্তিনের প্রশাসনকে আহ্বান জানান।
এক-রাষ্ট্রনীতি নিয়ে সমস্যা হলো, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনকে নিয়ে যদি শুধু একটি রাষ্ট্র গঠিত হয়, তাহলে ইহুদি ও আরব উভয় জনগোষ্ঠীকে সমানাধিকারের ভিত্তিতে নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। কিন্তু ইসরায়েল যদি নিজের জন্য একটি ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি চায় এবং ফিলিস্তিনি জনগণ তার অন্তর্ভুক্ত হয়, তাহলে সেখানে আরবদের মর্যাদা হবে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে। এর ফলে এক নতুন জাতিভেদভিত্তিক অ্যাপার্থেইড শাসনব্যবস্থা স্থাপিত হবে। বিশ্বের মানুষ দক্ষিণ আফ্রিকার সেই নীতি প্রত্যাখ্যান করেছিল, এটিও প্রত্যাখ্যান করবে।
এক-রাষ্ট্রনীতি ও ইহুদি রাষ্ট্র, এই দুই ব্যবস্থা যে একসঙ্গে চলতে পারে না, সে কথা সোমবার এক সম্মেলনে স্পষ্ট করে বুঝিয়ে বলেন ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট রুভেন রিভলিন। এই সম্মেলনে তিনি খোলামেলাভাবেই বলেন, শুধু একটি রাষ্ট্র গঠিত হলে ফিলিস্তিনিদের ‘পূর্ণ নাগরিকত্ব’ দিতে হবে। ‘কোনো অঞ্চলের ওপর সার্বভৌমত্ব প্রয়োগের অর্থই হলো সে অঞ্চলে বসবাসরত প্রত্যেককে সমান নাগরিকত্ব প্রদান। একই দেশে ইহুদিদের জন্য এক রকম, বাকি সবার জন্য অন্য রকম আইনি ব্যবস্থা বজায় রাখা সম্ভব নয়।’
বলাই বাহুল্য, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এক-রাষ্ট্রনীতির তীব্র প্রতিবাদ করেছে। ফিলিস্তিন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের নির্বাহী পরিষদের সদস্য হান্নান আশরাভি মন্তব্য করেছেন, এটি কোনো বাস্তবসম্মত প্রস্তাব নয়। এর ফলে এই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে না। একই মন্তব্য করেছেন এই সরকারের অন্যতম মুখপাত্র সায়েব এরেকাত।

>নেতানিয়াহু বা ট্রাম্প যে এত সহজে দীর্ঘদিন থেকে অনুসৃত দুই-রাষ্ট্রনীতি পরিত্যাগের কথা বলতে পারলেন, এর একটি বড় কারণ, ফিলিস্তিনিরা এই মুহূর্তে আগের যেকোনো সময় থেকে অনেক বেশি দুর্বল, অনেক বেশি বিভক্ত

উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে ইসরায়েল, গাজাসহ অধিকৃত ফিলিস্তিনে বসবাসরত ইহুদি ও আরবদের সংখ্যা প্রায় সমান সমান। উদ্বাস্তু হিসেবে যে ৩০ লাখ ফিলিস্তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে, তাদের হিসাবে ধরলে এক অভিন্ন ইসরায়েলে আরবদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেশি হবে। সে কথা মাথায় রেখে বিদেশে বসবাসরত উদ্বাস্তু ফিলিস্তিনিদের অনেকে ‘পোকায় খাওয়া’ ও অধিকারহীন নামমাত্র স্বাধীন ফিলিস্তিনের বদলে সম-অধিকারের ভিত্তিতে এক গণতান্ত্রিক ইসরায়েলের পক্ষপাতী। স্বভাবতই ইসরায়েল এমন কোনো পরিস্থিতি চায় না, যেখানে আরবরা তাদের সংখ্যাধিক্যের জোরে ইসরায়েলে সরকার গঠনের সুযোগ পাক। আরবদের ‘সেকেন্ড ক্লাস সিটিজেন’ বানিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা-ধাঁচের অ্যাপার্থাইড ব্যবস্থা চালু হোক, সেটাও তারা চায় না। এটাই যখন বাস্তবতা, তখন ওয়াশিংটনে নেতানিয়াহুকে পাশে রেখে এক-রাষ্ট্রনীতির পক্ষে তাঁর সমর্থন কেন জানালেন ট্রাম্প?
আমেরিকান ও ইসরায়েলি বিশেষজ্ঞদের অনেকে মনে করেন, ট্রাম্প এই কিছুটা দো-আঁশলা মন্তব্যটি করেছিলেন শুধু তাঁর ব্যক্তিগত বন্ধু নেতানিয়াহুকে রাজনৈতিকভাবে সাহায্য করার লক্ষ্যে। ইসরায়েলে এই মুহূর্তে যে অতি-দক্ষিণপন্থী কোয়ালিশন সরকার ক্ষমতায়, তার অধিকাংশ শরিক দল পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি সম্প্রসারণের পক্ষে ও যেকোনো মূল্যে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিরোধী। নেতানিয়াহু এমনিতেই দুর্নীতির মামলায় ফেঁসে আছেন। এখন তিনি শরিকদের কোনোভাবেই চটাতে চান না। কারণ, তাদের এক বা দুই দল কোয়ালিশন সরকার থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিলে নেতানিয়াহুর আসন টলে উঠতে পারে। তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন জুইশ হোম পার্টির প্রধান নাফতালি বেনেট। তিনি অবিলম্বে অধিকৃত ফিলিস্তিনের অবশিষ্ট অঞ্চল ইসরায়েলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনা ও সেখানে বসবাসরত ফিলিস্তিনি আরবদের বহিষ্কারের পক্ষপাতী। নেতানিয়াহু ওয়াশিংটনে রওনা হওয়ার আগে বেনেট তাঁকে সতর্ক করে দেন, যাতে কোনোভাবেই স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের কথা তাঁদের আলোচনায় না ওঠে। তিনি বলেন, ‘তাহলে মাটি কেঁপে উঠবে।’ তাঁর সে হুমকি উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সাময়িকী ফরেন অ্যাফেয়ার্স-এ ড্যানিয়েল শাপিরো মন্তব্য করেছেন, ট্রাম্পের অভয়বাণীর পর নেতানিয়াহু এখন নিশ্চিন্তে ইসরায়েলে ফিরে যেতে পারবেন।
ওয়াশিংটনে ক্ষমতার হাতবদল ছাড়াও অন্য যে কারণে নেতানিয়াহু এখন অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী, তা হলো মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক মানচিত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন। সৌদি আরব ও উপসাগরের সুন্নি আরব দেশগুলো ইরানের সামরিক ও রাজনৈতিক উত্থানে চিন্তিত। সিরিয়ায় বাশার আল আসাদের সরকার ক্ষমতায় টিকে যাওয়ায় এই সুন্নি সরকারগুলোর বড় ধরনের বিপত্তি ঘটেছে। তারা মনে করে, এর ফলে সবচেয়ে লাভবান হয়েছে ইরান। ক্রমেই শক্তিশালী হয়ে ওঠা ইরানকে ঠেকাতে তারা এখন গোপনে ইসরায়েলের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। গত সপ্তাহে নিউইয়র্ক টাইমস এক দীর্ঘ প্রতিবেদনে লেখে, সৌদি আরব, জর্ডান ও উপসাগরীয় দেশগুলোর সমর্থন নিয়েই ওয়াশিংটন ও ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রশ্নে এক ভিন্ন অঙ্ক করতে চাইছে। এই অঙ্কের লক্ষ্য হবে আঞ্চলিক আরব দেশগুলোকে যুক্ত করে ইসরায়েলের জন্য লাভজনক একটি সমাধান অর্জন। নেতানিয়াহু ভেঙে বলেননি, কিন্তু ইঙ্গিত করেছেন, তিনি চান পূর্ণ স্বাধীনতার বদলে স্বায়ত্তশাসনের ভিত্তিতে একটি ফিলিস্তিন প্রদেশ গঠিত হোক, যা পুরোপুরি ইসরায়েলের সামরিক নিয়ন্ত্রণে থাকবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে নেতানিয়াহু আঞ্চলিক দেশগুলোর সমর্থনে সমাধান অর্জনের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন। অনেকের ধারণা, বস্তুত এই স্বায়ত্তশাসিত ফিলিস্তিন মাথায় রেখেই সে কথা বলা। চালাকির হাসি হেসে তিনি বলেন, এক-রাষ্ট্র বা দুই-রাষ্ট্র—এ–জাতীয় কোনো লেবেলে তিনি বিশ্বাস করেন না। তাঁর জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো লেবেলের পেছনে মোদ্দা কী প্রস্তাব তোলা হলো।
বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প নিজেও একটি শান্তিচুক্তি সম্পাদনের ব্যাপারে তাঁর আস্থা ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ইসরায়েল ও আরব দেশগুলোর মধ্যে একটি উৎকৃষ্ট ও অনেক বেশি অর্থপূর্ণ চুক্তি অর্জন করতে যাচ্ছি।’ ট্রাম্প এই চুক্তি অর্জনের কাজে নেতৃত্ব দিতে নির্বাচন করেছেন তাঁর ইহুদি জামাতা জ্যারেড কুশনারকে, যিনি নেতানিয়াহুকে একজন পারিবারিক বন্ধু হিসেবেই চেনেন। কয়েক বছর আগে নেতানিয়াহু ট্রাম্পের বাসভবনে বেড়াতে এলে তিনি নিজের শয্যা ওই বিদেশি অতিথির জন্য ছেড়ে দিয়েছিলেন। শান্তি প্রতিষ্ঠার কাজে কুশনারকে সাহায্য করবেন ইসরায়েলের আরেক সুহৃদ, ট্রাম্পের মনোনীত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডেভিড ফ্রিডম্যান। অধিকাংশ দক্ষিণপন্থী ইহুদির মতো তিনিও পশ্চিম তীর অবিলম্বে ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে আনার পক্ষপাতী। সেই সম্ভাবনা মাথায় রেখে তিনি অধিকৃত পশ্চিম তীরে একটি অ্যাপার্টমেন্ট কিনে রেখেছেন।
নিউইয়র্ক টাইমস লিখেছে, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করে, এমন একটি সমাধান সন্ধানের লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই আঞ্চলিক আরব দেশগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রথম পদক্ষেপে হিসেবে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র একাধিক আরব দেশের সঙ্গে সামরিক ও গোয়েন্দা সহযোগিতা নিয়ে আলাপ-আলোচনা করেছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল লিখেছে, উচ্চপদস্থ মার্কিন কর্মকর্তারা আরব মিত্রদের সঙ্গে গোয়েন্দা-তথ্য ভাগাভাগি নিয়েও আলোচনা করেছেন।
নেতানিয়াহু বা ট্রাম্প যে এত সহজে দীর্ঘদিন থেকে অনুসৃত দুই-রাষ্ট্রনীতি পরিত্যাগের কথা বলতে পারলেন, এর একটি বড় কারণ, ফিলিস্তিনিরা এই মুহূর্তে আগের যেকোনো সময় থেকে অনেক বেশি দুর্বল, অনেক বেশি বিভক্ত। তাদের বিভক্তির সুযোগ নিয়ে ট্রাম্পের সমর্থনে নেতানিয়াহু হয়তো ভেবে থাকবেন স্বায়ত্তশাসিত ফিলিস্তিনি প্রদেশ গঠন, অথবা জর্ডানের সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের একীভূত করার পুরোনো প্রস্তাবটি চালানো সহজ হবে।
মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতির ঝানু পর্যবেক্ষকদের ধারণা, যত সহজে ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি এনে দেবেন বলে ভাবছেন, ব্যাপারটা তত সহজ নয়। ভাষ্যকার ফরিদ জাকারিয়া বিস্ময়ের সঙ্গে বলেছেন, ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের সমস্যা নিয়ে ট্রাম্পের অজ্ঞতা রীতিমতো অবিশ্বাস্য। ‘তিনি কি ভাবছেন, এক-রাষ্ট্রনীতি প্রস্তাব করা মাত্রই ফিলিস্তিনিরা বলে উঠবে, ঠিক, ঠিক, আমরা নিজেদের জন্য স্বাধীন কোনো রাষ্ট্র চাই না?’ এই প্রস্তাবের অন্তঃসারশূন্যতার বিষয়টি আরেকভাবে ধরিয়ে দিয়েছেন নিউইয়র্ক টাইমস-এর কলামিস্ট টমাস ফ্রিডম্যান: প্রস্তাবটি কেবল অবাস্তব নয়, অনৈতিকও বটে। তাঁর কথায়, এই দিন পর্যন্ত ইসরায়েলের ভেতরে ফিলিস্তিন প্রশ্নে বিতর্ক ছিল ডান বনাম বাম, এই দুই গ্রুপের মধ্যে। কিন্তু এক ইহুদি রাষ্ট্রের অধীনে যদি ফিলিস্তিনিদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হতে বাধ্য করা হয়, তাহলে তর্কটা হবে ঠিক ও বেঠিকের মধ্যে।
ইহুদিরা হাজার বছর ধরে নিজেদের স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য লড়াই করেছে। এ কথায় কোনো ভুল নেই, ফিলিস্তিনিরাও সে জন্য যত দিন প্রয়োজন তাদের লড়াই চালিয়ে যাবে।
হাসান ফেরদৌস: যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি।