মির্জাপুরে নদভাঙন: বালু তোলা বন্ধে উদ্যোগ নিন

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় বংশাই ও এর সঙ্গে যুক্ত ঝিনাই নদের দুই পাশের ভাঙনে যেভাবে রাস্তা, ফসলি জমি বিলীন হচ্ছে তা উদ্বেগজনক। প্রথম আলোয় গত সোমবার প্রকাশিত খবর অনুযায়ী গত দুই মাসে এই দুই নদের ভাঙনে উপজেলার গাড়াইল, গোড়াইল, চাকলেশ্বর, থলপাড়া, হিলরা, ফতেপুর, সুতানড়ি, বানকাটা ও পারদীঘি এলাকার প্রায় ৩০ একর ফসলি জমি বিলীন হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৩০০ ঘর সরিয়ে নিতে হয়েছে। অব্যাহত ভাঙনে গোড়াইল গ্রামের একটি রাস্তার একাংশ ধসে পড়েছে।

দুঃখের বিষয় হচ্ছে নদের এই ভাঙন শুধু প্রাকৃতিক কারণে হচ্ছে না। এর জন্য দায়ী কিছু লোভী মানুষের কর্মকাণ্ড। পাঁচ-ছয় বছর ধরে নদ দুটি থেকে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু তুলছেন স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। এ ক্ষেত্রে তাঁরা কোনো নিয়মনীতি মানছেন না। নদের গভীর তলদেশ পর্যন্ত খনন করে বালু তোলায় দুপাড়ে ভাঙন দেখা দেয়। এলাকাবাসী অনেক চেষ্টা করেও এই ব্যক্তিদের বালু তোলা থেকে নিবৃত্ত করতে পারেননি। উপজেলা প্রশাসন বিভিন্ন সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বালু তোলার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের সাজা ও জরিমানা করেছে। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে এর কি কোনো প্রতিকার নেই? প্রভাবশালী বলে কেউ কেউ যা খুশি তাই করবে আর সাধারণ মানুষ তার খেসারত দিয়েই যাবে? জমি ও বাড়িঘর নদে বিলীন হতেই থাকবে? মির্জাপুর উপজেলা প্রশাসনকেই এর দায়িত্ব নিতে হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নদভাঙনের শিকার ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনকে কিছু সহায়তা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এটা কোনো সমাধান হতে পারে না।

ভাঙনের কারণ দূর না করে এ ধরনের সহায়তা দেওয়া অর্থহীন। ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে এ ব্যাপারে উদ্যোগী হতে হবে। অবৈধভাবে বালু তোলা পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে।