বাংলাদেশের নবযাত্রা

একই সঙ্গে যেই তৈরি পোশাক খাত আমাদের রপ্তানি বাণিজ্যের প্রসার ঘটাচ্ছে, সেই খাতের শ্রমিকদের নতুন মজুরি বোর্ড গঠনের ঘোষণাও আশাব্যঞ্জক। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এমডিজি) বাংলাদেশ ভালো করার পর টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের দুরূহ পথে মানবসম্পদের উন্নয়ন ও সর্বোচ্চ ব্যবহারের ওপরই জোর দিতে হবে।  উন্নয়নের বর্তমান ধারাকে আরও গতিশীল করা যেত যদি আমরা সব ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনাগত দক্ষতা ও সততা নিশ্চিত করতে পারতাম।

কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ছয়-সাতের ঘরে ঘুরপাক খাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারি খাতের দুর্নীতি কমানো গেলে এই প্রবৃদ্ধি দুই অঙ্কে উত্তরণও কঠিন হতো না। বিদায় বছরটিতে ব্যাংকিং খাতে প্রচণ্ড ঝোড়ো হাওয়া প্রবাহিত হওয়ার পরও শেষ মুহূর্তে ব্যাংকগুলোতে মুনাফার অঙ্ক বৃদ্ধির খবর কিছুটা হলেও আশান্বিত করে। 

অর্থনীতির এসব সাফল্যের ধারা কত দ্রুত আমরা এগিয়ে নিতে পারব, তা অনেকটা নির্ভর করবে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর। চলতি বছরেই সাতটি সিটি করপোরেশন ছাড়াও জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা (জাতীয় নির্বাচন আগামী বছরের জানুয়ারিতেও হতে পারে)। ইতিমধ্যে নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। শুধু রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নয়, অর্থনীতি তথা উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতেও একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন জরুরি।

২০১৪ সালে কার বেকুবির (অর্থমন্ত্রীর মন্তব্য দ্রষ্টব্য) জন্য একটি একতরফা ও প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন হয়েছে, সেই বিতর্কে অযথা সময় নষ্ট না করে রাজনৈতিক নেতৃত্বের উচিত হবে আগামী নির্বাচনটি কীভাবে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করা যায়, সেদিকে মনোযোগী হওয়া। অতীতের ক্লেদ ও কালিমা পেছনে ফেলে ২০১৮ সাল আমাদের নির্বাচনী রাজনীতিতে সুস্থ ধারা ফিরিয়ে আনুক, সেটাই সবার প্রত্যাশা।