জামালপুরে ব্রহ্মপুত্র নদ

সরকারের কোনো অনুমতি না নিয়ে জামালপুর সদর উপজেলার চরযথার্থপুর এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে যে কায়দায় বালু উত্তোলন করা হচ্ছে, তাতে মনে হয় না এখানে প্রশাসন বলে কিছু আছে।
সোমবার প্রথম আলোয় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ইউনাইটেড জামালপুর পাওয়ার লিমিটেড নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এক মাস ধরে ব্রহ্মপুত্র নদের একই স্থানে নয়টি খননযন্ত্র বসিয়ে বালু তুলে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি এই গ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে ১১৫ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের জমি ভরাটের জন্য কেন্দ্রের পূর্ব পাশে নদ থেকে বালু তোলা হচ্ছে। এভাবে বালু তোলার কারণে নদের আশপাশের চাষের জমি হুমকির মুখে পড়েছে। স্থানীয় কৃষকদের মতে, বর্ষার সময় বালু তোলার ক্ষতি বোঝা যাবে। ওই সময় একসঙ্গে অনেক জমি ভাঙনের কবলে পড়ার এবং নদীগর্ভে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
নদীতে বালুমহালের ইজারা নীতিমালা অনুযায়ী, খননযন্ত্র দিয়ে নদীগর্ভ থেকে বালু তোলা নিষিদ্ধ। অথচ সেই নিষিদ্ধ কাজটিই প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে করে যাচ্ছে ইউনাইটেড জামালপুর পাওয়ার লিমিটেড। কিন্তু তা বন্ধে প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ নেই। বালু তোলার ফলে স্থানীয় কৃষকেরা যে ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছেন, তা নিয়ে প্রশাসনের মাথাব্যথা না থাকাটা খুবই দুঃখজনক। বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হলে গ্রামের অনেক উন্নয়ন ঘটবে এটা ঠিক, কিন্তু যে উন্নয়ন করতে গিয়ে ফসলি জমি নদীগর্ভে চলে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, সেই ‘উন্নয়ন’ দিয়ে জনগণ কী করবে!
জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বলেছেন, কিছু আইনি জটিলতার কারণে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে অনেক সময় ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেও বালু তোলা বন্ধ করা যাচ্ছে না। আইনি কী জটিলতা রয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে সরকারকে অনুরোধ করছি। স্থানীয় প্রশাসনকেও এ ব্যাপারে তৎপর হতে হবে। তা না হলে নদ-নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করা যাবে না।