শীতলক্ষ্যায় নৌযান নোঙর

প্রথম আলোয় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, নগরের হাজীগঞ্জ এম সার্কাস এলাকায় বাংলাঘাট, সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল এবং বন্দর উপজেলার নবীগঞ্জ ঘাটসহ বেশ কয়েকটি স্থানে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে লাইটার কার্গো জাহাজ, ড্রেজার পরিদপ্তরের
পন্টুন, ফেরিসহ বিভিন্ন নৌযান নোঙর করে রাখা আছে। শুধু তীরে নয়, মাঝনদীতেও বছরের পর বছর ধরে এলোমেলোভাবে নৌযান নোঙর করে রাখা হচ্ছে। এভাবে নোঙর করা শতাধিক নৌযানের কারণে নদীপথ সরু হয়ে পড়ায় কার্গো ও জ্বালানি তেলের ট্যাংকারগুলোর চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা যেমন আছে, তেমনি দীর্ঘদিন ধরে নৌযানগুলো পানিতে থাকায় নদীর তলদেশে পলি জমে নাব্যতা কমে যাওয়ার ঝুঁকিও রয়েছে।

শীতলক্ষ্যা নদীটি দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি নৌপথ। প্রাচ্যের ডান্ডি নামে পরিচিত নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রাণই হলো শীতলক্ষ্যা নদী। শহরটি একসময় বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পেয়েছিল শীতলক্ষ্যার জন্যই। এই নদীকে কেন্দ্র করে এখানে গড়ে উঠেছে অনেক শিল্প ও কলকারখানা। দখল-দূষণের কবলে পড়ে এই নদীর অস্তিত্ব এমনিতেই হুমকির সম্মুখীন। তার ওপর যোগ হয়েছে বছরের পর বছর ধরে বিভিন্ন নৌযান নোঙর করে রাখার এই সংস্কৃতি।

নৌ চ্যানেল পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ)। কিন্তু তারা কী করছে? কেন তারা এভাবে নৌযানগুলোকে নদীতে নোঙর করতে দিচ্ছে? এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএর গাফিলতি করার আর কোনো সুযোগ নেই। যারা এভাবে নৌযান নোঙর করে নদীর ক্ষতি করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। নদীতে যাতে অযথা কোনো নৌযান দীর্ঘদিন ধরে নোঙর করা না থাকে, তা নজরদারি করতে হবে। নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে নদীর তলদেশ খনন করাসহ অন্য যেসব পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, তা নিতে হবে।