একটা কাগজ তো পেতে হবে: হেলালুদ্দীন আহমেদ

>

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) উপনির্বাচন স্থগিত হয়ে আছে। আদালতের আদেশে এই উপনির্বাচন স্থগিত হওয়ার পর রাষ্ট্রপক্ষ এবং বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ভূমিকা নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মিজানুর রহমান খান

প্রথম আলো: ১২৫গ অনুচ্ছেদ বিষয়ে ইসির কী ধারণা?
হেলালুদ্দীন আহমেদ: তফসিল ঘোষণার পরে আমাদের সঙ্গে পরামর্শ হওয়ার কথা, কিন্তু ও রকম কিছু নির্বাচন কমিশনের হয়নি।

প্রথম আলো: আপনাদের প্যানেল আইনজীবী-
হেলালুদ্দীন: আমরা আদালতের আদেশের কপি পেলে আইনজীবীদের নিয়ে বসব। তখন বুঝতে পারব কোন কোন ত্রুটি ধরে হাইকোর্ট স্থগিত করেছেন। তখন মন্তব্য করা যাবে।

প্রথম আলো: আপনারা তো নির্বাচন স্থগিত করেছেন?
হেলালুদ্দীন: হাঁ, সেটা তো বিচারাধীন বিষয়। আমরা রায় পাওয়ার, না সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্থগিত করে দিয়েছি।

প্রথম আলো: মিডিয়া রিপোর্টে স্থগিত করতে পারলে রিট করার পর যে এক দিন শুনানি হলো, তখন আপনারা লিখিত বিবৃতি দাখিলে ছুটলেন না কেন?
হেলালুদ্দীন: হাইকোর্ট যদি না ডাকেন, তাহলে আমরা তো সুয়োমোটো যেতে পারি না।

প্রথম আলো: সুয়োমোটো আদেশ পালন করলেন কীভাবে?
হেলালুদ্দীন: নিয়মটা হলো আদালতের বা হাইকোর্টের কোনো আদেশ যেকোনো মাধ্যমে পাওয়া গেলে তাহলে তা প্রতিপালন করতে হয়। তা ছাড়া আদেশের দিন বাদীপক্ষের আইনজীবীর কাছ থেকে প্রত্যয়নপত্র পেয়েছিলাম। এরপর বৃহস্পতিবার আমাদের আইনজীবীর কাছ থেকেও প্রত্যয়নপত্র পেলাম।

প্রথম আলো: হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করতে চেম্বার জজে কেন গেলেন না?
হেলালুদ্দীন: কোন কোন পয়েন্টে স্থগিত হয়েছে, সেটা জেনে তো ইসি সিদ্ধান্ত নেবে কী করা যায়। এর জন্য সার্টিফায়েড কপি লাগে।

প্রথম আলো: কিন্তু আদেশের আগেই ১২৫গ অনুযায়ী যুক্তিসংগত নোটিশ ও যুক্তিসংগত শুনানি হলো কি না, তা নিয়ে কি ইসি সভায় বসেছে?
হেলালুদ্দীন: একটা সিদ্ধান্ত হয়েছে, যদি আদেশের কপি পাওয়া যায়, তাহলে তাঁরা বসবেন, কারণগুলো না দেখে তো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না।

প্রথম আলো: আমরা জানতে চাই আদেশ-পূর্ব অবস্থা, আপনি বলছেন আদেশ দেওয়ার পরের অবস্থা। আর আইনজীবী তৌহিদুল যা বলেছেন, তা আপনারা তাঁকে বলতে বলেছিলেন?
হেলালুদ্দীন: না। তাঁকে তো হঠাৎ ডেকেছেন। আমাদের সঙ্গে তিনি যে পরামর্শ করবেন, সেই সুযোগটা কমিশন পায়নি। কারণ, শুনানির একপর্যায়ে তাঁকে ডাকা হয়েছে। আমাদের প্যানেল আইনজীবী থাকেন সাত-আটজন। প্রতিটি মামলার জন্য আলাদাভাবে আমরা অথরিটি (কর্তৃত্ব) দিই। কিন্তু আমরা তো এই রকম (সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিট মামলা) অথরিটি এখানে কাউকে দিইনি। কিন্তু যেটা আমরা শুনছি আরকি, প্যানেল লইয়ার কে, একজনকে ডাকেন।

প্রথম আলো: তা হলো যুক্তিসংগত নোটিশ ও যুক্তিসংগত শুনানির যে শর্ত ১২৫ গ-তে আছে, তার কী হলো?
হেলালুদ্দীন: দেখুন নোটিশ পায় কখন? একটা কোর্ট যখন হিয়ারিং দেন, সেখানে রুলনিশি জারির আগ পর্যন্ত, মানে রুলনিশি জারিটাই হলো নোটিশ। রিটে যেটা রুলনিশি, সেটাই হলো নোটিশ।

প্রথম আলো: তাহলে আপনি বলছেন যে রুলটাই হলো ‘যুক্তিসংগত নোটিশ’? আর রুল জারি করলেই ‘যুক্তিসংগত নোটিশ’ জারি করা হয়?
হেলালুদ্দীন: জি, জি, জি।

প্রথম আলো: তাহলে তো ১২৫ গ-এর শর্ত পূরণ হয়ে গেছে? কী বলেন?
হেলালুদ্দীন: জি বুঝতে পারলাম না।

প্রথম আলো: তাহলে নোটিশ পেয়ে কী করলেন?
হেলালুদ্দীন: বিষয়টি হলো স্থগিতাদেশ দিয়েছে, তারপর রুলনিশি জারি করেছে।

প্রথম আলো: তো এখন কিসের জন্য অপেক্ষা করছেন?
হেলালুদ্দীন: আদালতের আদেশের জন্য। একটা কাগজ তো পেতে হবে। কী কারণে আদেশ হলো, তখন তা বিশ্লেষণ করা যাবে।