২০৩০ সালের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রাণিসম্পদ খাতের ভূমিকা

গত ২২ জানুয়ারি ২০১৮, প্রথম আলোর আয়োজনে ‘২০৩০ সালের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রাণিসম্পদ খাতের ভূমিকা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আলোচকদের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত আকারে এই ক্রোড়পত্রে প্রকাশিত হলো।

আলোচনা

আব্দুল কাইয়ুম: শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত সব বয়সী মানুষের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে প্রাণিজ খাদ্যের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নের যে অঙ্গীকার আমরা করেছি, সেখানেও প্রাণিসম্পদের বিরাট অবদান রাখার সুযোগ রয়েছে।

এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য আমরা প্রাণিসম্পদের ক্ষেত্রে কতটুকু এগিয়েছি এবং সামনে কত দূর যেতে হবে, সে বিষয়ে আলোচনার লক্ষ্যেই আমাদের আজকের গোলটেবিল বৈঠক। এ বিষয়ে এখন আলোচনা করবেন নারায়ণ চন্দ্র চন্দ।

নারায়ণ চন্দ্র চন্দ

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভিশন হচ্ছে ‘সকলের জন্য নিরাপদ, পর্যাপ্ত ও মানসম্মত প্রাণিজ আমিষ নিশ্চিতকরণ’। এই ভিশন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নিরাপদ প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণে গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি, দুগ্ধ উৎপাদন বৃদ্ধিসহ সংরক্ষণ, রোগনিয়ন্ত্রণ ও জাত উন্নয়নে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

বর্তমানে দেশে দুধ, মাংস ও ডিমের উৎপাদন নিকট অতীতের চেয়ে কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রাণিসম্পদ খাতে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির ফলে ২০১৭ সালের পবিত্র ঈদুল আজহায় মোট কোরবানিযোগ্য গবাদিপশুর সংখ্যা ছিল ১১৫ দশমিক ৫৭ লাখ।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐকান্তিক ইচ্ছা ও উদ্যোগে ১৯৭৩ সালে গবাদিপশুতে যুগান্তকারী কৃত্রিম প্রজনন প্রযুক্তি প্রবর্তন ও ব্যাপকভাবে সম্প্রসারণের মাধ্যমে গবাদিপশুর জাত উন্নয়ন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির বহুমাত্রিক কার্যক্রম গ্রহণ করার ফলে দেশি গরুর উন্নয়ন ঘটেছে।

ভিশন ২০২১ অনুযায়ী জনপ্রতি দুধ ও মাংসের চাহিদা যথাক্রমে দিনে ১৫০ মিলিলিটার ও ১১০ গ্রাম এবং জনপ্রতি ডিমের চাহিদা বছরে ১০৪টি পূরণের লক্ষ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

২০২১ সালের মধ্যে ঈপ্সিত উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য দুধ, মাংস ও ডিম উৎপাদন যথাক্রমে ৯৪ দশমিক ৫০ লাখ মেট্রিক টন, ৬৯ দশমিক ৬০ লাখ মেট্রিক টন এবং ১৭৮১ দশমিক ৫০ কোটিতে উন্নীত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

নীতীশ দেবনাথ

আমরা এখন চাইলেই দেশের প্রাণিসম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পারি, সেই প্রযুক্তি আমাদের আছে। কিন্তু এই খাত সম্প্রসারণের সঙ্গে যে ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জ আমাদের সামনে আসবে, সেগুলো দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলা করার মতো প্রস্তুতি নিয়েই প্রাণিসম্পদ খাতকে সম্প্রসারণ করতে হবে।

প্রাণিজ খাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ ও বণ্টন–প্রক্রিয়া অন্যান্য খাতের চেয়ে ভিন্ন ও জটিল। এ প্রক্রিয়া সমন্বিতভাবে গড়ে তুলতে না পারলে জনস্বাস্থে্যর ঝুঁকি অনেক বেড়ে যাবে। নতুন রোগ উদ্ভবের সৃষ্টি হবে। এর ফলে শিল্পটি হুমকির মুখে পড়বে। কোনো ফাঁকফোকর থাকলে মারাত্মক রোগ ও ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। তাই এ খাতের উন্নয়নের ক্ষেত্রে এ খাতের সঙ্গে জড়িত সব পক্ষকে একত্রে সমন্বিত হয়ে কাজ করতে হবে।

প্রাণিসম্পদ খাতকে আরও উন্নত করে তোলার জন্য সরকারের যথেষ্ট আগ্রহ ও প্রচেষ্টা রয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক আয়োজিত ‘প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ’ এর প্রমাণ। সরকারের এই প্রচেষ্টা সবাই মিলে সম্মিলিত কর্মপরিকল্পনার  মাধ্যমে এগিয়ে নিতে হবে।

মো. আইনুল হক

বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রাণিসম্পদ খাত যে নীরব ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে, সেটিকে সবার সামনে নিয়ে আসার জন্য আমরা ‘প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ’ পালন করছি। প্রাণিসম্পদের মাধ্যমে আমরা দেশের জনগণের আমিষের চাহিদা পূরণ করতে পারছি।

মাংস উৎপাদনে আমরা বর্তমানে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি । ডিম উৎপাদনেও অচিরেই স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পারব। দুধ উৎপাদনে আমরা কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হচ্ছে।

২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়নের জন্য যে ১৭টি লক্ষ্যমাত্রা আমাদের সামনে রয়েছে, এর ৯টির সঙ্গে প্রাণিসম্পদ সরাসরি বা পরোক্ষভাবে জড়িত।

ক্ষুধা দূরীকরণ, দারিদ্র্যমুক্ত জাতি গঠন, সবার জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিশ্চিতকরণের মতো লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে প্রাণিসম্পদ সরাসরি সম্পৃক্ত।

দেশের সার্বিক উন্নয়নে এবং টেকসই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে প্রাণিসম্পদ খাতের গুরুত্ব সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করে তোলার জন্য আমরা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে নিরলস কাজ করে যাচ্ছি।

তালুকদার নুরুন্নাহার

প্রাণিসম্পদ আমাদের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি এবং কৃষি খাতের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপখাত। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং সরকারের সপ্তম পঞ্চবার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রাণিসম্পদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

আমাদের দেশের মাংস ও দুধের চাহিদা পূরণের জন্য বিদেশি গরুর জাতের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হলে চলবে না। আমাদের দেশীয় গরুর জাত যেমন চিটাগাং ক্যাটেল, মুন্সিগঞ্জ ক্যাটেল (যা মীরকাদিমের গরু নামে বেশি পরিচিত) এই জাতগুলোর উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে কাজ করতে হবে।

বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে আমরা হাঁস-মুরগির নতুন জাত উদ্ভাবন ও উন্নয়নেও কাজ করে যাচ্ছি। আমরা ইতিমধ্যে শুভ্রা ও স্বর্ণা নামে দুটি উন্নত মুরগির জাত উদ্ভাবন করেছি। আমরা আরেকটি মুরগির জাত উদ্ভাবনের প্রায় দ্বারপ্রান্তে রয়েছি, যেটি বছরে প্রায় ২৯৫টি ডিম দিতে সক্ষম।

এ ছাড়া প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে আমরা প্রাণীর রোগ চিহ্নিতকরণ এবং রোগ নিয়ন্ত্রণেও গবেষণা করে যাচ্ছি। গবাদিপশুর বিভিন্ন মারাত্মক রোগের জন্য বিদেশি প্রতিষেধকের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনতে আমরা দেশীয় প্রতিষেধক তৈরি করছি।

মো. কামরুজ্জামান

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দুটি বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। একটি হলো আমাদের মেটাডেটার (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন–সম্পর্কিত পরিপূর্ণ তথ্য) অভাব, আরেকটি হলো আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের জোগানের পরিকল্পনা নেই। জাতিসংঘ প্রতিটি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের কিছু সূচক নির্ধারণ করে দিয়েছে। এই সূচকগুলোর ওপর ভিত্তি করেই লক্ষ্য অর্জনের সফলতা নির্ধারণ করা হবে।

জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা প্রতিটি দেশে এই সূচক পরিমাপ করে থাকে। আর এই পরিমাপের ভিত্তি হলো মেটাডেটা। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার মোট ২৩২টি সূচকর মধ্যে ৬৪টির সম্পূর্ণ মেটাডেটা, ৫৮টির আংশিক মেটাডেটা আর বাকি ১১০টির কোনো মেটাডেটাই সংগ্রহ করা হয়নি।

জাতিসংঘের কাছে আমরা সময়মতো এই মেটাডেটা উপস্থাপন না করতে পারলে আমাদের অর্জন স্বীকৃত হবে না। আমাদের উন্নয়নের গতি বাড়াতে হবে। আর এই গতি বাড়াতে হলে বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়াতে হবে।

সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের এক হিসাবমতে, প্রাণিসম্পদ খাতে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে অতিরিক্ত ৯২৮ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন হবে।

মসিউর রহমান

বাংলাদেশের পোলট্রি খাতে গত এক দশকে বছরে কম-বেশি ১৮ শতাংশ করে প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। এই প্রবৃদ্ধির মূল কারণ হচ্ছে দেশে মুরগির মাংস ও ডিমের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। ভোক্তাদের মধ্যে চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে বলেই আমরা খামারিরা উৎপাদন বাড়িয়েছি।

আর এই বিরাট প্রবৃদ্ধির পেছনে চালিকাশক্তি হিসেবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর এবং প্রাণিসম্পদ গবেষণা কেন্দ্র কাজ করেছে। পোলট্রি খাতের প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর জনবল আরও বৃদ্ধি করতে হবে। পোলট্রি খাত ২০১৯ সাল পর্যন্ত শুল্কমুক্ত থাকার কথা থাকলেও ২০১৫ সালে এই খাতে শুল্ক আরোপ করা হয়। এই খাতে নতুন বিনিয়োগকারী আকৃষ্ট করতে এবং আমরা যারা এখন ব্যবসা করছি, তাদের কথা ভেবে এই খাতকে শুল্কমুক্ত করে আগের স্থানে নিয়ে যাওয়া উচিত।

সারা দেশের পোলট্রি খামারগুলো নিয়ে একটি জেলাভিত্তিক ডেটাবেইস তৈরি করা দরকার। কোন জেলার খামারগুলোয় কী পরিমাণ মুরগি রয়েছে, সে বিষয়ে সঠিক তথ্য না থাকলে এত বিশাল খাতের সমস্যা মোকাবিলা ভবিষ্যতে কঠিন হয়ে পড়বে।

পোলট্রি খাতের দ্রুত ও টেকসই উন্নয়নের জন্য একটি পোলট্রি বোর্ড গঠন করা অত্যন্ত জরুরি।  আর প্রতিবছর যে ‘প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ’ উদ্‌যাপন করা হচ্ছে, সেটি বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হচ্ছে।

আমি মনে করি, প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নের জন্য এই কর্মসূচিকে সরকারিভাবে স্বীকৃতি প্রদান করে সরকারিভাবে এটি পালন করা উচিত।

মো. মাহফুজুল হক

বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ২৫ লাখ খাদ্য ব্যবসায়ী রয়েছেন। এর মধ্যে ১৫ লাখ সরাসরি আর বাকি ১০ লাখ পরোক্ষভাবে খাদ্য ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।

নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। তাই আমরা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সঙ্গে মিলিতভাবে কাজ করে যাচ্ছি।

কিছুদিন আগে দেশে নকল বা কৃত্রিম ডিমের একটি গুজব বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। আমরা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সঙ্গে মিলে এই গুজবের বিরুদ্ধে এবং ডিমের স্বাস্থ্য ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে গণবিজ্ঞপ্তি প্রচার করি।

এ ছাড়া ঈদে কোরবানির পশুর হাটে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সমন্বয়ে ভ্রাম্যমাণ পরীক্ষাকেন্দ্র পরিচালনা করে থাকি। দেশের পোলট্রি জবাইখানাগুলোতে উত্তম স্বাস্থ্যবিধান অনুশীলনের বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ৪১ জন কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি।

প্রাণিজ খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে পশু এবং হাঁস-মুরগির টিকা ও প্রতিষেধক ব্যবহারের ক্ষেত্রে সঠিক ও সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। প্রাণিজ খাদ্যের রাসায়নিক মাত্রা পরীক্ষার জন্য আধুনিক পরীক্ষাগারের ব্যবস্থা করতে হবে। দেশের প্রতিটি খামার সম্পর্কে তথ্য থাকতে হবে।

শামসুল আরেফীন খালেদ

প্রাণিজ আমিষের চাহিদা সরাসরি পূরণের পাশাপাশি পোলট্রি খাত মানুষের, বিশেষ করে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর প্রাণিজ আমিষ ক্রয়ের আর্থিক সক্ষমতা তৈরিতে বিরাট ভূমিকা রাখছে। একটি পরিবার একটি মুরগি বা কিছু ডিম বিক্রি করে খুব সহজেই সেই অর্থ দিয়ে দুধ বা অন্যান্য প্রাণিজ আমিষ কিনে খেতে পারছে।

ফলে আমাদের পোলট্রি খাতে বৃহৎ বাণিজ্যিক খামারের পাশাপাশি গ্রামীণ পরিবারভিত্তিক পোলট্রি উৎপাদন বৃদ্ধির প্রতিও নজর দেওয়া উচিত।

পোলট্রি খাতে সরাসরি ও পরোক্ষভাবে বর্তমানে প্রায় ৬৬ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে। ২০৩০ সাল নাগাদ এই সংখ্যা ১ কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এই বিরাট কর্মসংস্থানের সম্ভাবনাময় একটি খাতকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিতে হলে চারটি বিষয়ের নিশ্চয়তা দিতে হবে বলে আমি মনে করি। এ বিষয়গুলো হলো ক্রয়ক্ষমতা, সহজলভ্যতা, নির্ভরযোগ্যতা ও টেকসই উন্নয়ন। সব খামারকে নিবন্ধনের আওতায় এনে সেগুলোকে সঠিক নীতিমালা মেনে পোলট্রি উৎপাদন করতে সহায়তা করতে হবে।

হাসিবুর রহমান

রেড মিট বলতে যেসব পশু জবাই করা বা কাটার পর তার মাংস লাল হয় তাকে বোঝানো হয়।

আমাদের দেশে এই রেড মিটের উৎস হলো গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া। আমাদের দেশের মোট মাংসের চাহিদার ৫২ শতাংশ হলো রেড মিটের।

ঈদুল আজহা এবং বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে রেড মিটের চাহিদা এ ক্ষেত্রে বড় অবদান রাখে। কয়েক বছর আগে আমাদের দেশে এই রেড মিট উৎপাদনে একটি নীরব বিপ্লব সাধিত হয়ে গেছে বলা চলে। ভারতে সরকার পরিবর্তনের পর একটি আইন পাস করা হয়, যেখানে বলা হয় যে সেই দেশ থেকে জীবিত গরু আর রপ্তানি করা হবে না। এর ফলে কোরবানির সময় আমাদের দেশে ভারতীয় গরু আসা বন্ধ হয়ে যায়।

ব্যাপক চাহিদা থাকার কারণে সারা দেশে ব্যাপক হারে গরু পালন শুরু হয়ে যায়। ফলে এখন আমরা রেড মিটে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণতার কাছাকাছি চলে এসেছি। এই বিপ্লবের পেছনে সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগের চেয়ে পরিস্থিতি অনেক বেশি অবদান রেখেছে। কিন্তু এখন আমাদের এই বিপ্লবকে ধরে রাখতে হবে।

এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে রেড মিট খাতে আরও উন্নয়নের জন্য সহায়ক নীতি নির্ধারণ করতে হবে। দেশে রেড মিটের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হলে সবার আগে আইন করে ভারত থেকে গরু আমদানি বন্ধ করতে হবে। ভারতে গরুর মাংস খাওয়া হয় না বলে তারা অনেক কম দামে তা রপ্তানি করে। ফলে তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে দেশীয় খামারিরা কখনোই টিকতে পারবেন না।

মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা

প্রাণিদেহ থেকে যেসব রোগ মানবদেহে সংক্রমিত হয়, সেগুলো যদি আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে চাই, তাহলে শুধু আমরা যারা এই খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আছি, তাদের সচেতন হলেই হবে না। ভোক্তাসাধারণকেও সচেতন করে তুলতে হবে।

আমরা প্রায় এক দশক ধরে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করে যাচ্ছি।

এই সমন্বয়কে সহজ ও কার্যকর করার জন্য সবগুলো পক্ষের প্রতিনিধির মাধ্যমে একটি পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির কাজ হলো প্রাণিজ সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাসে করণীয় ঠিক করার জন্য একটি সাধারণ প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা।

এরই ধারাবাহিকতায় আমরা ‘ওয়ান হেলথ’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম গঠন করেছি। এই ওয়ান হেলথ কার্যক্রমের আওতায় আমরা ২০১১-১২ সালে চার বছর মেয়াদি একটি কৌশলপত্র প্রস্তুত করেছিলাম।

আমরা সবাই জানি যে সারা বিশ্বের মানুষই অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতি প্রতিরোধী হয়ে ওঠার ঝুঁকিতে রয়েছে। এর জন্য মানুষের খাদ্যাভ্যাসও অনেকাংশে দায়ী। কোনো প্রাণী যদি নির্দিষ্ট কোনো অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধে প্রতিরোধী হয়ে থাকে, তাহলে সেই প্রাণীর প্রোটিন খেয়ে  মানুষেরও একই সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

শামসুল আলম

আমরা প্রতিবছর প্রাণিসম্পদ খাত থেকে আমাদের চাহিদার ৪৪ শতাংশ আমিষ পাচ্ছি ।

২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত এই খাতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে দেড় গুণ আর ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি হয়েছে চার গুণ। এই অগ্রগতি সত্ত্বেও আমরা এই খাতের চাহিদার সঙ্গে তাল মেলাতে পারছি না। মাংস ও ডিম উৎপাদনে আমরা চাহিদার কাছাকাছি পৌঁছাতে পারলেও দুধের ক্ষেত্রে চাহিদার মাত্র অর্ধেক উৎপাদন করতে সক্ষম হচ্ছি।

কৃষি গবেষণায় আমাদের বাজেটে বরাদ্দ ২০২১ সালের মধ্যে ১০ শতাংশ বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা রয়েছে। কারণ, গবেষণা ছাড়া এই খাতে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়।

নতুন নতুন যে জাত উদ্ভাবন হচ্ছে, তা খামারি পর্যায়ে নিয়ে যেতে গবেষণার কোনো বিকল্প নেই। পোলট্রি খাতকে আবারও শুল্কমুক্ত করে দেওয়া উচিত। কারণ, দেশের আমিষের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি এই খাত বিপুল কর্মসংস্থানও সৃষ্টি করছে। প্রাণিসম্পদ খাতে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে দ্রুত একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা প্রয়োজন।

আর প্রাণিসম্পদ খাতের টেকসই উন্নয়নের জন্য সরকারি কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি বেসরকারি বিনিয়োগকেও উৎসাহিত করতে হবে। সরকারের একার পক্ষে এই খাতের উন্নয়ন কষ্টসাধ্য হবে।

তৌফিকুল ইসলাম খান

প্রাণিসম্পদ আমাদের কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধিতে বিরাট অবদান রাখতে পারে। এ ছাড়া অন্য প্রায় সব খাতেই প্রাণিসম্পদ কম-বেশি ভূমিকা রাখছে।

প্রাণিসম্পদ সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখবে আমাদের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ক্ষুধা নিরসন এবং সবার জন্য পুষ্টিবিধান ও দারিদ্র্য নিরসনসংক্রান্ত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে।

আমাদের দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে প্রাণিজ আমিষের চাহিদা বাড়লেও দেশের সব মানুষ সমান হারে প্রাণিজ আমিষ গ্রহণ করছে না, বিশেষ করে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে।

প্রাণিসম্পদ উন্নয়নের ক্ষেত্রে জমির স্বল্পতা আমাদের একটি বড় বাধা। গবাদিপশু পালন এবং সেগুলোর খাদ্যের জোগান দেওয়ার জন্য জমির প্রয়োজন। অনেকেই দেশের চরাঞ্চলগুলো ব্যবহার করে এই সমস্যা সমাধানের কথা ভাবছেন।

কিন্তু সে ক্ষেত্রে আমাদের ভাবতে হবে যে এসব চরাঞ্চল চিকিৎসাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা থেকে অনেক দূরে। চরাঞ্চলে পশুপালন জনপ্রিয় করতে হলে এসব এলাকায় পশুর চিকিৎসাসহ অন্যান্য সুবিধা পৌঁছে দিতে হবে। আর সে জন্য অবশ্যই বিনিয়োগ করতে হবে। দেশের ক্ষুদ্র খামারিদের উন্নয়নের জন্য ছোট খামারগুলোকে এলাকাভিত্তিক গুচ্ছ খামারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

এর মাধ্যমে উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ এবং বণ্টন করার ক্ষেত্রে ছোট খামারিরা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারবেন এবং বড় খামারগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারবেন।

আবদুল মতিন

আমাদের বাজারে যত দুধ বিক্রি হয়ে থাকে, এর ৯০ শতাংশের জোগান দেন এমন খামারিরা, যাঁদের গাভির সংখ্যা এক থেকে তিনটি। তার মানে, আমাদের দুধের মোট চাহিদার প্রায় পুরোটাই সরবরাহ করেন ক্ষুদ্র ও পরিবারভিত্তিক দুগ্ধ খামারিরা।

এই ক্ষুদ্র দুগ্ধ খামারিদের কারিগরি সহায়তা ও প্রশিক্ষণ খুবই জরুরি। এখনো তাঁরা সনাতন পদ্ধতি ব্যবহার করেই দুধ উৎপাদন করে যাচ্ছেন। তাঁদের জন্য সরকারিভাবে কোনো ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেই। আবার তাঁদের গাভিটির কোনো অসুখ হলে তার চিকিৎসার ব্যবস্থাও তেমন একটা নেই।

আমাদের চাহিদার তুলনায় জনবল ও অবকাঠামো অত্যন্ত অপ্রতুল। বছরে আমাদের দেশে পশুর টিকা উৎপাদনের ক্ষমতা মাত্র ১০ লাখ, যেখানে আমাদের চাহিদা কোটিরও বেশি। আবার প্রতিটি উপজেলায় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও কর্মচারী থাকেন মাত্র পাঁচজন।

কিন্তু প্রতি উপজেলায় পশুর সংখ্যা থাকে কয়েক লাখ। তাই আমাদের খুব দ্রুত অবকাঠামো ও জনবলের উন্নয়ন করতে হবে।

নাজমা শাহীন

আমরা প্রধানত দুই ধরনের প্রোটিন গ্রহণ করে থাকি। একটি উদ্ভিজ্জ প্রোটিন, আরেকটি প্রাণিজ প্রোটিন।

দেশের খাদ্যাভ্যাসে আমরা উদ্ভিজ্জ প্রোটিনই বেশি গ্রহণ করি। কিন্তু দেহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান ‘অ্যামিনো অ্যাসিড’ উদ্ভিজ্জ প্রোটিনে তেমন একটা থাকে না। প্রাণিজ প্রোটিন অ্যামিনো অ্যাসিডের মূল উৎস।

বাড়ন্ত শিশুর দেহ গঠনের জন্য প্রাণিজ প্রোটিনের গুরুত্ব অপরিসীম, বিশেষ করে দেহ গঠনের জন্য দুধ অত্যন্ত জরুরি। দেহ গঠনের জন্য যা যা প্রয়োজন, তার সবই দুধে উপস্থিত। এ ছাড়া ডিম ও মাংস দেহ গঠনে ভূমিকা রাখে।

আমাদের প্রাণিজ খাদ্যের ভোগের হার বাড়ছে। কিন্তু এটি সুষম হারে বাড়ছে কি না, সেদিকে নজর দিতে হবে। যাদের পুষ্টির প্রয়োজন, তারা প্রাণিজ আমিষ ভোগের মাধ্যমে পুষ্টি পাচ্ছে কি না, সেটি লক্ষ রাখতে হবে।

দুধ, ডিম ও মাংসের দাম দেশের দরিদ্র জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনতে না পরলে আমরা কখনোই টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারব না।

মনজুর মোরশেদ খান

শস্যকে যেমন শস্য কৃষি খাত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে, তেমনি আমাদের প্রাণিসম্পদ খাতকেও পশু কৃষি খাত হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত।

পশু কৃষি খাতের স্বীকৃতি প্রদান করা হলে স্বাভাবিকভাবেই এই খাত সরকারের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার আওতায় চলে আসবে।

প্রাণিসম্পদ খাত শুধু আমিষেরই উৎস নয়, এটি প্রাণিজ শক্তিরও একটি বিরাট উৎস। প্রাণিজ খাদ্য থেকে আমরা এমন অনেক শক্তির উপাদান পাই, যা অন্য কোনো উৎস থেকে পাওয়া সম্ভব নয়।

আমাদের পশু খাত অনেকাংশে শস্য খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত। শস্য খাতের উচ্ছিষ্টাংশ যেমন: খড়, কুঁড়া, সয়াবিন কেক ইত্যাদি পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

আবার প্রাণিজ মাংস, ডিম ও দুধ থেকে বিভিন্ন ধরনের খাদ্য তৈরি হচ্ছে। ফলে প্রাণিসম্পদ খাতকে একটি দ্বিপক্ষীয় খাত বলা যেতে পারে।

প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নের জন্য আমাদের উপজেলা পর্যায়ে পরীক্ষাগারের সুবিধা নিয়ে যেতে হবে। কারণ এখন যত চিকিৎসা হচ্ছে এবং যত অ্যান্টিবায়োটিক ও টিকা ব্যবহার করা হচ্ছে, সবই হচ্ছে অনুমানের ওপর নির্ভর করে।

নারায়ণ চন্দ্র চন্দ

আমাদের দেশের প্রাণিসম্পদ উন্নয়নের জন্য ক্ষুদ্র খামারিদের কথা চিন্তা করতে হবে। তাঁদের কথা চিন্তা না করলে আমাদের উৎপাদনের একটি বড় অংশ বাদ পড়ে যাবে।

প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নের জন্য অনেকেই সরকারের বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে বলেছেন।

আমি বলব, সরকারের বিনিয়োগের চেয়ে এই খাতে বেসরকারি বিনিয়োগ বেশি প্রয়োজন। সরকার এই বিনিয়োগকে উৎসাহিত করতে সহায়তা করে যাবে। কিন্তু বিনিয়োগ করতে হবে বেসরকারি খাতকে।

আরেকটি বিষয় হলো, ভারতীয় গরু আমদানির ক্ষেত্রে আমাদের চিন্তা করতে হবে যে ভারতে বর্তমানে যে আইনটি হয়েছে, সেটির ফলে আমাদের দেশীয় খামারিরা গরু পালনের দিকে ঝুঁকছেন।

এর ফলে আমাদের দেশের উৎপাদন বাড়ছে। এই প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার জন্য অবশ্যই আমাদের ভারত থেকে গরু আমদানি বন্ধ রাখা উচিত বলে আমি মনে করি।

আজকের আলোচনায় আপনারা আপনাদের মূল্যবান মতামত তুলে ধরেছেন, আমি কথা দিচ্ছি আমরা মন্ত্রণালয় থেকে এই মতামতগুলোকে গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করব।

আব্দুল কাইয়ুম: দেশের প্রাণিসম্পদ উন্নয়নের জন্য প্রাণিজ আমিষের গুরুত্ব সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করা অত্যন্ত জরুরি। এক্ষেত্রে আমাদের উন্নয়নের গতি আরো বাড়াতে হবে। আর এই গতি বাড়াতে হলে বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়াতে হবে।

আর সে ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ভূমিকা অপরিসীম। গণমাধ্যম হিসেবে প্রথম আলো এই ভূমিকা পালনে সর্বদা সচেষ্ট।

প্রথম আলোর পক্ষ থেকে সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ।

আলোচনায় সুপারিশ

• ক্ষুদ্র খামারিদের উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে

• প্রাণিসম্পদ খাতে সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানো দরকার

• প্রাণীর রোগ প্রতিরোধে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকা জরুরি

• প্রাণিসম্পদের গবেষণা খাতে আরও অর্থায়ন প্রয়োজন

• প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের জনবল বৃদ্ধি করা জরুরি

• প্রাণিজ খাদ্য উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বণ্টন–প্রক্রিয়া স্বাস্থ্যসম্মত হওয়া উচিত

• দেশের খামারগুলোর তথ্য নিয়ে একটি ডেটাবেইস তৈরি করা দরকার

• প্রাণিসম্পদকে পশু কৃষি খাত হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা প্রয়োজন

যাঁরা অংশ নিলেন

নারায়ণ চন্দ্র চন্দ: মাননীয় সাংসদ, মন্ত্রী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়

শামসুল আলম: সিনিয়র সচিব, সদস্য, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ, পরিকল্পনা কমিশন

মো. আইনুল হক: মহাপরিচালক, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর

তালুকদার নুরুন্নাহার: মহাপরিচালক, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই)

মো. কামরুজ্জামান: যুগ্ম সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়

নীতীশ দেবনাথ: সিনিয়র টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার, ইমার্জেন্সি সেন্টার ফর ট্রান্সবাউন্ডারি অ্যানিমেল ডিজিজ (ইসিটিএডি)

মো. মাহফুজুল হক: চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ

নাজমা শাহীন: পরিচালক, ইনস্টিটিউট অব নিউট্রিশন অ্যান্ড ফুড সায়েন্স, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা: পরিচালক,  রোগতত্ত্ব, রোগ নির্ণয় ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)

শামসুল আরেফীন খালেদ: সভাপতি, ওয়ার্ল্ড পোলট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ব্রাঞ্চ, (ওয়াপসা বিবি)

মসিউর  রহমান: ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্যারাগন পোলট্রি

তৌফিকুল ইসলাম খান: রিসার্চ ফেলো, সিপিডি

হাসিবুর রহমান: অতিরিক্ত ব্যবস্থাপক, এক্‌মি লিমিটেড

মনজুর মোরশেদ খান: সভাপতি, পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন

আবদুল মতিন: চিফ নির্বাহী অফিসার, সজাগ

সঞ্চালক

আব্দুল কাইয়ুম: সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো