পথ ঘোরাও নিজের পথে

ক্রাউন সিমেন্ট-প্রথম আলো তারুণ্যের জয়োৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ক্রাউন সিমেন্টের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আলমগীর কবির, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ খান, আইপিডিসি ফাইন্যান্সের ব্র্যান্ড ও করপোরেট কমিউনিকেশনের প্রধান মাহজাবীন ফেরদৌস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তাওহিদা জাহান, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান ও যুব উন্নয়ন কর্মসূচির সমন্বয়কারী মুনির হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যারিয়ার ক্লাবের মডারেটর রাশেদুর রহমান, নৃত্যদল তুরঙ্গমীর পরিচালক পূজা সেনগুপ্ত প্রমুখ। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে।  প্রথম আলো
ক্রাউন সিমেন্ট-প্রথম আলো তারুণ্যের জয়োৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ক্রাউন সিমেন্টের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আলমগীর কবির, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ খান, আইপিডিসি ফাইন্যান্সের ব্র্যান্ড ও করপোরেট কমিউনিকেশনের প্রধান মাহজাবীন ফেরদৌস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তাওহিদা জাহান, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান ও যুব উন্নয়ন কর্মসূচির সমন্বয়কারী মুনির হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যারিয়ার ক্লাবের মডারেটর রাশেদুর রহমান, নৃত্যদল তুরঙ্গমীর পরিচালক পূজা সেনগুপ্ত প্রমুখ। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে। প্রথম আলো

জীবনে সফল হতে হলে নিজেকে তৈরি করে নিতে হয়। কাজকে ভালোবাসতে হয়, নয়তো ভালোবাসার জায়গাটাকে কাজের ক্ষেত্র বানাতে হয়। জীবনের লক্ষ্য ঠিক করে প্রয়োজনে পথ ঘোরাতে হবে নিজের পথে। কারণ, ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়বেন তরুণেরাই।

জীবনে সফল হতে গতকাল বুধবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে এসব পরামর্শের কথা বলেন নানা ক্ষেত্রের সফল তরুণেরা। দেশের সৃজনশীল ও উদ্যমী তরুণদের জন্য এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে ‘ক্রাউন সিমেন্ট-প্রথম আলো তারুণ্যের জয়োৎসব’-এর পথচলা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় অনুষদের ডিন শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, ‘তরুণ প্রজন্মের হাত ধরেই বাংলাদেশের স্বপ্ন। তরুণ প্রজন্মের কাছে আমাদের আশা-ভরসা। পথ ঘোরাও নিজের পথে কথাটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের নানা ক্ষেত্রের উদ্যোক্তা সবচেয়ে বেশি দরকার। তরুণদের নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস বাড়াতে হবে।’

প্রথম আলোর যুব উন্নয়ন কর্মসূচির সমন্বয়কারী মুনির হাসান জয়োৎসবের কার্যক্রম সম্পর্কে উপস্থাপনা দেন। ক্রাউন সিমেন্ট-প্রথম আলোর যৌথ উদ্যোগে সারা দেশে তারুণ্যের জয়োৎসবের প্রচারণা চলবে। এই প্রচারণায় বড় শহরগুলোয় সফলদের সঙ্গে আলোচনা, ক্যারিয়ার নিয়ে কাউন্সেলিং, নেতৃত্ব, ডিজিটাল মার্কেটিং, ফটোগ্রাফিসহ বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হবে, থাকবে কর্মশালা। এ ছাড়া জাতীয় পর্যায়ে তরুণদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচিতদের দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষানবিশির ব্যবস্থা করা হবে। সারা দেশের এই তরুণেরা এই কার্যক্রমের সঙ্গে অনলাইনেও (www.prothomalo.com/tarunno) যুক্ত থাকতে পারবেন। অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের তরুণেরা কোথাও গিয়ে হারেন না, যদি তাঁরা ঠিক পথে থাকেন।

অনুষ্ঠানে ক্রাউন সিমেন্টের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আলমগীর কবির বলেন, ‘আমাদের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এত তরুণের সমাহার বিশ্বের খুব কম দেশেই আছে। অনেক তরুণ জানে না কীভাবে কী করতে হয়। তাদের পথ দেখাতে এবং নতুন পথের খোঁজ দিতে এই আয়োজন।’ তিনি আরও বলেন, ‘তরুণদের নিজের পরিচয় নিজেদেরই দিতে হবে।’

বিশেষ অতিথি প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর ছাত্রজীবনের স্মৃতিচারণা করেন। তিনি তরুণদের উদ্দেশে বলেন, ‘অনেক দিক থেকে বাংলাদেশ এখন আলোকিত এবং প্রশংসিত। আমরা বড় সম্ভাবনার সামনে দাঁড়িয়ে আছি বা পৌঁছে গেছি। আমরা সব সময় বাংলাদেশের জয় দেখতে চাই। তরুণেরা আমাদের জয়ের লক্ষ্যে নিয়ে যাবে।’

বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তিন শতাধিক তরুণ শিক্ষার্থী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনীর পর পাঁচ সফল তরুণের সঙ্গে তাঁরা প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন। সফল পাঁচজন তাঁদের জীবনের ও ক্যারিয়ারের অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে স্নাতক করে আসা তামান্না ইসলাম তরুণদের বিদেশে পড়াশোনা শেষ করে দেশে ফিরে কাজ করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘পড়াশোনা শেষে আমি আমেরিকাতেই চার–পাঁচ মাস কাজ করেছি। কিন্তু সেখানে কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ করলে খুব ছোট একটা সমস্যার খুব ছোট অংশ নিয়ে কাজ করতে হতো। তাই পিএইচডি করার আগে বাংলাদেশে ফিরে বড় সমস্যা নিয়ে কাজ করছি।’

তরুণদের সঙ্গে আলোচনায় ৩৬তম বিসিএস পরীক্ষায় প্রশাসনে প্রথম হওয়া ইসমাইল হোসেন বলেন, ফলাফল যা-ই হোক না কেন, পরিশ্রম করে যেতে হবে। লক্ষ্যে পৌঁছাতে নিজেকে তৈরি করে নিতে হবে, যাতে নেতিবাচক কিছু হলেও কোনো আক্ষেপ না থাকে।

আরেক আলোচক নৃত্যদল তুরঙ্গমীর পরিচালক পূজা সেনগুপ্ত বলেন, ‘শুধু নিজেকে তৈরি করলেই হবে না, ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। চাকরি না থাকলে যোগ্যতা দিয়ে নিজেই কাজের ক্ষেত্র বানানো যায়। টিকে থাকার চেষ্টা না করে বাঁচার চেষ্টা করুন।’ পদার্থবিজ্ঞানে পিএইচডি করার আমন্ত্রণ পেয়েও তিনি তাঁর ভালোবাসার জায়গা নাচকেই পেশা হিসেবে নিয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যারিয়ার ক্লাবের মডারেটর রাশেদুর রহমান বলেন, ‘তারুণ্য ও জয়—দুটোই খুব শক্ত কথা।’ তরুণদের কাছে তাঁর পরামর্শ, ‘আমরা তাড়াতাড়ি ফল পেতে চাই, কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি সফল হওয়ার দরকার নেই।’

আইপিডিসি ফিন্যান্সের ব্র্যান্ড ও করপোরেট কমিউনিকেশনের প্রধান মাহজাবীন ফেরদৌস, জুমশেপারের প্রধান নির্বাহী কাওসার আহমেদ নিজেদের পথচলার অভিজ্ঞতা শোনান। প্রশ্নোত্তর পর্বে শিক্ষার্থীরা প্যানেল আলোচকদের কাছ থেকে আরও পরামর্শ জানতে পারেন। কুইজ প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষ হয়। এই আয়োজনের সহযোগী ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যারিয়ার ক্লাব। সঞ্চালনা করেন ক্যারিয়ার ক্লাবের সভাপতি হালিমা আক্তার।