কৃষি, কৃষক - আগামীর বাংলাদেশ

>

৯ মে ২০১৮, প্রথম আলোর আয়োজনে ও তীর–এর সহযোগিতায় ‘কৃষি, কৃষক—আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আলোচকদের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশিত হলো।

আলোচনায় সুপারিশ

* যেকোনো মূলে্য দেশীয় বীজের সক্ষমতা ও পর্যাপ্ততা বাড়াতে হবে

* একই তথ্য সবাইকে দিলে হবে না। কৃষককে তাঁর অঞ্চলভিত্তিক তথ্য দেওয়া জরুরি

* মাছ ও প্রাণীর খাবারে ভেজাল রোধ করার জন্য কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে

* কৃষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা প্রয়োজন

* কৃষিপণে্যর বহুমুখী ব্যবহারের ক্ষেত্রে অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া জরুরি

* কৃষকদের প্রণোদনা ও উৎসাহ দিতে হবে

* মাঠপর্যায়ে আরও অনেক বেশি কৃষি কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া দরকার

* কৃষির জন্য ব্যাপকভাবে গবেষণা ও পরিকল্পনার উদ্যোগ নিতে হবে

* এমন প্রযুক্তি আবিষ্কার করতে হবে যেন লবণাক্ত জমিতে ফসল উৎপাদন করা যায়

* কৃষিতে গবেষণাসহ বিভিন্ন কাজের জন্য বাজেটে বরাদ্দ বাড়াতে হবে

আলোচনা

অব্দুল কাইয়ুম: কৃষি আমাদের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখছে। কৃষিকে আরও এগিয়ে নিতে হবে। এ জন্য চ্যালেঞ্জগুলো কী, চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় করণীয় কী, সে বিষয়ে আজকের আলোচনা। আমাদের ফসলের উৎপাদন ও চাহিদা দুটোই বেড়েছে। ভবিষ্যতে আরও বাড়বে। আবার বিভিন্ন কারণে কৃষিজমিও কমে যাচ্ছে। আজকের আলোচনায় এসব বিষয় আসবে। এখন আলোচনার সূচনা করবেন আব্দুল মান্নান।

আব্দুল মান্নান
আব্দুল মান্নান

আব্দুল মান্নান

বর্তমান বাস্তবতায় কৃষির বিষয়টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আজকের আলোচনা থেকে যে সুপারিশ ও পরামর্শ আসবে, সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে তা যুক্ত করতে চেষ্টা করব।

কৃষির ক্ষেত্রে আমাদের অনেক সাফল্য আছে। এ খাতে অর্জন চোখে পড়ার মতো। কৃষিতে আমাদের এখনো অনেক কিছু করতে হবে। খাদ্যে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে এবারও চাল আমদানি করতে হয়েছে।

নিরাপদ খাদ্যের বিষয়ে আমরা সঠিক জায়গায় যেতে পারিনি। ধান, গম আগের চেয়ে অনেক বেশি উৎপাদন হচ্ছে। নিজের খাবার নিজেদেরই উৎপাদন করতে হবে। কৃষিতে আরও উন্নয়ন আনতে হবে। বীজের সক্ষমতা বাড়াতে হবে।

কৃষিতে ব্যাপক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য যেভাবেই হোক কৃষিতে আরও সাফল্য আনতে হবে।

মো. সেলিম রেজা
মো. সেলিম রেজা

মো. সেলিম রেজা

আমাদের অর্থনীতির চালিকাশক্তি কৃষি। আজ জমি দূষিত হচ্ছে। কৃষকেরা যে রাসায়নিক ব্যবহার করছেন, সেটা মানসম্মত না। এর ফলে পরিবেশদূষণ হচ্ছে। ফলনও বাড়ছে না। রাসায়নিকের মূল উপাদান নষ্ট হয় না। অনেক কৃষক ফসলে বিষ ব্যবহার করছেন। এর ফলেও পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। কীটনাশক ব্যবহারের ফলে দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হচ্ছে। অনেকে জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

চাষিরা বলেন, ‘এত সব দিচ্ছি, কিন্তু কাজ তো হচ্ছে না।’ সারের কারণে ব্যাকটেরিয়া ও অণুজীব নষ্ট হচ্ছে। শক্ত নিয়ম করতে হবে যেন ব্যবস্থাপত্র (প্রেসক্রিপসন) ছাড়া কেউ ফসলের ওষুধ না কিনতে পারে।

আমাদের খামারগুলো যান্ত্রিকীকরণ করতে হবে। সবাই মিলে জমি পরিকল্পনায় আনা প্রয়োজন। আমাদের কৃষিতে ওপরের দিকে (ভার্টিক্যাল) উৎপাদন বাড়াতে হবে। কৃষকেরা কী অবস্থায় আছেন, তা আমরা জানি। অনেক কৃষক তাঁর নাম বলতে পারেন না। তাঁদের শিক্ষিত করে কৃষির মান বাড়াতে হবে।

মো. আকরাম হোসেন
মো. আকরাম হোসেন

মো. আকরাম হোসেন

দীর্ঘদিন দেশের বাইরে ছিলাম। যেকোনো দেশের কৃষি খাত ভালো থাকলে সেই দেশ ভালো থাকবে। আমাদের দেশ নদীমাতৃক। এখানে মাছ চাষের অনেক বেশি সুযোগ আছে। মৎস্য চাষ লাভজনক। কিন্তু বিভিন্ন অনিয়মের জন্য এটা লাভজনক হচ্ছে না।

বিশেষ করে মাছের খাবারে অত্যন্ত ক্ষতিকর উপাদান মেশানো হচ্ছে। মাছের খাবারের জন্য খৈল ব্যবহার হয়। কিন্তু ৩০ ভাগ খৈল ভেজাল। এর ফলে মৎস্যচাষিদের অনেক ক্ষতি হচ্ছে।

এক কেজি পাঙাশ মাছ উৎপাদন করতে দুই কেজি খাদ্যের প্রয়োজন হয়। এর দাম ৮০ টাকার বেশি। কিন্তু প্রতি কেজি পাঙাশ বিক্রি হয় ৬৪ টাকায়। আমি কেন টিকে আছি? কারণ আমি রেণু তৈরি করি। খাবার তৈরি করি। আমার হাঁস, মুরগি ও গরুর খামার আছে। সবকিছু নিজেই তৈরি করি। এ জন্য আমার টিকে থাকাটা অনেক সহজ হয়েছে। দুই ধরনের দুর্নীতি আছে। এক. অভাবের জন্য। দুই. লোভের জন্য। দেশে সুশিক্ষার ভীষণ অভাব। কৃষকের কথা সেভাবে কেউ ভাবছে না। কিছু মানুষ এ খাতকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।

আমি মাছের মানসম্মত খাদ্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে আনছি। অনেকে যথেষ্ট বাধা তৈরি করেছে যেন ভালো খাবার না আসে। যে পণ্য আনতে বন্দরে ৫ টাকা খরচ হওয়ার কথা, সেটা আনতে ৩০ টাকা খরচ হচ্ছে।

আমরা মাছ রপ্তানি করতে পারছি না। মাছের খাবারের মান অত্যন্ত খারাপ। এ মাছ পরীক্ষায় টিকবে না। আমি অবশ্য রপ্তানির চেষ্টা করছি। হয়তো একদিন সফল হব।

অল্পনা রানী মিস্ত্রি
অল্পনা রানী মিস্ত্রি

অল্পনা রানী মিস্ত্রি

একটা নিম্ন এলাকায় কাজ করি। আমাদের বিদ্যুতের সুবিধা নেই। আমরা কষ্ট করে কাজ করি। রান্না করতে অনেক সমস্যা হয়। আমরা নিজেরা ‘বন্ধু চুলা’ তৈরি করেছি। গ্রামের নারীদের রান্নার জন্য ১০০ পরিবারে বন্ধু চুলা করে দিয়েছি। গ্রামের নাম দিয়েছি বন্ধু চুলা গ্রাম।

নারীদের নিয়ে সভা করি। সবাইকে বললাম, আমাদের প্রায় সবার বাড়িতে হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল আছে। আমরা এসব প্রাণীর বর্জ্য ফেলে দেব না। গর্ত করে ঢেকে রাখব। কয়েক দিন ঢাকা থাকলে এটা জৈব সার হয়ে যায়।

রাসায়নিক সারে জমি নষ্ট হয়। ফসলের ক্ষতি হয়। কিন্তু জৈব সারে শাকসবজি বেশি সবুজ থাকে। ফলন বেশি হয়। আমি মেহগনিগাছের ফল দিয়ে রাসায়নিক তৈরি করেছি। এটা দোকানের কীটনাশক থেকে অনেক ভালো। এভাবে আমরা বিষমুক্ত ফসল উৎপাদন করছি।

কাশফিয়া আহমেদ
কাশফিয়া আহমেদ

কাশফিয়া আহমেদ

তথ্য কৃষকের জন্য দরকার। আবার যিনি কষ্ট করে রিকশা চালান, তাঁর জন্যও দরকার। ২০০৬ সাল থেকে আমরা তথ্য সরবরাহের কাজ শুরু করি।

কৃষকদের কাছে তথ্য পাঠানো খুব কষ্টের। দেশে মাত্র ১ হাজার ৫০০ জন কৃষি কর্মকর্তা আছেন। প্রথমে আমরা মোবাইলের মাধ্যমে তথ্য সরবরাহ করি।

সেখানে কাজ করতে গিয়ে দেখলাম, অনেক তথ্য কৃষকেরা জানেন না। কী সার ব্যবহার করবেন, কী বীজ ব্যবহার করবেন, সেটা জানেন না। অনেক কৃষকের ছেলেমেয়ে অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করেন। তাঁদের জন্য ভিডিও তৈরি করতে পারি। তথ্যের অপ্রতুলতা দূর করা দরকার।

নতুন কাজ কৃষকদের কাছে নিয়ে যাওয়া একটা চ্যালেঞ্জ। তাঁরা আবহাওয়ার খবর পেতে চান। আমরা আবহাওয়া অধিদপ্তরের মাধ্যমে আবহাওয়ার তথ্য দিচ্ছি। সাতক্ষীরার কৃষককে ময়মনসিংহের তথ্য দিলে কাজে লাগবে না। কৃষককে তাঁর এলাকাভিত্তিক তথ্য দিতে হবে।

শিরিন সুলতানা
শিরিন সুলতানা

শিরিন সুলতানা

মূলত আমি একজন খেলোয়াড়। বিদেশে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে পদক জিতে দেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছি।

২০১৩ সালে ৩ হাজার ৬০০টি মুরগি দিয়ে একটি পোলট্রি খামার প্রতিষ্ঠা করি। এখন আমার খামারে ৩০ হাজার মুরগি আছে। কিন্তু পোলট্রিশিল্পের অবস্থা খুব খারাপ। একটা ডিম উৎপাদন করতে চার থেকে পাঁচ টাকা খরচ হয়। কিন্তু বিক্রি করতে হয় আরও কম দামে।

পোলট্রি খামারিরা যেন খুব কম সুদে ঋণ পান, সে ব্যবস্থা করতে হবে। আমাদের কৃষি খাত অনেক এগিয়েছে। কৃষি আমাদের প্রাণ। কিন্তু কৃষিজমি কমে যাচ্ছে। ময়মনসিংহ এলাকায়ও কৃষিজমিতে শিল্প গড়ে উঠেছে। জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান ২০ শতাংশ করতে হবে। কৃষি ব্যাংকে দীর্ঘ লাইন দিয়ে মাসের পর মাস ঘুরলেও অনেক ক্ষেত্রে ঋণ পাওয়া যায় না।

কৃষকের শিক্ষার দিকেও গুরুত্ব দিতে হবে। কৃষির উন্নয়নের সঙ্গে দেশের উন্নয়ন জড়িত। পোলট্রি খাদ্যের দাম যেন কমে, বাজেটে সে ব্যবস্থা রাখতে হবে।

রাশেদুল করিম
রাশেদুল করিম

রাশেদুল করিম

পাট খাত মানে চটের বস্তা—এ মানসিকতা থেকে বের হতে হবে। অস্ট্রেলিয়ায় প্লাস্টিক পণ্য নিষিদ্ধ হচ্ছে। এর পরিমাণ হচ্ছে ৯০০ মিলিয়ন শপিং ব্যাগ। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০১৯ সাল থেকে প্লাস্টিকের ব্যবহার ৮০ শতাংশ কমাবে। এর পরিমাণ হলো প্রায় ৪৮ বিলিয়ন পিস।

জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে দেখি, সারা বিশ্বে শপিং ব্যাগের চাহিদা হলো ৫০০ বিলিয়ন পিস। আমরা একটা ব্যাগ এক ডলারে বিক্রি করতে পারি।

কাঁচা পাট রপ্তানি করলে এক টন পাট থেকে পাই ৬০০ ডলার। ইয়ার্ন রপ্তানি করলে এক টন থেকে পাই ১ হাজার ২০০ ডলার। এক টন প্রচলিত পাটপণ্য রপ্তানি করলে পাই ১ হাজার ৫০০ ডলার। পাটের এক টন ভ্যালু অ্যাডেড পণ্য বিক্রি করলে ৩ হাজার থেকে ১০ হাজার ডলার পেতে পারি। ভারত ও চীন যা অনেক আগে থেকে করছে।

পাট মানে এখনো নেতিবাচক ভাবনা। পাটের উৎপাদনের ক্ষেত্রে বীজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখন ৯০ ভাগ বীজ আসে বিদেশ থেকে। এ বীজের মান ঠিক আছে কি না, সেটা আমরা নিশ্চিত হতে পারি না।

আমাদের বীজের উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে হবে। এ ক্ষেত্রে গবেষণার জন্য বাজেটে বরাদ্দ দিতে হবে।

বিশ্ববাজারে পাটের চাহিদা বাড়ছে। আমাদের মূল্য সংযোজনের ক্ষেত্রে অনেক বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। অনেক আগে পাটের জিনোম আবিষ্কার হয়েছে। কিন্তু এখনো তা কাজে লাগানো যাচ্ছে না।

সোয়েব মো. আসাদুজ্জামান
সোয়েব মো. আসাদুজ্জামান

সোয়েব মো. আসাদুজ্জামান

সিটি গ্রুপ ব্যবসার সূচনালগ্ন থেকে কৃষির সঙ্গে জড়িত। কৃষি পণ্যের বহুমাত্রিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে আমরা উদ্ভাবনী বাজারজাতকরণে কাজ করছি। বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি কৃষিকে এগিয়ে নেওয়া আমাদের সবার দায়িত্ব।

কৃষি খাত ও আমাদের কৃষকেরা যথাযথ সুযোগ সুবিধা-পাচ্ছেন না। কৃষি ক্ষেত্রে কার্যকর উদ্যোগ ও তদারকের অভাবে বিভিন্ন ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে কৃষকদের। ভবিষ্যতে কৃষি ও কৃষকের মানোন্নয়নে, কৃষি গবেষণা ও কৃষি ক্ষেত্রে প্রযুক্তির উৎকর্ষ বাড়াতে কাজ করবে সিটি গ্রুপ।

আমরা এত দিন যে পণ্য বিক্রি করেছি তাতে উপকৃত হয়েছেন বিদেশি কৃষকেরা। কারণ আমরা আটা, ময়দা, সুজি, তেল বিক্রি করি। এসব পণ্য বিদেশ থেকে এনেছি। আমরা এখন দেশের কৃষকদের সঙ্গে কাজ করছি। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বড় চাল ও ডালের কারখানা করেছি। এখনে প্রতিদিন এক হাজার টান চাল উৎপাদন হবে।

পাম ফল থেকে তেল উৎপাদন করলে কৃষক যে পরিমাণ লাভ করতে পারেন, এর থেকে যদি আইসক্রিম ও চকলেটের উপাদান তৈরি করতে পারেন তাহলে আরও অনেক বেশি লাভবান হতে পারেন।

আমাদের দেশেও ধান, পাট ও মাছ যদি শুধু ধান, পাট ও মাছ হিসেবে বিক্রি করা হয়, তাহলে কৃষক কোনো দিনই সঠিক মূল্য পাবেন না। এসব ফসল থেকে যদি কৃষক উদ্ভাবনী ও মূল্য সংযোজনমূলক পণ্য ৈতরি করেত পারেন তাহলে অনেক বেশি লাভবান হতে পারবেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কৃষকদের এসব ক্ষেত্রে িবশেষ সহযোগিতা দেওয়া প্রয়োজন। আমরা চাই দেশে উদ্ভাবনীমূলক বাজারজাতকরণ হোক। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি।

এ এম এম সালেহ
এ এম এম সালেহ

এ এম এম সালেহ

প্রতিনিয়ত আমাদের জমি কমে যাচ্ছে। ভূমির ওপরের মাটি ইটভাটায় ব্যবহার হচ্ছে। আমাদের জমি রক্ষা করতে হবে। ধনী ব্যক্তিরা শত বিঘা জমি কিনে রেখেছেন। চাষবাস করছেন না। এসব জমি ব্যবহারের একটা নীতিমালা থাকা উচিত।

কৃষিকে গণমাধ্যমের আরও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। দেশের সাফল্যের কথা যদি বলি, তাহলে কৃষি সবচেয়ে বেশি সাফল্য অর্জন করেছে। ৭ কোটি থেকে আজ ১৬ কোটির বেশি মানুষ। কিন্তু আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি।

চাল, মাছ ছাড়াও অন্যান্য খাদ্যে আমাদের উৎপাদন প্রায় চাহিদার কাছাকাছি। কোনো মানুষ বলে না যে বাজারে খাদ্য নেই।

কৃষির ক্ষেত্রে নতুন কোনো বিষয় যদি আসে, তাহলে সেটা কে জানাবেন? একটা থানায় হয়তো একজন কৃষি অফিসার আছেন। তাঁর যাতায়াতের ব্যবস্থা তেমন নেই। একজন মানুষ কীভাবে একটা উপজেলার কৃষকের সুযোগ-সুবিধা দেখবেন? রাসায়নিক ব্যবহারের একটা নীতিমালা থাকতে হবে। কৃষকের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে।

হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক
হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক

হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক

কৃষিতে আমাদের অভাবনীয় সাফল্য আছে। পশুসম্পদেও আমরা সাফল্য পেয়েছি। এখন নিরাপদ খাদ্যে গুরুত্ব দিতে হবে।

পোলট্রি শিল্প বর্তমানে ভালো নেই। বিক্রয়মূল্য থেকে উৎপাদন খরচ বেশি। পোলট্রি অনেক বড় শিল্প। কৃষির পরই এর অবস্থান। প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা এখানে বিনিয়োগ আছে। পোলট্রি শিল্পের উপকরণের ওপর কর রেয়াত দেওয়া প্রয়োজন।

কৃষি খাতের মতো পোলট্রি শিল্পে ব্যবহৃত বিদ্যুতের মূল্য নির্ধারণ করা জরুরি। কৃষিতে যেমন ভর্তুকি দেওয়া হয়, তেমনি প্রাণিসম্পদ শিল্পে ভর্তুকি দেওয়া প্রয়োজন।

তিন বছর ধরে প্রায় অধিকাংশ কোরবানির গরু স্থানীয়ভাবে জোগান দেওয়া হচ্ছে। গত দু–তিন বছর হরমোন ব্যবহার করা হচ্ছে না বললেই চলে। হরমোন ব্যবহার করলে যে কৃষক বড় রকমের ক্ষতির মুখেও পড়তে পারেন, এটা আমরা বোঝাতে সক্ষম হয়েছি।

আমরা কৃষককে এমনভাবে প্রশিক্ষণ দিয়েছি যে তাঁরা বুঝতে পেরেছেন, হরমোন ব্যবহার না করেও গরুকে আরও ভালো হৃষ্টপুষ্ট করা যায়।

আগে হরমোন পরীক্ষা করতে পরতাম না। এখন এ প্রযুক্তি আবিষ্কৃত হয়েছে। গত বছর যতগুলো পরীক্ষা করেছি কোথাও হরমোন পাইনি।

এফ এইচ আনসারী
এফ এইচ আনসারী

এফ এইচ আনসারী

লাঙল থেকে শুরু করে কৃষির প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার রয়েছে। আমরা বেশি খাবার দিয়ে কম মাছ উৎপাদন করি। বিদেশে কম খাবার দিয়ে অনেক বেশি উৎপাদন করা হয়। এখানে প্রযুক্তির ব্যবহার রয়েছে। আমরা যে খরচে ৩০০ কেজি চিংড়ি উৎপাদন করি, ভারত সে খরচে ২০ টন চিংড়ি উৎপাদন করে। এসবই হচ্ছে প্রযুক্তির সুবিধা।

কৃষির তিনটি পর্ব—প্রচলিত কৃষি, বেসিক কৃষি, হাইটেক কৃষি। প্রচলিত কৃষির কাজ হচ্ছে, নিজে কৃষিতে কাজ করা। পরিবারের জন্য খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। আমাদের অধিকাংশ কৃষক প্রচলিত কৃষিকাজ করেন। বেসিক কৃষিতে কৃষির সঙ্গে আয়ের বিষয় সম্পর্কিত। হাইটেক কৃষি হলো বাজারনির্ভর ও মূল্য সংযোজন।

আমাদের দেশে এক হেক্টরে ধানের উৎপাদন হয় তিন থেকে চার টন। সময় লাগে ১৪০ থেকে ১৫০ দিন। ভিয়েতনামে ৯৫ দিনে ধান উৎপাদিত হয় ছয় টন। ভিয়েতনামে ধানগাছের উচ্চতা দেড় থেকে দুই ফুট। আমাদের দেশে ধান গাছের উচ্চতা হলো তিন থেকে চার ফুট। এখন আমরা বুঝতে পারছি, আমাদের প্রযুক্তির পার্থক্য কতটা। আমরা যদি ভিয়েতনামের মতো উৎপাদন করতে পারি, তাহলে আমাদের অনেক জমি থেকে যাবে। এ জমিতে আমরা তেল, ভুট্টা, ডালসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করতে পারব।

২০১২ সালে বার্ড ফ্লুতে মুরগি মারা যাওয়ায় ধস নামে। বার্ড ফ্লু ভ্যাকসিন দেওয়ার পর এটা থেকে মুক্তি পাওয়া গেল। দুই বছর ধরে মুরগির এইচনাইন ইনফেকশনের কথা শোনা যাচ্ছে। এ বিষয় কোনো উদ্যোগ দেখতে পাচ্ছি না। একটা বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভারত দুধ উৎপাদনে সফল হচ্ছে। আমরা কি দেখতে পারি না যে কীভাবে তারা সফল হচ্ছে। প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারসহ আমাদের সবকিছু পরিকল্পনা করে এগোতে হবে।

ওয়ায়েস কবির
ওয়ায়েস কবির

ওয়ায়েস কবির

খাদ্যে ভেজাল একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা। খাদ্যের মাননিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, নীতিমালা—এসব আমাদের আছে। সমস্যা হলো মাঠপর্যায়ে কর্মকর্তা বা তাঁদের সুযোগ-সুবিধার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। এ কারণে ভেজাল রোধ করার জন্য যথেষ্ট লোকবল নেই।

একটা বিষয় ভাবতে হবে, আজকের কৃষি আগের মতো নেই। কৃষির মধ্যে এখন প্রযুক্তি ও মূলধন যুক্ত হয়েছে। কৃষি যত বাণিজ্যিকীকরণ হবে, তত রাসায়নিকের ব্যবহার বাড়বে। এ ক্ষেত্রে তদারক আরও বেশি জোরদার করতে হবে।

কৃষিতে যেমন সুযোগ আছে, তেমনি অনেক চ্যালেঞ্জও আছে। সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুতি কতটুকু? কৃষিকে আরও কিছুটা কৌশলগতভাবে ব্যবহার করতে পারলে এটা হবে আরও লাভজনক খাত।

এখন আমাদের প্রয়োজন দক্ষতা ও জ্ঞাননির্ভর কৃষি। কৃষির জন্য এলাকাভিত্তিক আবহাওয়ার তথ্য সরবরাহের জন্য আমাদের কার্যকর ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। এর জন্য প্রশিক্ষিত লোকবল প্রয়োজন। কৃষিতে এখন সবচেয়ে বড় প্রয়োজন দক্ষতা ও জ্ঞান।

কে এ এস মুরশিদ
কে এ এস মুরশিদ

কে এ এস মুরশিদ

আসলে কৃষির ভবিষ্যৎটা কী? বাংলাদেশের কৃষির ভবিষ্যৎ নিয়ে আরও গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে।

আমরা দ্রুত শিল্পায়নের দিকে যাচ্ছি। আগামী ২০-৩০ বছরে কৃষি কোথায় যাবে? একদিকে বৈশ্বিক উষ্ণতা, অন্যদিকে জমির চাহিদা। বাড়ির জন্য জমি, শিল্পের জন্য জমি। এভাবে চলতে থাকলে কৃষিজমির কী হবে? এটা আমার মূল কথা।

২০ বছর আগে এই আলোচনা করলে আমরা ধান-চাল ছাড়া হয়তো আর তেমন িকছু আলোচনা করতাম না। এখন কিন্তু ধান-চাল ছাড়া অন্য সব বিষয় নিয়ে বেশি কথা বলেছি।

গত ১০০ বছরের ইতিহাস হলো, কৃষি এখনো লাভজনক। ভর্তুকি দিয়ে আমরা কৃষিকে এগোনোর চেষ্টা করছি। আমাদের আরও গবেষণা লাগবে। কীভাবে খরচ কমানো যায়।

আমাদের এখন উচ্চমূল্যের ফসলের দিকে যেতে হবে। এখানে হয়তো ঝুঁকি আছে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সঠিকভাবে প্রযুক্তির ব্যবহার করতে পারলে আমাদের অনেক বেশি সফলতা আসবে।

মুনির হাসান
মুনির হাসান

মুনির হাসান

আমাদের দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের আরও উন্নয়নে তরুণদের সব খাতে যুক্ত হওয়া প্রয়োজন। তরুণদের যেভাবে কৃষির প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার কথা ছিল, সেভাবে হয়নি।

প্রায় সবার আলোচনায় প্রযুক্তির ব্যবহারের বিষয়টি এসেছে। এ প্রযুক্তি কারা ব্যবহার করবে? তরুণেরা। বড়দের দিয়ে প্রযুক্তির ব্যবহার হবে না। তাই তরুণদের কৃষি খাতে যুক্ত করতে না পারলে আমাদের কৃষি সেভাবে প্রযুক্তিনির্ভর হবে না।

আর প্রযুক্তিনির্ভর না হলে কৃষিতে আমরা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় সাফল্য পাব না। কেন আমাদের আলুর বহুমুখী ব্যবহার হবে না। বিভিন্ন পণ্যের বহুমুখী ব্যবহার হবে না। এসব বিষয় তরুণেরা গবেষণা করতে পারে। তরুণদের একটা বড় অংশ এখন উদ্যোক্তা হতে চায়। তাদের সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া প্রয়োজন। বিভিন্নভাবে প্রণোদনা দেওয়া প্রয়োজন।

শাইখ সিরাজ
শাইখ সিরাজ

শাইখ সিরাজ

দেশে প্রায় দেড় লাখ পোলট্রি খামার আছে। এর ৯০ শতাংশই তরুণেরা করছেন। অধিকাংশ ডেইরি ফার্ম তরুণেরা করছেন। বাংলাদেশে যত পেয়ারাচাষি আছেন, তাঁরা প্রায় সবাই তরুণ।

সাম্প্রতিক সময়ে তরুণেরা কৃষির প্রতি অনেক বেশি আগ্রহী হচ্ছেন। এদের আরও উৎসাহ দেওয়া দরকার।

আমাদের কৃষির একটা বিশাল অগ্রগতি হয়েছে। কৃষিতে বড় রকমের রূপান্তর ঘটেছে। এ ঘটনার পেছনে গ্রামের কৃষক থেকে শুরু করে কৃষিসংশ্লিষ্ট সবার অবদান আছে।

আগামীর কৃষি কী হবে? আগামীর কৃষির উন্নয়ন ঘটবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। চীনে চাল থেকে অন্তত ১০০ রকমের পণ্য তৈরি হচ্ছে। কয়েক রকমের বিস্কুট তৈরি হচ্ছে। কৃষিতে বাণিজ্য এসেছে। এই বাণিজ্যের স্বার্থেই এর উন্নয়ন ঘটবে।

প্রশ্ন হচ্ছে, এখানে আমাদের কৃষকের অবস্থান কোথায়? আমাদের কৃষকেরা আরও দুর্বল হতে পারেন। এখনকার কৃষিতে বিনিয়োগের প্রয়োজন। কৃষকের বিনিয়োগের শক্তি নেই।

এখন থেকে কৃষি চুক্তিভিত্তিক চাষাবাদের দিকে যাবে। এ ক্ষেত্রে মালিক ও কৃষক দুজনেরই সুবিধাজনক অবস্থান থাকতে হবে। অধিকাংশ কৃষকের সবচেয়ে বড় সমস্যা বীজ নিয়ে। বীজ খারাপ হলে কৃষক ক্ষতিপূরণ পাবেন, এর ন্যূনতম কোনো নিশ্চয়তা নেই। অথচ খারাপ বীজের জন্য অনেকে ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হন। আবার দিনের পর দিন বীজের দাম বাড়ছে।

আগামীর কৃষি নিশ্চিতভাবে প্রযুক্তিনির্ভর হবে। আমাদের কৃষি কর্মকর্তাদের আরও দক্ষ ও আধুনিক হতে হবে। আরও অনেক বেশি কৃষি কর্মকর্তা সারা দেশে নিয়োগ দিতে হবে। এখন কৃষিকে আধুনিকভাবে সাজাতে হবে। কৃষির জন্য ব্যাপকভাবে পরিকল্পনা ও গবেষণা প্রয়োজন।

আব্দুল মান্নান: কৃষি একটা বিজ্ঞান, আজ সেটা প্রতিষ্ঠিত সত্য। এখন আমরা পাটের জন্মরহস্য আবিষ্কার করেছি। কিন্তু কৃষক এখনো এর সুফল পাননি। সুফল পেতে কিছুটা সময় লাগছে এ জন্য যে, পাটের এমন একটি জাত তৈরি করা হবে, যে পাটের উৎপাদন সারা বছর হবে। পাটের আঁশ হবে খুব উন্নত। এর পাতার একটা ঔষধি গুণ থাকবে। খড়ি দিয়ে কাগজ তৈরি হবে। খুব সম্ভবত আগামী বছর এ কাজ শেষ হবে।

বায়ুমণ্ডলে উষ্ণতা বাড়বে। অসময়ে সব দুর্যোগ হচ্ছে। এর ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে কৃষির। এ ক্ষেত্রে গবেষণার জন্য অর্থ প্রয়োজন। কোনো নির্ধারিত অর্থ দিয়ে গবেষণা হবে না। যখন যা প্রয়োজন সেটা দিতে হবে। আমাদের এমন প্রযুক্তি আবিষ্কার করতে হবে, যেন দক্ষিণাঞ্চলের লবণাক্ত জমি চাষের আওতায় আনতে পারি।

 যেসব কোম্পানি বীজ বিক্রি করে, তাদের বীজে যদি কৃষকের ক্ষতি হয়, তাহলে অবশ্যই ওই কোম্পানির ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে শস্যবিমা খুব জরুরি।

গত বছর প্রায় ৫০ লাখ মেট্রিক টন আলু বেশি উৎপাদিত হয়েছে। ফাস্ট ফুডের দোকানগুলো নাকি দেশি আলু কেনে না। গবেষণা করে এমন আলু তৈরি করতে হবে, যেন সবার কাজে লাগে। একটি সমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে আমাদের কৃষিকে আধুনিক করতে হবে।

আব্দুল কাইয়ুম: আজকের আলোচনায় প্রায় সবাই প্রযুক্তির ওপর জোর দেওয়ার কথা বলেছেন। সঠিক প্রযুক্তির অভাবে কৃষিতে আমাদের উৎপাদন কম হচ্ছে। কৃষককে সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া প্রয়োজন। কৃষিপণ্যের বহুমুখী ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। কৃষিপণ্যে মূল্য সংযোজন করা অত্যন্ত জরুরি। আলোচনায় অংশগ্রহণের জন্য প্রথম আলোর পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ।

যাঁরা অংশ নিলেন

আব্দুল মান্নান: মাননীয় সাংসদ, সদস্য, কৃষি মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি

কে এ এস মুরশিদ: মহাপরিচালক, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (বিআইডিএস)

শাইখ সিরাজ: পরিচালক ও বার্তাপ্রধান, চ্যানেল আই

হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক: পরিচালক, সম্প্রসারণ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর

ওয়ায়েস কবির: নির্বাহী পরিচালক, কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশন

রাশেদুল করিম: সভাপতি, বহুমুখী পাট পণ্য সমিতি

সোয়েব মো. আসাদুজ্জামান: নির্বাহী পরিচালক (বিক্রয় বিপণন), সিটি গ্রুপ

এ এম এম সালেহ: সভাপতি, বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট

এফ এইচ আনসারী: নির্বাহী পরিচালক, এসিআই এগ্রিবিজনেস, এসিআই লি.

কাশফিয়া আহমেদ: সিইও, উইন ইনকরপোরেট

মো. সেলিম রেজা: বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কারপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা, মুক্তাগাছা, ময়মনসিংহ

মো. আকরাম হোসেন: বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কারপ্রাপ্ত কৃষক, (মৎস্যচাষি),গাজীপুর

শিরিন সুলতানা: পোলট্রি ফার্ম উদ্যোক্তা ও উপজেলা শ্রেষ্ঠ জয়িতা

অল্পনা রানী মিস্ত্রি: বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কারপ্রাপ্ত কৃষক, শ্যামনগর, সাতক্ষীরা

মুনির হাসান: যুব কর্মসূচি সমন্বয়ক, প্রথম আলো

সঞ্চালক

আব্দুল কাইয়ুম: সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো