দাউদকান্দিতে সড়কের দুর্দশা

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার পালের বাজার থেকে শ্রীরায়ের চর পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার সড়কের এবং গাংকান্দা থেকে ভাংতিরপাড় পর্যন্ত দুই কিলোমিটার সড়কে চলাচল করতে গিয়ে সেখানকার বাসিন্দাদের যে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, তার জন্য দায়ী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গাফিলতি। 

মঙ্গলবার প্রথম আলোয় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ওই দুটি সড়কে ইট বসানো হয়েছে প্রায় আট বছর আগে। অথচ এখন পর্যন্ত পিচঢালাই হয়নি। কিন্তু এই দীর্ঘ সময়ে মানুষ ও যানবাহনের চলাচল তো বন্ধ থাকেনি। ফলে সড়ক দুটির অনেক স্থানেই এখন আর ইটের কোনো অস্তিত্ব নেই। অনেক স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হলে এসব গর্তে জমে পানি। এসব গর্তে প্রায়ই আটকে যায় যানবাহন। নষ্ট হয় যন্ত্রপাতি। তাই এ দুটি সড়ক দিয়ে যানবাহন খুব একটা আসতে চায় না। এলেও তাদের দ্বিগুণের বেশি ভাড়া দিতে হয়। বিশেষ করে দোকানের মালামাল নিয়ে আসতে ব্যবসায়ীদের এবং কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে কৃষকের দুর্ভোগে পড়তে হয় বেশি। ভাঙাচোরা সড়কে চলাচল করতে গিয়ে যানবাহনের মালিকেরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সপ্তাহে তিন থেকে চারবার গাড়ি মেরামত করতে হয়। নিরুপায় হয়ে মাঝেমধ্যে এ সড়কে নিয়মিত চলাচলকারী ২২টি অটোরিকশার চালক নিজেদের অর্থায়নে গর্তে ইট ফেলে চলাচল করেন। 

প্রশ্ন হচ্ছে, দাউদকান্দি উপজেলার বাসিন্দাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এ দুটি সড়কের এ বেহাল কি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চোখে পড়ছে না? কোনো সড়ক সংস্কারের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তাদের উদ্যোগ থাকলে দুটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এত দিন সংস্কারবিহীন থাকার কথা নয়। প্রথম আলোর খবর অনুযায়ী, এ দুটি সড়ক দ্রুত পাকা করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। তাঁদের দাবি যে আমলে নেওয়া হচ্ছে না, তা তো বোঝাই যাচ্ছে। 

এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) দাউদকান্দি উপজেলা কার্যালয়ের প্রকৌশলীর বক্তব্য হচ্ছে, ২০১০-১১ অর্থবছরে যখন সড়ক দুটিতে ইট বসানো হয়, তখন সেগুলো পাকা করার কথা ছিল না। তাঁর এ বক্তব্য সত্যি বিস্ময়কর। শুধু ইট দিয়ে সড়ক নির্মাণ করা হলে সে সড়ক যে বেশি দিন টিকবে না, এ কথা কি এলজিইডি কর্তৃপক্ষের জানা নেই? 

তবে শুধু দাউদকান্দিতেই নয়, দেশের বহু স্থানে বহু সড়ক সংস্কারবিহীন অবস্থায় পড়ে আছে, কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সেগুলো ঠিক করার উদ্যোগ নেই। এটা মনে রাখতে হবে, একটি দেশের উন্নয়নের পূর্বশর্ত হচ্ছে উন্নত যোগাযোগব্যবস্থা। সে জন্য সড়ক ঠিক করতে হবে সবার আগে। 

আমরা চাই দাউদকান্দির পালের বাজার-শ্রীরায়ের চর সড়ক, গাংকান্দা-ভাংতিরপাড় সড়ক দুটিসহ দেশের সব বেহাল সড়ক দ্রুত সংস্কার করা হোক। দূর হোক জনগণের ভোগান্তি।