নাশকতা ও 'ক্রসফায়ার' বন্ধ করুন

বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের একটানা অবরোধ-হরতালের ৫৫ দিনে পেট্রলবোমা, ককটেল ও বাসে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারা হয়েছে ৬০ জনকে। পাশাপাশি নাশকতার অভিযোগে ‘ক্রসফায়ারে’ মারা গেছেন ৩৬ জন। সহিংস রাজনীতির রোষানলে প্রতিদিন গড়ে দুজনের জীবন কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। তথাকথিত আন্দোলন ‘সফল’ করার জন্য আর কত মৃত্যু দরকার? নাশকতা রোধের জন্য আর কত ‘ক্রসফায়ার’ দরকার? 
শনিবার হরতাল ছিল না, অথচ সেদিনও সন্ধ্যায় দেশ টিভি কার্যালয়ের সামনে চ্যানেলের একটি গাড়িসহ তিনটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। হরতাল আহ্বানকারীরা গণমাধ্যমের কার্যক্রম হরতাল-অবরোধের আওতামুক্ত বলে ঘোষণা করেন, আবার তঁাদের হরতালেই টেলিভিশন ও পত্রিকার গাড়ি পোড়ানো হয়। এটা কোন ধরনের রাজনীতি? তাহলে কি ২০-দলীয় জোট সহিংস কর্মসূচি দিয়েই দায়িত্ব শেষ করছে? কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারলে এখনই তঁাদের কর্মসূচি স্থগিত করা উচিত। আর না হলে তঁাদের খোলাখুলি বলতে হবে যে হরতাল-অবরোধে পত্রিকা, টেলিভিশন, রেডিও—সবকিছু বন্ধ থাকবে। তারপর গণমাধ্যম বিচার করবে এ ধরনের কোনো আন্দোলনের খবর পরিবেশন করা হবে কি হবে না।
কিছুদিন রেলে নাশকতা বন্ধ থাকার পর শনিবার হবিগঞ্জে পাহাড়িকা এক্সপ্রেসে পেট্রলবোমা ছুড়ে তিনজনকে আগুনে ঝলসে দেওয়া হয়েছে। শনিবার রাজধানীতে সাতটি গাড়িতে ও গতকাল রোববার রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। আন্দোলনের নামে কার্যত নৈরাজ্য চলছে। অথচ বিএনপি দেশের সবচেয়ে বড় বিরোধী দল। গত বছর ৫ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচনের পর এক বছর চুপচাপ থেকে এখন নতুন নির্বাচনের দাবিতে সহিংস আন্দোলন করা হচ্ছে। সবার অংশগ্রহণে নির্বাচন সবাই চায়। কিন্তু এ জন্য মানুষ মারতে হবে কেন? বিএনপিকে এ বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনায় রেখে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। সহিংসতা বন্ধ করাই হবে শান্তির পথে প্রথম ইঙ্গিতবাহী পদক্ষেপ।