জলাতঙ্করোধী টিকার সংকট

ঝালকাঠি জেলার সদর হাসপাতালে এবং জেলার তিনটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জলাতঙ্করোধী টিকার চরম সংকটের বিষয়টি স্বাস্থ্য খাতের অনিয়ম–বিশৃঙ্খলা চিত্রকেই তুলে ধরছে। কুকুরে কামড়ানো রোগীরা এসব জায়গায় এসে টিকা পাচ্ছেন না। ফলে বাইরে থেকে চড়া দামে টিকা কিনতে বাধ্য হচ্ছেন ভুক্তভোগীরা।
জলাতঙ্ক রোগ হয় রেবিস ভাইরাসে আক্রান্ত কুকুরের মাধ্যমে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো কুকুর কোনো ব্যক্তিকে কামড়ালে তিনি রেবিস ভাইরাসে আক্রান্ত হন। কুকুর কামড় দেওয়ার পর দ্রুত টিকা না নিলে জলাতঙ্ক রোগের ঝুঁকি থাকে। আর একবার জলাতঙ্ক রোগ দেখা দিলে মৃত্যু অনিবার্য। অথচ এই মারাত্মক রোগেরই কিনা টিকা পাওয়া যাচ্ছে না! স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে টিকা চেয়ে চিঠি পাঠানো হলেও তা এখনো এসব হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে এসে পৌঁছায়নি। এটা স্রেফ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের গাফিলতি।
গত সোমবার প্রথম আলোয় প্রকাশিত এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ থেকে ৩১ মার্চ দুপুর পর্যন্ত এক সপ্তাহে কেবল সদর হাসপাতালে ৭৭ জন কুকুরে কামড়ানো রোগীকে জলাতঙ্করোধী টিকা দেওয়া হয়েছে। এরপর থেকে হাসপাতালে কোনো টিকা নেই। এখন প্রতিদিন গড়ে ৮-১০ জন কুকুরে কামড়ানো রোগী হাসপাতালে এলেও তাঁদের টিকা দেওয়া যাচ্ছে না। একইভাবে জেলার নলছিটি, রাজাপুর ও কাঠালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও অনেক রোগী টিকা দিতে এসে ফিরে গেছেন। ফলে তাঁরা বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে চড়া দামে ওষুধ কিনছেন। দাম বেশি হওয়ায় দরিদ্র রোগীরা টিকা কিনতে পারছে না।
এখনই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে এ ব্যাপারে তৎপর হতে হবে। জরুরি ভিত্তিতে ঝালকাঠির হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে জলাতঙ্করোধী টিকা সরবরাহ করতে হবে। তা না হলে সেখানে জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়ে একটি মানুষও যদি মারা যায়, তার দায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকেই বহন করতে হবে।