হলুদ ট্যাক্সি কম দুর্ঘটনায় পড়ে?

নীল ট্যাক্সির বদলে যদি হলুদ ট্যাক্সিক্যাবে চড়েন, তবে আপনার দুর্ঘটনার কবলে পড়ার ঝুঁকি তুলনামূলক কম হবে। সিঙ্গাপুরের একদল গবেষক এমনটাই দাবি করেছেন।
নগর-রাষ্ট্র সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে বড় ট্যাক্সি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানে নীল ও হলুদ মোটরগাড়ির সংখ্যা বেশি। তাদের তিন বছরের দুর্ঘটনার তথ্য-উপাত্ত ওই গবেষকেরা ঘেঁটে দেখেছেন। বিশ্লেষণের পর তাঁরা এই উপসংহারে পৌঁছান: প্রতি মাসে প্রতি হাজার গাড়িতে দুর্ঘটনায় পড়া নীল গাড়ির গড় সংখ্যা হলুদ গাড়ির চেয়ে ছয়টি বেশি। গবেষকেরা বলছেন, হলুদ রং তুলনামূলকভাবে বেশি উজ্জ্বল। সে জন্য এই রঙের গাড়ি দূর থেকে বেশি চোখে পড়ে। সে কারণেই এগুলো দুর্ঘটনার কবলে পড়ে কম।
প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস সাময়িকী এ গবেষণা প্রতিবেদন ছেপেছে। গবেষকেরা দুর্ঘটনার অন্যান্য কারণ বাদ দিয়ে মূলত গতি পর্যবেক্ষণের তথ্য-উপাত্ত আমলে নিয়েছেন। কম দুর্ঘটনাপ্রবণ গাড়িচালকেরা হলুদ গাড়ি পছন্দ করেন—এই সম্ভাব্যতাও তাঁরা বিবেচনা করেছেন। প্রাপ্ত ফলাফলের পক্ষে আরও প্রমাণ জোগাড় করতে অন্যান্য যানবাহনেও (যেমন: গণপরিবহন, স্কুলবাস ইত্যাদি) হলুদ রঙের প্রভাব খুঁজে দেখেছেন।
গবেষক দলটির প্রধান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের অধ্যাপক হো টেক হুয়া বলেন, গাঢ় রঙের যানবাহন বেশি হারে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এ বিষয়ে চমকপ্রদ প্রমাণ রয়েছে। তিনি বলেন, এ পর্যন্ত খুব কম গবেষণায়ই গাড়ির রং ও দুর্ঘটনার হারের মধ্যে জোরালো সংযোগের ব্যাপারটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নতুন এ গবেষণায় ইঙ্গিত মিলেছে, গণপরিবহনের ব্যবহৃত যানে রং ব্যবহারের বিষয়টি গুরুত্বের দাবি রাখে। সব ট্যাক্সির রং পাল্টে হলুদ করে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নিয়ে বহু মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব। এতে বিপুল অঙ্কের লোকসানও এড়ানো যাবে।
সিঙ্গাপুরের ট্যাক্সি পরিচালনা প্রতিষ্ঠান কমফোর্টডেলগ্রোর একজন মুখপাত্র বলেন, গবেষণাটি আগ্রহব্যঞ্জক। তাঁরা এটি গভীরভাবে যাচাই করে দেখবেন।
গবেষকেরা আগেও গাড়ির রং ও দুর্ঘটনার মধ্যে সম্পর্ক অনুসন্ধান করেছেন। ২০০৩ সালে নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডে এক গবেষণায় দেখা যায়, সাদার চেয়ে রুপালি রঙের গাড়ির দুর্ঘটনায় পড়ার ঝুঁকি ৫০ শতাংশ কম হয়ে থাকে।
স্পেনের একদল গবেষক ২০০২ সালে বলেন, হালকা রঙের গাড়ি সাধারণত দুর্ঘটনায় কম পড়ে। দেশটিতে ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনার তথ্যভান্ডার সে রকম ইঙ্গিতই দিয়েছিল।