সেই ৬৬ বছর আগে ১৯৫১ সালে শুরু হয় ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ নামের সুন্দরী প্রতিযোগিতা। সুইডিশ মডেল কিকি হ্যাকানসন ছিলেন প্রথম মিস ওয়ার্ল্ড খেতাবজয়ী। এ বছর ৬৬তম মিস ওয়ার্ল্ড ২০১৭ খেতাব জিতেছেন ভারতের মানুষি ছিল্লার। বিশ্বসুন্দরীরা তকমা জেতার পর কেউ যোগ দেন সিনেমা-মডেলিংয়ের দুনিয়ায়, কেউবা যোগ দেন অন্য পেশায়। তেমনি কয়েকজন বিশ্বসুন্দরীর কথা পড়ুন এই আয়োজনে
প্রথম আফ্রিকান মিস ওয়ার্ল্ড এখন ব্যবসায়ী
প্রথম আফ্রিকান হিসেবে ২০০১ সালে মিস ওয়ার্ল্ড খেতাব জয় করেন নাইজেরিয়ার আগবানি দারেগো। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে কম্পিউটারবিজ্ঞান ও গণিতের ছাত্রী এই সুন্দরী এখন ব্যস্ত নিজের ব্যবসা নিয়ে। ২০১৪ সাল থেকে নিজের নামে পোশাক ব্র্যান্ড চালু করেন আগবানি। নারীদের জন্য জিনস, সানগ্লাস ও ব্যাগ তৈরি করছেন আগবানি।
ভারত-কাঁপানো দুই বিশ্ব সুন্দরী
১৯৯৪ সালে দ্বিতীয় ভারতীয় হিসেবে মিস ওয়ার্ল্ড খেতাব জয় করেন ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন। ভারতের এ পর্যন্ত যে ছয়জন বিশ্বসুন্দরী খেতাব জিতেছেন, তাঁদের মধ্যে বলিউড কাঁপাচ্ছেন ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন ও প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। ঐশ্বরিয়া শুধু বলিউড–হলিউড নয়, বিভিন্ন সামাজিক ও দাতব্য কাজে অংশগ্রহণ করছেন। ঐশ্বরিয়া ইউএনএইডসের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে কাজ করছেন। প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে শিশু অধিকার নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি এখন সামাজিক অধিকারকর্মী
১৯৯৮ সালে মিস ওয়ার্ল্ড খেতাব জিতেছিলেন ইসরায়েলের লিনর অ্যাবারগিল। বর্তমানে নারীদের সামাজিক অধিকার নিয়ে কাজ করছেন। মাত্র ১৮ বছর বয়সে যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া লিনর এশীয় ও আফ্রিকার নারীদের সামাজিক নিরাপত্তা নিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে কাজ করে যাচ্ছেন।
মিস ওয়ার্ল্ড যখন অ্যাথলেট ও শিক্ষক
২০০৪ সালে পেরুর মারিয়া জুলিয়া ম্যানটিল্লা মিস ওয়ার্ল্ড খেতাব জিতেছিলেন। মারিয়া শুধু সুন্দরী প্রতিযোগিতাতেই নয়, খেলা-দুনিয়াতে পেরুতে বেশ আলোচিত। ২০০১ সালে তিনি ট্রায়াথলন ও পেন্টাথলন প্রতিযোগিতায় জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়ে জাতীয় অ্যাথলেট হিসেবে সম্মাননা জিতেছিলেন। এই সুন্দরী এখন পেরুর প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিশুদের নাচ শেখান।
মিস ওয়ার্ল্ড এখন মেয়র!
২০০৯ সালে মিস ওয়ার্ল্ড খেতাব জয় করেন কাইয়ানো অলদোরিনো। কাইয়ানো বর্তমানে জিব্রাল্টারের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে একটি হাসপাতালে পাঁচ বছর মানবসম্পদকর্মী হিসেবে কাজ করেছেন তিনি।
দাতব্য কাজে ব্যস্ত রোলেন
২০১৪ সালে মিস ওয়ার্ল্ড খেতাব জয় করেন রোলেন স্ট্রাউস। রোলেন তৃতীয় দক্ষিণ আফ্রিকার নারী, যিনি এ খেতাব জয় করেন। স্ট্রাউস দক্ষিণ আফ্রিকায় দাতব্য প্রতিষ্ঠান স্ট্রাউস ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন হিসেবে কাজ করছেন। তাঁর মা ছিলেন নার্স আর বাবা পেশায় চিকিৎসক, তাই মা-বাবার পথ ধরেই মানবসেবার জন্য দাতব্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অনেক দিন ধরেই যুক্ত রোলেন।
লিসা এখন সাংসদ!
১৯৯৩ সালে মিস ওয়ার্ল্ড খেতাব জয় করেন জ্যামাইকান সুন্দরী লিসা রেনে হ্যানা। লিসা তৃতীয় জ্যামাইকান, যিনি মিস ওয়ার্ল্ড খেতাব জয় করেন। তিনি এখন পুরোদস্তুর রাজনীতিবিদ। জ্যামাইকার সংসদীয় ইতিহাসে লিসা সর্বকনিষ্ঠ নারী সাংসদ। ২০১২-১৬ সময়ে তিনি জ্যামাইকার যুব ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
সমাজসেবাই করবেন মানুষি
চিকিৎসাশাস্ত্রে পড়াশোনা করছেন ২০১৭ সালের বিশ্বসুন্দরী মানুষি। ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ আসরে যাওয়ার আগেই ‘প্রজেক্ট শক্তি’ নামের একটি প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত আছেন তিনি। নারীর স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক এ প্রকল্প নিয়ে মানুষি গিয়েছেন ভারতের ২০টি গ্রামের পাঁচ হাজার নারীর কাছে। হৃদ্রোগে আক্রান্ত মানুষকে নিয়েও ভবিষ্যতে কাজ করার ইচ্ছা তাঁর। কার্ডিয়াক সার্জন হওয়ার জন্য অনেক আগেই মনস্থির করে রেখেছেন।
গ্রন্থনা: জাহিদ হোসাইন খান
সূত্র: ভোগ, মিস ওয়ার্ল্ড ওয়েবসাইট