বংশীবাদক মদিনা

মো. মদিনার সব সময়ের সঙ্গী বাঁশি। ছবি: লেখক
মো. মদিনার সব সময়ের সঙ্গী বাঁশি। ছবি: লেখক

মো. মদিনা ঘুরে ঘুরে আইসক্রিম বিক্রি করেন। আইসক্রিম রাখার প্লাস্টিকের কুলার বক্সটির সঙ্গে তাঁর হাতে আরও একটি জিনিস রাখেন সযতনে। সেটা বাঁশি। তিনি শখের বশে বাঁশি বাজান। শখের কাজটিই তাঁকে আলাদা করে চেনায় লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে আসা পর্যটকদের কাছে। পরিচিতজন কিংবা পর্যটকেরা আবদার করলে আনন্দের সঙ্গে হাতে নেন, সুর তোলেন বাঁশিতে। তিনি শুধু বাঁশিতেই সুর তোলেন না, হাততালি দিয়ে গান, আবার কখনো বিভিন্ন ধরনের হাতের পারদর্শিতায় মুদ্ধ করেন দর্শনার্থীদের। তাই মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের সবুজ প্রকৃতি যেমন পর্যটকদের চোখ জুড়িয়ে দেয়; তেমনি মনটা প্রশান্ত করে মো. মদিনার বাঁশির সুর।

বাঁশির সুরে বিমোহিত পর্যটকদের কাছে একটি আইসক্রিম কেনার আকুতি থাকে এই বয়স্ক মানুষটির। বংশীবাদক মদিনার আদি বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায়। ১৫ বছর বয়সে চলে আসেন মৌলভীবাজারের ভানুগাছ উপজেলার বাঘমারা গ্রামে। দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে তিনি এই উপজেলায় বসবাস করছেন। একসময় রিকশা-ভ্যান চালাতেন আর মাঝেমধ্যে দিনমজুরের কাজ করেও জীবিকা নির্বাহ করতেন। মো. মদিনা বললেন, ‘বড় ভাই আবদুর রহিম বাঁশি বাজাতেন। তাঁর কাছেই বাঁশি বাজানো শিখেছি। আর জাদু শিখেছি ভানুগাছ বাজারের এক জাদু প্রদর্শনকারীর কাছে।’

গান গেয়ে ও বাঁশি বাজিয়ে মানুষকে আনন্দ দিয়ে নিজেও খুব আনন্দ পান। সংসারে অনেক টানাপোড়েন, রোজগারও কম। তবে রোজগার কম হলে যে আনন্দ থাকবে না, এ রকম কোনো কথা নেই। মদিনার একটাই প্রত্যাশা, কোনো একদিন বড় কোনো মঞ্চে উঠে বাঁশি বাজাবেন।