প্রশ্ন ফাঁসের সহজ কিছু পদ্ধতি

এবারের এসএসসি পরীক্ষায় টানা রেকর্ডসংখ্যক প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। অনেক ধরপাকড়ের পরও মূল হোতারা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাই আমরা আশাবাদী, এসএসসির মতো বছরের বাকি পরীক্ষাগুলোর প্রশ্নও ফাঁস হবে নির্বিঘ্নে। একই সঙ্গে আমরা এটাও আশা করি, ভবিষ্যতে ফাঁস হতে যাওয়া প্রশ্নপত্রগুলো খুব সহজে পরীক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছাবে। কারণ আমরা দেখছি, আগাম প্রশ্ন পেতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ওপর দিয়ে খুব ধকল যায়। তাই এখন থেকেই প্রশ্ন কীভাবে আরও সহজে ফাঁস করা যায়, যথাযথ কর্তৃপক্ষের জন্য সেটা নিয়ে এখনই ভাবলেন আসফিদুল হক

গান
সহজে প্রশ্ন ফাঁসের একটি উত্তম মাধ্যম হতে পারে গান। পরীক্ষার আগের দিন জনপ্রিয় কিছু গানের কথা এদিক–সেদিক করে প্রশ্ন বলে দেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের কাজ হচ্ছে, একটু মনোযোগ দিয়ে সেই গান শুনে প্রশ্ন বের করা। যেমন আইয়ুব বাচ্চুর সেই বিখ্যাত গানটা গাওয়া যেতে পারে এভাবে, ‘আমি কষ্ট পেতে ভালোবাসি/ তাই উপপাদ্য ২৩ নম্বর পড়ে আসি’। অথবা জেমসের সেই বিখ্যাত গানটি গাওয়া হবে এভাবে, ‘পথের বাপই বাপরে মনা, পথের মা-ই মা/ পড়ন্ত বস্তুর তৃতীয় সূত্র পড়ে ঘুমিয়ে পড়ো না’। এ রকম গানে গানে প্রশ্ন ফাঁস করে দিলে সংশ্লিষ্ট সবার কষ্ট কমে আসবে। পাশাপাশি এই পদ্ধতির আরেকটা উপকারিতা আছে। দেশীয় গানে শ্রোতা নেই, শিল্পীদের এই হাহাকার আর থাকবে না। নতুন প্রজন্ম আবার দেশি গান শোনার জন্য উন্মুখ হয়ে উঠবে।

বেলুন
প্রশ্ন ফাঁসের আরেকটি কার্যকর মাধ্যম হতে পারে বেলুন। পরীক্ষার দিন কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র পৌঁছানোর কাজে গ্যাস বেলুন ব্যবহার করা যায়। বেলুনের সঙ্গে প্রশ্নপত্র বেঁধে আকাশে উড়িয়ে দিতে হবে। আর পরিমাণমতো এমন গ্যাস দিতে হবে, যাতে একটা নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে বেলুন মুখ থুবড়ে পড়ে যায়। সেখানে ওঁত পেতে থাকা পরীক্ষার্থীরা প্রশ্নপত্র পেয়ে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে পারবে। আর বেলুন-ক্র্যাশের ওপর যেহেতু কারও হাত নেই, তাই কর্তৃপক্ষও খুব সহজে দায় এড়িয়ে যেতে পারবে।

কে হতে চায় প্রশ্নপতি
আগাম প্রশ্নপত্র নিয়ে কর্তৃপক্ষ একটি রিয়েলিটি শোর আয়োজন করতে পারে। যার নাম হবে ‘কে হতে চায় প্রশ্নপতি’। এই অনুষ্ঠানে অংশ নেবে পরীক্ষার্থীরা, তাদেরকে আসন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র থেকে প্রশ্ন করা হবে। সবচেয়ে বেশি সঠিক উত্তর যারা দিতে পারবে, তাদেরকে সারা জীবনের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আগাম প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হবে। তবে যারা অংশ নিতে পারবে না, তাদেরও হতাশ হওয়ার কিছু থাকবে না। কারণ, এই অনুষ্ঠানেই পরের পরীক্ষার সব প্রশ্ন আগের দিন জানিয়ে দেওয়া হবে। তাই আগাম প্রশ্ন পাওয়ার আশায় সবাই অনুষ্ঠানের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে থাকবে। এই পদ্ধতির আরেকটা উপকারিতা হচ্ছে, মানুষ ভিনদেশি বস্তাপচা অনুষ্ঠান বাদ দিয়ে দেশীয় চ্যানেলের মুখাপেক্ষী হবে। ফলে সমৃদ্ধ হবে আমাদের দেশীয় এবং প্রশ্ন ফাঁসের সংস্কৃতি।

গুপ্তধন
ফাঁস হওয়াই যখন প্রশ্নের নিয়তি, তখন কিন্তু কর্তৃপক্ষ নিজেরাই পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র পরীক্ষার্থীদের উপহার দিতে পারে। এ জন্য আগেকার দিনে গোয়েন্দা বইয়ে পড়া গুপ্তধন পদ্ধতির আশ্রয় নেওয়া যায়। পরীক্ষার্থীদের বলা হবে, পরীক্ষার আগের দিন স্কুল বা কলেজের মাঠে পোঁতা থাকবে সব বিষয়ের এক সেট করে প্রশ্নপত্র। তাহলেই সবাই প্রশ্নপত্রের জন্য মাঠ খোঁড়াখুঁড়ি করবে। এর ফলে পরীক্ষার্থীদের শারীরিক চর্চা হবে, পাশাপাশি খোঁড়াখুঁড়ির ফলে মাঠে ফসল লাগিয়ে স্কুল বা কলেজ কর্তৃপক্ষ টু–পাইস কামাতেও পারবে।