ভবিষ্যতের ভাবনা ভাবাই কার্টুনিস্টের কাজ

নির্মলেন্দু গুণ। কার্টুন: প্রসূন হালদার
নির্মলেন্দু গুণ। কার্টুন: প্রসূন হালদার

স্কুলে ভাবসম্প্রসারণ লিখতে হতো: ‘ভবিষ্যতের ভাবনা ভাবাই জ্ঞানীর কাজ।’ লেখকেরা তো কম ভবিষ্যৎ দেখেননি। আইজ্যাক আসিমভ, আর্থার সি ক্লার্ক থেকে শুরু করে আমাদের হ‌ুমায়ূন আহমেদ আর মুহম্মদ জাফর ইকবালও ভবিষ্যৎ নিয়ে লিখেছেন অনেক গল্প। হলিউডের পরিচালকেরাও নিঃসন্দেহে জ্ঞানী। টার্মিনেটর, ভি ফর ভেনডেটা, আই অ্যাম লেজেন্ড, ২০০১: আ স্পেস ওডিসি বা রোবোকপ-এর মতো ভবিষ্যতের কাহিনি নিয়ে সিনেমা বানিয়েছেন তাঁরা হাজার হাজার। বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং থেকে ইতিহাসবিদ নোয়াহ হারারিও ভবিষ্যৎ নিয়ে লিখেছেন মোটা মোটা জ্ঞানগর্ভ বই। তাহলে ভবিষ্যৎ নিয়ে কার্টুন কেন বাকি থাকবে?

কার্টুন: নাজমুস সাকিব
কার্টুন: নাজমুস সাকিব

সে কারণেই ৩ থেকে ৫ মে ধানমন্ডির দৃক গ্যালারিতে দেখা গেল বাংলাদেশি কার্টুনিস্টদের চোখে ‘ভবিষ্যতের আর্ট’। এই প্রদর্শনী কাম প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল বাংলাদেশ কার্টুনিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (বানকারাস) এবং ওয়াকম। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন কার্টুনগুরু আহসান হাবীব এবং বানকারাসের প্রেসিডেন্ট জাহিদ হাসান। এই তিন দিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত ৭৪টিরও বেশি কার্টুনের চলেছে জমজমাট প্রদর্শনী।

ভবিষ্যতে কেমন হবে আঁকাআঁকি, এ বিষয়ে লাগামছাড়া কল্পনার মজাদার কার্টুন ছিল। সঙ্গে ছিল প্রযুক্তির দাপট নিয়ে ভয়াবহ সব কার্টুন। যেসব দেখে বিজ্ঞদের মতো মাথা নেড়ে পাশের জনকে বলতে হয়েছে, ‘হুম...বুঝলে বিষয়টা?’

প্রদর্শনীতে ভবিষ্যতের আর্ট বিষয় ছাড়াও ছিল উন্মুক্ত বিষয়ে কার্টুন। এ ছাড়া নির্মলেন্দু গুণ, জেমস থেকে শুরু করে মারজুক রাসেলের মতো তারকাদের ক্যারিকেচারও ঝোলানো হয়েছিল দৃকের দেয়ালে।

প্রদর্শনীর তিন দিনই উপচে পড়া (বাণিজ্যমেলার মতো না হলেও) ভিড় ছিল। অসংখ্য দর্শক প্রদর্শনীতে ঢুকেছিলেন রামগড়ুরের ছানার মতো। বের হয়েছেন সবাই সদানন্দের মতোই হাসিমুখে। দ্বিতীয় দিন থেকে প্রদর্শনীতে ছিল লাইভ ক্যারিকেচারের ব্যবস্থা। অসংখ্য উৎসাহী দর্শক নিজেদের ‘কিম্ভূতকিমাকার’ চেহারা আঁকিয়ে নিয়েছেন প্রিয় কার্টুনিস্টদের কাছ থেকে।

প্রতিযোগিতার ফল ঘোষণা করা হয় প্রদর্শনীর শেষ দিন। ‘মোনালিসা’ এঁকে ফিউচার অব আর্ট বিভাগে প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন নাজমুস সাকিব। নির্মলেন্দু গুণকে এঁকে ক্যারিকেচার বিভাগে প্রথম পুরস্কার উঠেছে প্রসূন হালদারের হাতে। আর ট্রাম্পকে নিয়ে এক কার্টুন এঁকে উন্মুক্ত বিভাগে প্রথম হয়েছেন সালমান সাকিব শাহরিয়ার। তিন কার্টুনিস্টের হাতে ওয়াকমের পক্ষ থেকে পুরস্কার হিসেবে তুলে দেওয়া হয় গ্রাফিক ট্যাব।