ধনীরা এখন যেখানে টাকা রাখতে পারেন

>

খবর: শেষ হলো সুইস ব্যাংকের গোপনীয়তার যুগ। অর্থ গোপনে গচ্ছিত রাখার জন্য অনেক ধনীরই পছন্দ সুইজারল্যান্ড। গ্রাহকের নাম-পরিচয় গোপন রাখতে কঠোর দেশটির ব্যাংকিং খাত। যে কারণে অবৈধ আয় ও কর ফাঁকি দিয়ে জমানো টাকা রাখা হয় সুইস ব্যাংকে। এর সমাপ্তি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিকভাবে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, আইসল্যান্ড, ইজেল অব ম্যান, জাপান, নরওয়ে, দক্ষিণ কোরিয়া ও ইইউভুক্ত দেশগুলোর নাগরিকদের তথ্য সরবরাহ করেছে সুইজারল্যান্ড। আগুয়ান বছরগুলোয় বিশ্বের ৮০টি দেশ এই তালিকায় যুক্ত হবে। (সূত্র: প্রথম আলো, ৭ অক্টোবর ২০১৮)

সুইস ব্যাংকে গোপনে টাকা গচ্ছিত রাখার দিন শেষ। যদিও বাংলাদেশি অতি ধনীরা এখনো শঙ্কামুক্ত, কিন্তু খুব বেশি দিন হয়তো এই সুখ তাঁদের সইবে না! কর ফাঁকি দিয়ে কোটি কোটি টাকা জমা রাখা হয়ে যাবে অসম্ভব। সুইস ব্যাংকের অমানবিকতায় বরাবরের মতোই অতি ধনীদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে রস+আলো। এমন দুর্দিনে ধনীদের টাকা গোপন রাখার কিছু উপায় বলে দিচ্ছেন ব্যাংকমালিক (মাটির) রাফি আদনান

১. ধনীরা টাকার বিছানায় ঘুমান—এমন কথার কথা প্রচলিত থাকলেও মূলত ধনীরাও সাধারণ বিছানার চাদরেই ঘুমান। তাঁরাও আমাদের মতোই সাধারণ! অবস্থাদৃষ্টে যা দাঁড়াচ্ছে, গোপনে টাকা জমিয়ে রাখতে এবার টাকার বান্ডিল নিয়ে দরজির কাছে তাঁদের যেতেই হবে। সুইস ব্যাংক হিসাব বন্ধ করার পর টাকা গোপন রাখতে এমন যুগোপযোগী পন্থা অবলম্বন করতেই পারেন ধনীরা।

২. গোপন রাখা টাকায় এবার চলবে ঘরের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ। ড্রয়িং কিংবা লিভিং রুম, ব্যালকনি অথবা ছাদের সৌন্দর্যবর্ধনে ধনীরা কৃত্রিম গাছ তৈরি করে মধ্যবিত্তদের ‘টাকা কি গাছে ধরে?’ টাইপের চিরাচরিত প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন। সেসব গাছের শাখা-প্রশাখায় থাকবে টাকা।

৩. সমাজে আজ বিশ্বাসের প্রচণ্ড অভাব। ধনীরা গোপন অর্থের গোপনীয়তা রক্ষায় এই সুযোগ নিতেই পারেন। কয়েকজন ধনী একত্র হয়ে আয়োজন করতে পারেন বিশ্বাসের প্রতিযোগিতা। যেখানে তাঁরা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য প্রতিযোগীদের কাছে কোটি কোটি টাকা জমা দিয়ে রাখতে পারেন। নির্দিষ্ট সময় পর যে প্রতিযোগী সম্পূর্ণ অর্থ ফেরত দেবেন, তিনিই হবেন বিজয়ী। এই রিয়েলিটি শোতে বিজয়ী ব্যক্তি পাবেন আকর্ষণীয় পুরস্কার।

৪. ধনীদের বুকশেলফে থাকবে দামি দামি বই। তবে সেসব বইয়ের ভেতরেই ধনীরা তৈরি করতে পারেন সুইস ব্যাংকের বিকল্প। বই থাকবে, বইয়ের পৃষ্ঠা থাকবে না। সেখানে থাকবে টাকা আর টাকা।

৫. টাকায় নাকি বাঘের দুধও মেলে। সুইস ব্যাংককে বিদায় বলে দুধের জন্য বাঘের খামার তৈরি করা হতে পারে নতুন ইতিহাস। স্বাস্থ্যের জন্য টাকায় প্রাপ্ত বাঘের দুধ কতটা কার্যকর, এ নিয়ে গবেষক দল আমাদের জানাতে পারে চাঞ্চল্যকর তথ্যও।

৬. ‘ঢাকায় টাকা ওড়ে’ প্রবাদে বিশ্বাসী হয়ে মানুষ ঢাকামুখী, ফলে এই নগরী আজ মৃতপ্রায়। জনসংখ্যার ঘনত্ব কমাতে সাধারণ জনগণকে ঢাকাবিমুখ করতে ঢাকার বাইরে টাকা ওড়ানোর উৎসব করতে পারেন অতি ধনীরা। সাধারণ জনগণ উড়ন্ত টাকা ধরার আশায় ঢাকা বাদে অন্য শহরে ছুটবে নিশ্চিত।

৭. ‘জমাও’ নামের একটি অ্যাপ হতে পারে সুইস ব্যাংকের মোক্ষম বিকল্প। অতি ধনীরা সেই অ্যাপে ফেক আইডির মাধ্যমে জমা রাখতে পারেন তাঁদের রাশি রাশি টাকা।

৮. ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের মতো অতি ধনীরাও শুরু করতে পারেন ‘একজন ধনী একটি ব্যাংক’-এর মতো নিরাপদ প্রকল্প। সুইস ব্যাংকের ঘোষণায় দুশ্চিন্তা না করে দ্রুত নিজস্ব ব্যাংক উদ্বোধনের ব্যাপারে ভাবা উচিত। ব্যক্তিগত ব্যাংকে টাকা গোপন রাখলে হৃদ্‌রোগমুক্ত থাকার নিশ্চয়তা শতভাগ।

৯. বিশ্বের কিংবা দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে অতি ধনীরা বদ্ধপরিকর। তবে সবার আগে সচল রাখতে হবে নিজস্ব গাড়ির চাকা। টায়ারে হাওয়ার বদলে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ঢুকিয়ে নির্ভয়ে দাপিয়ে বেড়াতে পারেন বিশ্বজুড়ে।

 ১০. সুইস ব্যাংকে হিসাব খোলা বেশির ভাগ ধনীই টাকার গরমে আকাশে উড়ে বেড়ান। সময় এসেছে গরম টাকা ঠান্ডা করে মাটিতে পা রাখার। নিরাপদে টাকার গরম কমাতে বাসার ডিপ ফ্রিজ হতে পারে আদর্শ স্থান। একটিমাত্র ফ্রিজ যথেষ্ট না হলে একাধিক ফ্রিজে টাকাগুলো থাকবে নিরাপদে। বন্যেরা বনে সুন্দর, টাকারা ফ্রিজে।