আবাহনীর পর হারল মোহামেডানও

টুর্নামেন্টটা বাংলাদেশের মাটিতে। যদিও দর্শক প্রায় নেই বললেই চলে, তবু কন্ডিশন তো দেশি ক্লাবগুলোর অনুকূলেই। অন্তত বিদেশি দলগুলো এসে সেটিই বলছে। কিন্তু কোথাও কী! শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ ফুটবলে দ্বিতীয় দিনে এসে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশের দুটি দল মাঠে নেমেছে। সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী দল দুটি—আবাহনী ও মোহামেডান। দুটিই হেরেছে।

আগের দিন মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টস ক্লাবের কাছে ১-০ গোলে হেরেছে ঢাকা আবাহনী। আজ দ্বিতীয় দিনের প্রথম ম্যাচে নেপালের মানাং মার্সিয়াংদি ক্লাবের কাছে হেরেছে ঢাকা মোহামেডান। হারের ব্যবধান আজ আরও বাড়ল, ২-০ গোলে হেরেছে মোহামেডান!
গোল দুটিই হয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে। গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর প্রথমে ওলাদিপো গোল করে এগিয়ে নেন মানাংকে, আর নির্ধারিত সময়ের তিন মিনিট আগে দ্বিতীয় গোলটি করেন বিশাল রায়। দুটি গোলেই যেন ‘প্রতি আক্রমণ কীভাবে করতে হয়’, সেটি মোহামেডানকে শিখিয়ে দিয়ে গেছে নেপালের ক্লাবটি।
এই দুটি হার থেকে যদি একটা শিক্ষা নিতে বলা হয় বাংলাদেশের দলগুলোকে, তবে সেটি সম্ভবত এই—ফুটবল শুধু পায়ের নয়, মাথারও খেলা! কাল ঢাকা আবাহনী আক্রমণ কম করেনি, আজ মোহামেডানও তা-ই। একের পর এক আক্রমণ করে গেছেন তৌহিদুল-সজীবরা। কিন্তু এখানেই ‘মস্তিষ্কের ব্যবহার’ করে গেছে মানাং ডিফেন্ডাররা। এত এত আক্রমণ করেও নেপালি ক্লাবটির বক্সে খুব বেশি একটা ঢুকতে পারেনি মোহামেডান, তাদের গোলকিপারকেও খুব একটা ব্যস্ত থাকতে হয়নি।
ডিফেন্ডাররা নিজেদের কাজ করেছেন, আর মিডফিল্ড ও আক্রমণভাগ দেখিয়েছেন প্রতি আক্রমণ কীভাবে করতে হয়। তাঁদের দুই উইঙ্গার ও স্ট্রাইকারের দৌড়ের গতি অনেক, জায়গা করে নিয়ে সেটি কাজেও লাগাতে পারেন দুর্দান্ত। কখনো ডিফেন্স চেরা থ্রু বা লম্বা পাসে উইঙ্গার-স্ট্রাইকারদের সেই ক্ষমতা কাজে লাগিয়েছে মানাং। বারবার বুঝিয়ে দিয়ে গেছে, নেপালের ফুটবলে কম বয়স থেকেই ফুটবলারদের ‘ফুটবল-শিক্ষা’ দেওয়ার যে সংস্কৃতি চালু হয়েছে, সেটি কতটা পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। মোহামেডান বলতে গেলে নিজেদের সৌভাগ্যবানই ভাবতে পারে, প্রতি আক্রমণে আরও অন্তত দু-তিনটি গোলও পেতে পারত মানাং!
দুটি গোল যেন সাক্ষ্য দিল নেপালিদের ফুটবল বোধের। প্রথম গোলের সময় মোহামেডান আক্রমণে ছিল, সেটি বক্সের সামনে থেকে ঠেকিয়ে দিয়েই বল বাড়িয়ে দিল মিডফিল্ডে। মিডফিল্ড থেকে লম্বা পাস এল, গায়ের সঙ্গে লেগে থাকা মোহামেডানের দুই ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে সেটি ধরতে বেরিয়ে যান মানাং স্ট্রাইকার ওলাদিপো। তারপর এগোতে থাকা মোহামেডান গোলকিপারের মাথার ওপর দিয়ে চিপ! দ্বিতীয় গোলও প্রতি আক্রমণে। গোল ফেরত দিতে হন্যে হয়ে আক্রমণে ওঠা মোহামেডান রক্ষণে খেলোয়াড় ছিলেন দুজন, তাঁদের ফাঁক গলে মিডফিল্ড থেকে একটা থ্রু এল। দৌড়ে গিয়ে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আড়াআড়ি শটে গোল করেন বিশাল রায়।