টিসিকে ফাইনালে তুললেন নাফিউ

গোল করেই উদ্‌যাপনের ভিড়ে হারিয়ে গেলেন টিসি স্পোর্টসের নাফিউ। মানাং মার্সিয়াংদির ডিফেন্ডার কমল শ্রেষ্ঠর (সামনে বসা) চোখেমুখে তখন রাজ্যের হতাশা l প্রথম আলো
গোল করেই উদ্‌যাপনের ভিড়ে হারিয়ে গেলেন টিসি স্পোর্টসের নাফিউ। মানাং মার্সিয়াংদির ডিফেন্ডার কমল শ্রেষ্ঠর (সামনে বসা) চোখেমুখে তখন রাজ্যের হতাশা l প্রথম আলো

ভিআইপি গ্যালারিতে নেপালি পতাকা হাতে এক সারিতে বসা একদল দর্শক। বাংলাদেশে পড়াশোনা করতে আসা নেপালি ছাত্রছাত্রীরা সারাক্ষণ গলা ফাটিয়েছেন মানাং মার্সিয়াংদির জন্য। কিন্তু ম্যাচ শেষে মন খারাপ করেই মাঠ ছেড়েছেন তাঁরা। কাল চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের শেখ কামাল ক্লাব কাপের প্রথম সেমিফাইনালে নেপালি ক্লাব মানাং মার্সিয়াংদিকে ১-০ গোলে হারিয়েছে মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টস। একমাত্র গোলটি করেছেন নাফিউ আলী।
এমন স্মরণীয় সন্ধ্যা টিসি স্পোর্টসের জন্য খুব কমই এসেছে। প্রথমবারের মতো কোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েই ফাইনালে। ম্যাচ শেষে টিসির খেলোয়াড়েরা গোল হয়ে নেচে উৎসব করেছেন অনেকক্ষণ। আতশবাজি পুড়েছে মাঠে। সেই আতশবাজির আলোয় নিজেদের আলোকিত করেছে মালদ্বীপের ক্লাবটি।
সংবাদ সম্মেলনে টিসি স্পোর্টসের কোচ নিজাম মোহাম্মদ ছিলেন ভীষণ উচ্ছ্বসিত। জয়ের পর অভিনন্দন জানালেন ফুটবলারদের, ‘সত্যিকার অর্থে একটা কঠিন ম্যাচ ছিল এটি। তারপরও খুশি যে আমরা শেষ পর্যন্ত ফাইনালে যেতে পেরেছি। অভিনন্দন ছেলেদের।’
দক্ষিণ এশিয়ার দুটি দলই খেলেছে উপভোগ্য ফুটবল। আক্রমণ ও প্রতি আক্রমণে ভরা ম্যাচটি অতিরিক্ত সময়ে নিষ্পত্তি হওয়ার সম্ভাবনাও জেগেছিল। কিন্তু ৮৩ মিনিটে গোলরক্ষক দিনেশ থাপা মাগারের ভুলে গোল খেয়ে বসে মানাং মার্সিয়াংদি। ডান প্রান্ত দিয়ে আজম মোহাম্মদের জোরালো শট ধরতে গেলে দিনেশের হাত ফসকে বেরিয়ে যায়। সামনেই দাঁড়ানো সুযোগসন্ধানী নাফিউয়ের বুকে লেগে বল ঢোকে জালে। বাকি সময়ে গোল শোধের চেষ্টা করেও আর পারেনি নেপালি দলটি।
টিসির কোচ নিজাম সারাক্ষণ তাঁর দলের খেলোয়াড়দের প্রশংসাই করে গেলেন, ‘নেপালের জাতীয় দলের আটজন খেলোয়াড় ওই দলে। তারপরও আমি আমার তরুণ তারকাদেরই প্রশংসা করব। ওদের বলেছিলাম, নিজেদের প্রমাণের এটাই সুযোগ। ওরা সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েছে।’
সেমিফাইনালে এভাবে হেরে যাওয়ায় ভীষণ হতাশ মানাংয়ের কোচ চিরিং লপসাং গুরুং, ‘আসলে আমার ছেলেরা ভালোই খেলেছে আজ। ওটা ছিল গোলরক্ষকের হাস্যকর ভুল। পুরো ম্যাচেই ফিফটি ফিফটি সম্ভাবনা ছিল দুই দলের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভাগ্যটা আমাদের সহায় হলো না। আসলে ফুটবল এমনই। কখনো কখনো ফুটবলে একটা ছোট ভুলের মূল্য দিতে হয় এভাবেই।’