আইসিসি চেয়ারম্যানের ক্ষমতা ছেঁটে ফেলতে চায় ভারত

আইসিসির বিদায়ী চেয়ারম্যান শশাঙ্ক মনোহর। ফাইল ছবি
আইসিসির বিদায়ী চেয়ারম্যান শশাঙ্ক মনোহর। ফাইল ছবি

নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হওয়ার অনেক আগেই পদত্যাগ করেছেন আইসিসির চেয়ারম্যান শশাঙ্ক মনোহর। নতুন চেয়ারম্যান হবেন কে, সেটা নিয়ে কৌতূহল ক্রিকেট বিশ্বের। তবে সদ্য বিদায়ী আইসিসি প্রধানের সঙ্গে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) এতটাই তিক্ত অভিজ্ঞতা, তারা হয়তো আইসিসির প্রধানকে আর সর্বেসর্বা হিসেবে দেখতে চায় না। আইসিসি চেয়ারম্যানের ক্ষমতা পুনর্মূল্যায়নের দাবি তুলেছে বিসিসিআই। নতুন প্রস্তাবে চেয়ারম্যানের প্রায় অনেক ক্ষমতাই কেড়ে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। 

২০১৫ সালের নভেম্বরে ভারতীয় বোর্ডের সভাপতি হওয়ায় পদাধিকারবলে আইসিসি প্রধানের দায়িত্বটা পেয়েছিলেন মনোহর। গত বছর মে মাসে নির্বাচিত হন আইসিসির প্রথম স্বাধীন চেয়ারম্যান হিসেবে। একজন ভারতীয় হয়েও আইসিসিতে ভারতের আধিপত্য কমাতে মনোহরের ভূমিকা ছিল বলার মতোই। তিন মোড়লের একচ্ছত্র আধিপত্য ও লাভের ভাটবাঁটোয়ারার সিংহভাগ ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের নিয়ে যাওয়ার বিরুদ্ধে প্রথম থেকে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছিলেন। এও নিয়ম করে দিয়েছিলেন, আইসিসির প্রধান হবেন পুরোপুরি স্বাধীন, কোনো দেশের বোর্ডের কেউ নন। আইসিসি চেয়ারম্যান হলে বোর্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ততা ছিন্ন করতে হবে। এতে কোনো কোনো বোর্ডের প্রতি তাঁর আনুগত্য সরাসরি থাকবে না।

মনোহরের পদক্ষেপগুলো যে বিসিসিআইয়ের পছন্দ হয়নি, সেটি দিবালোকের মতোই পরিষ্কার। এখন বিসিসিআইয়ের দাবি, গোপন ভোটের মাধ্যমে আর আইসিসির চেয়ারম্যান নির্বাচন নয়। যদি একজন চেয়ারম্যান তাঁর মেয়াদ পূর্ণ করতে ব্যর্থ হন, তবে অসমাপ্ত সময়টার জন্য নতুন কাউকে দায়িত্ব দিতে হবে। ওই সময় নতুন করে কাউকে পূর্ণ মেয়াদে (২ বছর) দায়িত্ব দেওয়া যাবে না। চেয়ারম্যান পূর্ণকালীন কিংবা ভারপ্রাপ্ত হন, আইসিসি বোর্ড মিটিংয়ে তাঁর ভোটাধিকার থাকবে না।
প্রধান নির্বাহী (সিইও) আইসিসি বোর্ডকে রিপোর্ট করবে, চেয়ারম্যানকে নয়। সিইও এবং আইসিসি বোর্ডকে মূল্যায়ন করবে স্বাধীন বর্ধিত এক কমিটি। এই কমিটিতে থাকবেন সিনিয়র কর্মীরা, যাঁরা কাজের ভিত্তিতে পাবেন মোটা অঙ্কের পারিশ্রমিক। চেয়ারম্যান কোনো বিশেষ বৈঠক বা বৈঠকের স্থান ঠিক করতে পারবেন না। শুধু আইসিসি বোর্ডই এটা করতে পারবে।

প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোতে বেশ কিছু বড় পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে দুবাইয়ে হয়েছিল আইসিসির সভা। পাশাপাশি তিন সংস্করণের ক্রিকেটকেই আরও আকর্ষণীয় করার জন্য বেশ কিছু পরিবর্তনের প্রস্তাব আনা হয়েছে। বেশির ভাগ পরিবর্তনের পক্ষেই নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে আরও পরিমার্জনার পর সেগুলো আগামী ২৩ এপ্রিলে আইসিসির পরবর্তী সভায় চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায়। মনোহরের বিদায়ের পর এগুলোর কটি আলোর মুখ দেখবে, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়।