'বাংলাদেশ বিশ্বকাপ জিতবে'

বাংলাদেশের ক্রিকেটের এক সুহৃদ। ফাইল ছবি
বাংলাদেশের ক্রিকেটের এক সুহৃদ। ফাইল ছবি

আশির দশকে ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে খেলেছেন। বিশ্বকাপ জেতার পরেও খেলে গেছেন ঢাকার ঘরোয়া ক্রিকেটে। বাংলাদেশের ক্রিকেটের সুহৃদ হিসেবেই পরিচিত। নিয়মিত খোঁজখবর রাখেন। আনন্দিত হন বাংলাদেশের ক্রিকেটের যেকোনো সাফল্যে। শ্রীলঙ্কার সাবেক অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গা মনেপ্রাণেই বিশ্বাস করেন, ২০২৩ বিশ্বকাপ জয়ের দারুণ সম্ভাবনা বাংলাদেশের আছে।

কলম্বোতে আজ বাংলাদেশের সাংবাদিকদের সঙ্গে বেশ জমিয়ে আলাপ করেছেন রানাতুঙ্গা। বলেছেন, বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নতিটা তাঁর চোখে খুব স্পষ্টই। ২০২৩ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সম্ভাবনা দেখেন আসরটি উপমহাদেশে আয়োজিত হবে বলেই, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেট উন্নতি করছে। যথেষ্ট প্রতিভাবান ক্রিকেটার আছে বাংলাদেশের। আমি বিশ্বাস করি, ২০২৩ সালে বাংলাদেশ বিশ্বকাপ জিততে পারে।’
বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নতিতে নিজেদের অবদানও দেখেন রানাতুঙ্গা, ‘আশির দশকের শেষ দিকে অনেক শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটার ঢাকার ক্লাবগুলোতে খেলত। বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নতিতে অবশ্যই লঙ্কান ক্রিকেটের অবদান আছে।’
ঢাকায় মোহামেডানে খেলেছেন। ঢাকার ক্রিকেটের স্মৃতি রোমন্থনও করলেন তিনি, ‘মনে আছে, আমরা যখন ঢাকায় খেলেছি, আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে প্রচুর দর্শক হতো। ৩০-৩৫ হাজার দর্শককে ঠাসা থাকত স্টেডিয়াম। ঢাকায় আমরা খুব সম্মানের সঙ্গে খেলেছি। সবার ভালোবাসা পেয়েছি।’
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের টেস্ট জয়ে খুব অবাক হননি রানাতুঙ্গা, ‘শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটের যে অবস্থা, তারা যে একদিন বাংলাদেশের কাছে হারবে, এ কথা আমি আগেই বলেছিলাম। বাংলাদেশ দুর্দান্ত খেলেই ম্যাচটা জিতেছে। বিশেষ করে গল টেস্টে বাজেভাবে হারার পর বাংলাদেশ কলম্বোয় যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, সেটা দারুণ। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের টেকনিক খুব ভালো। তাদের সমস্যাটা মানসিক। আশা করি, সেটা তারা কাটিয়ে উঠবে।’
ক্রিকেট থেকে আপাতত দূরেই আছেন রানাতুঙ্গা। গত বছর শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের নির্বাচনে সহসভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান। তবে মন্ত্রী হিসেবে রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারক হিসেবে কাজ করছেন। এই মুহূর্তে শ্রীলঙ্কার জোট সরকারের বন্দর ও জাহাজ চলাচল মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন। দ্বীপ দেশ হিসেবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়। রানাতুঙ্গা খুশি সরকার তাঁকে এমন একটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছে বলে, ‘আমি যেকোনোভাবেই দেশের সেবা করতে চাই। ক্রিকেট দিয়ে পারলাম না। মন্ত্রী হিসেবে করছি। ভালো লাগছে। আমি খুশি যে শ্রীলঙ্কান সরকার আমাকে এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছে।’
শ্রীলঙ্কাকে বিশ্বকাপ জেতানো তাঁর জীবনের স্মরণীয় অভিজ্ঞতা। নিজের অধিনায়কত্বের স্মৃতিও তাঁর কাছে অনন্য। জানালেন, অধিনায়ক হিসেবে তাঁর একমাত্র লক্ষ্য ছিল, খেলোয়াড়দের সুরক্ষা দেওয়া, ‘আমি খেলোয়াড়দের সুরক্ষা দিতে চেয়েছি সব সময়। অর্থের পেছনে ছুটিনি কখনোই।’
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খুবই অপছন্দ তাঁর। এ ধরনের ক্রিকেটের একটা নামও দিয়েছেন তিনি—দুই মিনিটের নুডলস। ২০ ওভারের ক্রিকেটকে এর চেয়ে বেশি কিছু মনে করেন না তিনি, ‘টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট কোনো খেলাই নয়। এতে টেকনিকের কিছুই নেই। এটা ইনস্ট্যান্ট নুডলসের মতো। প্যাকেট খুলে রান্না করে খেয়ে ফেলার মতোই। টেস্ট ক্রিকেট হচ্ছে মায়ের হাতের রান্না। এটাই আসল ক্রিকেট।’