পাওয়া না-পাওয়ার গল্প

স্মরণীয় এক সফর শেষে কাল দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ দল। শ্রীলঙ্কা থেকে অনেক আনন্দদায়ী স্মৃতি নিয়ে ফিরলেন মুশফিক-মোস্তাফিজরা। শ্রীলঙ্কার মাটিতে বাংলাদেশ পেয়েছে শততম টেস্টে জয়। টেস্ট, ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি—তিনটি সিরিজই শেষ হয়েছে ১-১ সমতায়। এই প্রথম কোনো পূর্ণাঙ্গ সফরের তিন সংস্করণের সিরিজেই অপরাজিত বাংলাদেশ। কাল শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শ্রীলঙ্কা সফরের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির খেরোখাতা খুললেন মুশফিক-ইমরুলরা—
মুশফিকের অর্জন
এই বছর আমাদের বেশির ভাগ খেলা বিদেশের মাটিতে। শুরুতেই লক্ষ্য ছিল বিদেশের মাটিতে যেন ভালো খেলতে পারি। শ্রীলঙ্কায় প্রথম টেস্টে খারাপ করলেও পরের ম্যাচে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছি, যেটা অবিশ্বাস্য! এমন চাপে দল আগে খেলেছে কি না জানা নেই। সিনিয়র-জুনিয়র খেলোয়াড়েরা যা করেছে, তা বিরাট অর্জন। এটা দরকারও ছিল। সবাইকে দেখিয়ে দেওয়া হলো বাংলাদেশ দেশের বাইরেও টেস্টে ভালো খেলে। এটা আমাদের জন্য সহজ ছিল না। নিশ্চয়ই জানেন, শ্রীলঙ্কার মাটিতে শ্রীলঙ্কাকে হারানো অনেক কঠিন।
ইমরুলের সৌভাগ্য-দুর্ভাগ্য
আমাদের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল সফরটা। প্রথম টেস্টে হারার পর সিরিজের পরের টেস্টেই ঘুরে দাঁড়িয়েছি। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে ভালো খেলেছি। সর্বশেষ টি-টোয়েন্টিটা আমার অনেক ভালো গেছে। যদিও এই ম্যাচ খেলব কি না আগে থেকে জানতাম না। তামিম (ইকবাল) চোটে পড়ায় সুযোগ পেয়েছি। শততম টেস্টেও আমার হঠাৎ সুযোগ পাওয়া। একদিক দিয়ে আমি সৌভাগ্যবান। যে দুটি ম্যাচ খেলেছি দুটিতেই জিতেছি। আর দুর্ভাগ্য, ওয়ানডে সিরিজটা খেলতে পারিনি।
সৌম্যর আফসোস
আরও লম্বা ইনিংস যদি খেলতে পারতাম, তাহলে নিজের কাছেও অনেক ভালো লাগত। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ফিফটি করার সুযোগ ছিল, সেটা কাজে লাগাতে পারিনি। সব সময়ই বড় ইনিংস খেলার আলাদা একটা তৃপ্তি কাজ করে। আমি চেষ্টা করেছি, হয়তো কোনো ঘাটতি ছিল বলে হয়নি। টেস্টে দেখা গেছে ৫০-৬০, টি-টোয়েন্টিতে ৩০-৩৫ রান করে আউট হয়েছি। ইনিংসগুলো যদি আরও বড় হতো, আমার ও দলের জন্য ভালো হতো। সিরিজে আমরা আরও ভালো অবস্থানে থাকতে পারতাম।
মোস্তাফিজের তৃপ্তি-অতৃপ্তি
মাত্রই ফিরলাম। সামনে আইপিএল (ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ)। সেখানে কবে যাব এখনো ঠিক হয়নি। আপাতত কদিন সাতক্ষীরায় নিজ বাড়িতে বিশ্রামের পরিকল্পনা। আর নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে আমি মোটামুটি সন্তুষ্ট। চোটের পর প্রথম সফরের প্রতিটি ম্যাচ খেলেছি, আল্লাহর রহমতে ভালোই গেছে।
আবেগময় মিরাজ
মাশরাফি ভাইয়ের বিদায়ের দিন আমার টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয়েছে। ক্যাপটা তাঁর কাছ থেকেই নিয়েছি। ওই মুহূর্তে কান্না পেয়ে গিয়েছিল। মাঠে থাকায় কাঁদতে পারিনি। টি-টোয়েন্টিতে মাশরাফি ভাইকে অনেক মিস করব। তিনি আমাদের অনেক সাহায্য করেন। ওই ম্যাচেও আমাকে নানাভাবে উৎসাহ দিয়েছেন। সিনিয়র খেলোয়াড়দের অনেকে তাঁর সঙ্গে আট-নয় বছর ধরে খেলছেন। আমি মাত্র ছয়-সাত মাস খেলছি। আমারই যদি এত খারাপ লাগে, সিনিয়রদের কেমন লেগেছে বুঝুন!
সামনে তাকিয়ে সাব্বির
তিনটা সিরিজই আমরা ড্র করেছি, এটা অনেক বড় অর্জন। ইতিবাচক দিক হচ্ছে, দুটি সিরিজ (টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি) আমরা পিছিয়ে থেকে সমতা এনেছি। নিজের পারফরম্যান্স অবশ্য খুব একটা ভালো হয়নি। তবে চেষ্টা করেছি দলে অবদান রাখতে। মাশরাফি ভাইয়ের টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণায় মনটা ভীষণ খারাপ ছিল। ওয়ানডেতে তিনি তো আছেনই। সামনে আবার একসঙ্গে খেলব ইনশা আল্লাহ।