আর কোনো রূপকথা নয়!

ন্যু ক্যাম্পে এসেও নতজানু হয়নি জুভেন্টাস। বার্সাকে রুখে দিয়ে উঠে গেছে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিতে। এমন উচ্ছ্বাস তো বুফন-বোনুচ্চিদেরই মানায় l এএফপি
ন্যু ক্যাম্পে এসেও নতজানু হয়নি জুভেন্টাস। বার্সাকে রুখে দিয়ে উঠে গেছে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিতে। এমন উচ্ছ্বাস তো বুফন-বোনুচ্চিদেরই মানায় l এএফপি

যোগ করা সময় শুরু হতেই ধারাভাষ্যকারের মন্তব্য, ‘তিন মিনিট, তিন গোলের জন্য!’

পরশু রাতটা কোনো রূপকথার অংশ হলে হয়তো তা-ই হতো। শেষ মুহূর্তের তিন গোলে ম্যাচটা অতিরিক্ত সময়ে নিয়ে যেত বার্সেলোনা। কিন্তু জুভেন্টাস ডাগআউটে দিবালা, হিগুয়েইনদের উল্লাসই বুঝিয়ে দিচ্ছিল বাস্তবতা। নিজেদের মাঠে গোলশূন্য ড্র (দুই লেগ মিলিয়ে ৩-০ ব্যবধানে হার) করে টানা দ্বিতীয়বারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালেই শেষ হয়েছে বার্সেলোনার চ্যাম্পিয়নস লিগ।

শেষ বাঁশি বাজার আগের ন্যু ক্যাম্প ভুল বোঝাতে পারত। গান গেয়ে, পতাকা উড়িয়ে নেইমার-পিকেদের সর্বস্ব নিংড়ে দেওয়ার চেষ্টাকে স্বীকৃতি দিয়েছেন সমর্থকেরা। হতাশার এক রাতে এটাকেই প্রাপ্তি ধরে নিচ্ছেন কোচ লুইস এনরিকে, ‘এটা এমন এক দল, যেটি হাল ছাড়ে না। এমন ক্লাবে থাকতে পারাটা আনন্দের।’ জুভেন্টাস যে তাঁর আর কোনো সান্ত্বনা পাওয়ার সুযোগ রাখেনি!

দেড় মাস আগেই এক ফুটবলীয় রূপকথা লিখেছিল বার্সেলোনা। প্রথম লেগে ৪-০ গোলে হারার পর ন্যু ক্যাম্পে দ্বিতীয় লেগে প্যারিস সেন্ট জার্মেইকে ৬-১ গোলে হারিয়ে উঠে গিয়েছিল কোয়ার্টার ফাইনালে। সে তুলনায় পরশুর কাজটা ‘সহজ’ ছিল। চারটি গোল করলেই চলত মেসিদের। কিন্তু পিএসজি আর জুভেন্টাস যে এক কথা নয়, সেটি ভালোই বুঝতে পারলেন মেসি-নেইমাররা। জুভেন্টাসের জমাট রক্ষণ আর বার্সার বিখ্যাত আক্রমণভাগের বাজে পারফরম্যান্সে নিশ্চিত হয়ে যায় নতুন কোনো রূপকথা আর লেখা হচ্ছে না।

প্রতিপক্ষের শক্তির জায়গাটা সবচেয়ে ভালো বলেছেন বার্সা ডিফেন্ডার জেরার্ড পিকে, ‘ওরা ইতালিয়ান, ওরা জানে কীভাবে রক্ষণ সামলাতে হয়। এ ব্যাপারে ওরা বিশেষজ্ঞ। ওরা নিজেদের ধারার ফুটবল খেলতে এসেছিল এবং খুব ভালোভাবে সেটা করেছে। ওরা তো (রক্ষণকে) পর্বত বানিয়ে রেখেছিল!’ জুভেন্টাস কোচ ম্যাসিমিলিয়ানো অ্যালেগ্রিও দলের রক্ষণভাগ নিয়ে উচ্ছ্বসিত, ‘ওরা তুরিনে আজকের চেয়ে বেশি সুযোগ পেয়েছিল। আজ রক্ষণে আমরা খুব ভালো করেছি। বারজাল্লি নামার পর মনে হচ্ছিল সারাদিন খেললেও কোনো গোল হবে না। বার্সেলোনার বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচে গোল না খাওয়াই তো বলে দিচ্ছে, ট্যাকটিক্যালি এই দলটা কত ভালো।’

ম্যাচে জুভেন্টাস শুধু রক্ষণেই ব্যস্ত ছিল না। পিকের হস্তক্ষেপ (যদিও পা-ই ব্যবহার করেছেন) না হলে, কুয়াদ্রোদো তো ১৬ মিনিটে হিগুয়েইনকে দিয়ে গোল করিয়েই ফেলেছিলেন প্রায়। পাল্টা আক্রমণে বারবার বার্সা রক্ষণে আতঙ্ক ছড়িয়েছে জুভেন্টাস। পিকের কণ্ঠে তাই স্বভাববিরুদ্ধ স্বীকারোক্তি, ‘ওরা যোগ্য দল হিসেবেই সেমিফাইনালে যাচ্ছে। শুভকামনা রইল, কারণ ওরা এ প্রতিযোগিতা জিততে পারে।’ জুভ ডিফেন্ডার লিওনার্দো বোনুচ্চিও তাই হুংকার ছুড়ছেন, ‘আমরা কাকে পেতে চাই না, এটা এখন আলোচ্য নয়, কারণ অন্য কোনো দলই এখন আমাদের সঙ্গে খেলতে চাইবে না। জুভেন্টাস সবার মধ্যে ভয় সৃষ্টি করছে।’

এই জুভেন্টাসকে ভয় না পাওয়াটা বোকামিই! এএফপি, রয়টার্স, মার্কা।

সেমিফাইনালের চার দল

অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ

জুভেন্টাস

মোনাকো

* আজ বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায় সেমিফাইনালের ড্র