নতুন প্রতিজ্ঞা নিয়ে নাসির

নাসির (ডানে) অবশেষে আয়ারল্যান্ড সফরে বাংলাদেশের ওয়ানডে দলে ডাক পেয়েছেন। তবে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের আরেক উপেক্ষিত ক্রিকেটার মুমিনুলের অপেক্ষা শেষ হয়নি। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে কাল লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে ম্যাচে, বিকেএসপিতে l প্রথম আলো
নাসির (ডানে) অবশেষে আয়ারল্যান্ড সফরে বাংলাদেশের ওয়ানডে দলে ডাক পেয়েছেন। তবে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের আরেক উপেক্ষিত ক্রিকেটার মুমিনুলের অপেক্ষা শেষ হয়নি। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে কাল লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে ম্যাচে, বিকেএসপিতে l প্রথম আলো

নাসির হোসেন কি এই ডাকটার জন্যই অপেক্ষা করছিলেন? জাতীয় দলের সঙ্গে দূরত্ব সুদূরে চলে যাওয়ার আগেই আসতে হবে ফিরে। আর একটিবার দেখাতে হবে ‘এন-৬৯’ এর জাদু। তাহলেই আবার সব শুরু করা যাবে নতুনভাবে!
না, নাসির এভাবে ভাবেননি। এ রকম কোনো ডাকের অপেক্ষায়ও ছিলেন না। তাঁর মাথায় ঘুরছিল শুধু কিছু সংখ্যা। ৮০০, ৯০০, ১০০০...। প্রিমিয়ার লিগে সর্বোচ্চ রান করতে হবে। আয়ারল্যান্ড সিরিজের দলে সুযোগ পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায়ও কাল এই প্রতিজ্ঞার কথাই এল আগে, ‘আমি আসলে এ রকম কোনো কিছুর জন্যই অপেক্ষা করছিলাম না। প্রিমিয়ার লিগে পারফর্ম করতে হবে, এটাই একমাত্র চিন্তা ছিল। টার্গেট করেছিলাম অন্তত ৮০০ রান করব। পারলে আরও বেশি। ভালো খেললে সুযোগ এমনিতেই আসবে।’
ছয় মাস পর সেই সুযোগ এল অবশেষে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গত অক্টোবরে সর্বশেষ ওয়ানডে খেলা নাসির ২০১৬ সালে সব মিলিয়ে মাত্র চারটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। তাঁকে দলে নিতে কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের অনীহাও এর পেছনের একটা কারণ বলে ফিসফাস আছে। নাসিরের জন্য লড়াইটা তাই শুধু দলে ফেরার নয়, জায়গা ধরে রাখারও। সাব্বির, মোসাদ্দেক, মিরাজদের ধারাবাহিক পারফরম্যান্সে কাজটা এখন আগের চেয়ে কঠিন। তবে নাসির সেটিকে সহজ সমীকরণেই ফেলছেন, ‘জাতীয় দলে খেলা, জায়গা ধরে রাখা সব সময়ই কঠিন। ভালো খেলার বিকল্প কিছু নেই। কে কেমন খেলল ভেবে লাভ নেই। নিজের খেলাটাই আসল।’
আয়ারল্যান্ডের তিন জাতি সিরিজের দলে থাকলেও সুযোগ পাননি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ১৫ জনে। এ নিয়ে দৃশ্যত কোনো আক্ষেপ নেই নাসিরের মধ্যে। তাঁর চোখ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ছাড়িয়ে আরও দূরে, ‘চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে না থাকি, আয়ারল্যান্ডে ভালো খেললে নিশ্চয়ই পরের সিরিজগুলোতে সুযোগ পাব। সামনে তো বাংলাদেশের অনেক খেলা।’
খেলা গত কয়েক মাসে কমও হয়নি। নিউজিল্যান্ড সফর, ভারতে প্রথম টেস্ট, শ্রীলঙ্কা সফর—তিনটি সিরিজই প্রায় পিঠাপিঠি হয়ে গেল। এর মধ্যে ইতিহাসে ঢুকে যাওয়া কিছু মুহূর্তও এসেছে। কলম্বোয় নিজেদের শততম টেস্টে জয়, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিনটি সিরিজেই ড্র, নিউজিল্যান্ডে দলের ভালো পারফরম্যান্স—সব মিলিয়ে অনেক কিছুরই সাক্ষী হতে পারেননি নাসির। তবে তাঁর বেশি আফসোস শততম টেস্ট নিয়েই, ‘জাতীয় দলে না থাকাটাই একটা মিস। তবে শততম টেস্টে দলের সঙ্গে মাঠে থাকতে পারলে অনেক বেশি ভালো লাগত।’
দলের বাইরে থেকে এই কয় মাসে একটা অর্জনও আছে তাঁর। অর্জন মানে উপলব্ধি। নাসির এখন জানেন, ‘জাতীয় দলে থাকতে হলে ভালো খেলতে হবে। ভালো খেললে আমাকে বাদ দেবে কে?’
নাসিরের প্রশ্নটা কার উদ্দেশে?