হতে চেয়েছিলেন পুলিশ কনস্টেবল, হয়েছেন বোলিং তারকা

এখনো বাবার আশীর্বাদ নিয়ে চলেন উমেশ যাদব। ফাইল ছবি
এখনো বাবার আশীর্বাদ নিয়ে চলেন উমেশ যাদব। ফাইল ছবি

বাবা ছিলেন খনিশ্রমিক। কিন্তু চাননি ছেলে উমেশ যাদব হাঁটুক তাঁর পথে। আবার ছেলেকে ক্রিকেটার বানানোর স্বপ্নও তিনি দেখেননি। কিন্তু সময় যে ছক মেনে এগোয় না। সময়ের স্রোত উমেশকে পৌঁছে দিয়েছে সাফল্যের মোহনায়। সেই সাফল্যটা এসেছে ক্রিকেটের হাত ধরে। আর উমেশের উঠে আসার এই গল্পটা আপনাকে আবেগে ভাসাবে, জোগাবে প্রেরণা।
উমেশের জন্ম নাগপুরে। বড় হয়েছেন খনিশ্রমিকদের জন্য বরাদ্দ এলাকায়। পড়াশোনা করেননি খুব বেশি, পড়েছেন দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত। বাবা চাননি ছেলেও খনির শ্রমিক হোক। খনিতে যে দেয় শ্রম, তারে দেখে ডরায় জম। আর তাই ভাগ্য বদলাতে উমেশ যোগ দিতে চেয়েছিলেন সেনাবাহিনীতে। চাকরিটা হয়নি। পরে চেষ্টা করেন পুলিশে ঢোকার। অল্পের জন্য কনস্টেবলের চাকরিটাও হয়নি।

যখন কিছুতেই ভাগ্য পরিবর্তন হচ্ছিল না, উমেশের সময় কাটছিল টেনিস বলে ক্রিকেট খেলে। টেনিস বলেই দারুণ গতিতে বোলিং করতেন। এ সময় একটা কলেজের হয়েও খেলার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ক্লাব ক্রিকেটে কোনো অভিজ্ঞতা না থাকায় তাঁকে নিতে চায়নি ক্লাবটি। পরে তাঁকে নেয় বিদর্ভ জিমখানা। এই দলের হয়ে পেসার উমেশ এক ম্যাচে স্পাইক ছাড়া জুতা পরে বোলিং করেন, পান ৩৭ রানে ৩ উইকেট। তাঁর গতির কথা ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। উমেশকে পেতে আগ্রহী উঠল অন্য দল। দুই মৌসুমের মধ্যে ক্রিকেটের আসল বল হাতে তোলার সুযোগ হলো তাঁর। উমেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক ২০০৮ সালের নভেম্বরে। দীলিপ ট্রফিতে বোলিং করলেন রাহুল দ্রাবিড় ও ভিভিএস লক্ষ্মণের বিপক্ষে।
আর পেছনে তাকাতে হয়নি। ওই বছর আইপিএলের দল দিল্লি ডেয়ারডেভিলস উমেশকে নিয়ে নিল ৩০ হাজার ডলারে। ২০১০ সালে হয়ে গেল ওয়ানডে অভিষেক। ২০১১ সালে পা দিলেন টেস্ট আঙিনায়। ৩১ টেস্ট, ৭০ ওয়ানডে ও ১ টি-টোয়েন্টি খেলা উমেশ এখন ভারতের পেস বোলিং আক্রমণের অন্যতম ভরসা। জীবনের স্রোত মানুষকে কোথা থেকে কোন মোহনায় এনে ফেলে!