ব্রডের বোথাম-রোমাঞ্চ

একই ফ্রেমে ব্রড ও বোথাম l ফাইল ছবি
একই ফ্রেমে ব্রড ও বোথাম l ফাইল ছবি

গত বছরের জানুয়ারির ঘটনা। ১৭ রানে ৬ উইকেট নিয়ে জোহানেসবার্গ টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় ইনিংস গুঁড়িয়ে দিয়েছিলেন স্টুয়ার্ট ব্রড। এই ফাস্ট বোলারকে নিয়ে অনেক আগে থেকেই মুগ্ধ ইয়ান বোথাম। সেদিনের সেই পারফরম্যান্সের পর ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি অলরাউন্ডার বলেছিলেন, ইংল্যান্ডের উপহার দেওয়া সবচেয়ে সেরা বোলার ব্রড! সেই ব্রড এখন টেস্ট উইকেট শিকারে বোথামকেই ছাড়িয়ে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে।

৩৮৩ উইকেট নিয়ে লম্বা সময় টেস্টে ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি ছিলেন বোথাম। ২০১৫ সালের এপ্রিলের মাঝামাঝি তাঁকে ছাড়িয়ে যান জেমস অ্যান্ডারসন। ইংল্যান্ডের প্রথম বোলার হিসেবে টেস্টে ৫০০ উইকেট পেতে এই ফাস্ট বোলারের আর মাত্র ১৩ উইকেটের অপেক্ষা। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শুরু হতে যাওয়া তিন টেস্টের সিরিজেই সেই অপেক্ষা ফুরাতে পারে অ্যান্ডারসনের। ব্রডের উইকেট এখন ৩৭৯টি। বোথামকে ছাড়িয়ে যাওয়ার রোমাঞ্চ তাঁকে ছুঁতে পারে এজবাস্টনে প্রথম টেস্টেই। দুই বছর আগে অ্যান্টিগায় এই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই বোথামকে ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন অ্যান্ডারসন।

বোথামকে ছাড়িয়ে গেলে ব্রডের কাছে সেটি হবে অন্য রকম এক অনুভূতি। সেই ছোটবেলা থেকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন ইংলিশ কিংবদন্তিকে। বোথাম আর তাঁর বাবা ক্রিস ব্রড খেলেছেন একসঙ্গে। ব্রড আর বোথাম পরিবারের মধ্যে খুব ভালো বন্ধুত্বও ছিল। ব্রডের মা তো ছিলেন বোথামের বড় ভক্ত। সব মিলিয়ে ক্রিকেট ক্যারিয়ারে ব্রডের কাছে বড় এক অনুপ্রেরণা বোথাম। তাঁর কীর্তি ছাড়িয়ে যাওয়ার আগে ছোটবেলার সেই দিনগুলো মনে পড়ছে ব্রডের, ‘বোথামের বোলিং সরাসরি আমি প্রথম দেখেছি ১৯৯২ বিশ্বকাপে। আমার বয়স তখন ৬। পরে অবশ্য তাঁর সত্তর ও আশির দশকের বোলিংয়ের ফুটেজ দেখেছি। গতির সঙ্গে দুই দিকেই বল সুইং করাতেন। তাঁর পাওয়া উইকেটের কাছাকাছি আসতে পারাটা আমার কাছে গর্বের।’

স্মৃতিকাতর ব্রড দুই পরিবারের ঘনিষ্ঠতার বিষয়টিও তুলে এনেছেন, ‘আমার বাবা বিফির (বোথাম) সঙ্গে খেলেছেন। আর আমার মার তো তাঁর প্রতি অন্য রকম একটা আবেগ ছিল। এর কারণও আছে। ইসিবি গঠনের আগে সফর চলার সময় খেলোয়াড়দের দেখভাল করত পিসিএ (প্রফেশনাল ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশন)। খেলোয়াড়দের পরিবারগুলোর মধ্যে দৃঢ় বন্ধন বজায় রাখতে বিফি আর তাঁর স্ত্রী ভালো ভূমিকা রেখেছিলেন। তিনি ছিলেন বিনয়ী এবং একজন চ্যাম্পিয়ন।’

২০১৫ সালের অ্যাশেজের উদাহরণ টেনে বোথামকে বড় এক প্রেরণাদায়ী চরিত্র হিসেবে চিত্রিত করেছেন ব্রড, ‘২০১৫ সালের অ্যাশেজের কার্ডিফ টেস্টের আগে তিনি আমাদের ড্রেসিংরুমে এসেছিলেন। ছেলেরা যাতে ভালো করতে পারে, সেটি নিয়ে তিনি কতটা উন্মুখ ছিলেন, তা বলে বোঝানো যাবে না। অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে পারলে ইংল্যান্ডে আপনি সম্মান পাবেন। তাঁর পরিসংখ্যানই বলে এটা কীভাবে সম্ভব সেটা তিনি ভালোই জানেন।’ মেইল অনলাইন।