মেসি-রোনালদোকে টপকে ১৯ বছরেই সবচেয়ে ধনী ফুটবলার!

ব্রুনেই জাতীয় দলেও খেলছেন ফাইক বোলকিয়াহ। ছবি: মিরর
ব্রুনেই জাতীয় দলেও খেলছেন ফাইক বোলকিয়াহ। ছবি: মিরর

শিরোনামটাই অদ্ভুতুড়ে। মেসি-রোনালদোর চেয়ে ধনী ফুটবলার হতে পারে? আয়তাকার সবুজ গালিচার কি ভেতরে, কি বাইরে তাঁদের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই চলছে। ভেতরের লড়াইয়ে দুজন শেষ কথা হলেও মাঠের বাইরে মানে, বিত্তের পাহাড়-পর্বত গড়ায় কিন্তু তাঁরা ফাইক বোলকিয়াহ থেকে পিছিয়ে!

ফাইক বোলকিয়াহ? ভাবছেন এ আবার কে! ফুটবলার হিসেবে তাঁর পরিচিতিটা মেসি-রোনালদো দূরে থাক, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের গণ্ডিতেও আসেনি। লেস্টার সিটির অনূর্ধ্ব-২৩ একাডেমি দলে খেলছেন ১৯ বছর বয়সী এ মিডফিল্ডার। ছিলেন আর্সেনাল ও চেলসির বয়সভিত্তিক দলেও। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে এখনো অভিষেক ঘটেনি। কিন্তু তাতে কী? পারিবারিক সম্পদের ‘পর্বত’ নিয়ে ফুটবলার বনে গেলে সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হতে আর কী লাগে!

‘ফোর্বস’-এর সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, ২৫ কোটি পাউন্ড মূল্যের সম্পদের পাহাড় নিয়ে রোনালদোই বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ফুটবলার। মেসির সম্পদের পাহাড়ের উচ্চতা তাঁর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে ২ কোটি পাউন্ড পিছিয়ে। কিন্তু ফাইক বোলকিয়াহর পারিবারিক সম্পদের হিসাবটা দুই অঙ্কে নয়, চার অঙ্কে! তাঁর পারিবারিক সম্পদের পাহাড় নয়, ‘পর্বতে’র উচ্চতা ২ হাজার কোটি ডলার!

ভাবছেন এই ‘পারিবারিক’ ব্যাপারটা আসলে কী? ফাইক ব্রুনেইয়ের সুলতান হাসানান বোলকিয়াহর ভাতিজা। ফাইকের বাবা প্রিন্স জেফ্রি বোলকিয়াহ ব্রুনেই বিনিয়োগ এজেন্সির প্রধান হিসেবে গত ১৫ বছরে ঢেলেছেন প্রায় ১ হাজার কোটি পাউন্ড। ব্রুনেই রাজপরিবারের এ সদস্য ভীষণ বিলাসবহুল জীবনযাপনে অভ্যস্ত। গাড়ি, ঘড়ি আর সোনার কলম কিনতেই মাসে তাঁর খরচ হয় প্রায় সাড়ে তিন কোটি পাউন্ড।

বাড়িতে বাঘ পোষেন ফাইক। অবসরে ফুটবলও খেলেন বাঘের সঙ্গে। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
বাড়িতে বাঘ পোষেন ফাইক। অবসরে ফুটবলও খেলেন বাঘের সঙ্গে। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ফাইকের বাবার গাড়িসংখ্যা প্রায় ২৩ হাজার! রোলস-রয়েস, ফেরারি, বেন্টলি পড়ে আছে তাঁর গ্যারেজে। শুধু কি তাই? নিজের ৫০তম জন্মদিনে আয়োজন করেছিলেন ব্যক্তিগত কনসার্টের। সে জন্য বানিয়েছিলেন আস্ত একটা স্টেডিয়াম! উড়িয়ে এনেছিলেন পপ তারকা মাইকেল জ্যাকসনকে। সে জন্য জেফ্রির খরচ হয়েছিল ১ কোটি ২৫ লাখ পাউন্ড।

অনেকে হয়তো ভাবছেন, যাঁর বাবার এত সম্পদ তাঁর আবার ফুটবলার হতে হবে কেন? কিন্তু ধনীদেরও তো হৃদয় বলে কিছু থাকে। ফাইক তাঁর হৃদয়ের দাবি শুনেই ফুটবলার হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম হওয়ায় সে দেশের হয়েও খেলার সুযোগ ছিল। কিন্তু ফাইক বেছে নিয়েছেন ব্রুনেই জাতীয় দলকে। কেন ফুটবলার হলেন—এ বিষয়ে তাঁর ভাষ্য, ‘বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে সব সময় ফুটবলারই হতে চেয়েছি। ছোটবেলায় মাঠে গিয়ে ফুটবল খেলতে খুব ভালো লাগত। ফুটবলার হওয়ার স্বপ্নে বাবা-মা সব সময়ই আমাকে সমর্থন দিয়েছেন। এ জন্য ছোটবেলা থেকেই তাঁরা আমাকে খুব কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে বড় করেছেন। তাঁরাই আমার রোল মডেল।’

‘রোল মডেল’ বাবার মতো ফাইক বোলকিয়াহও কিন্তু শখের পূজারি। মেসি-রোনালদোর বাসায় হয়তো বিলাস দ্রব্যের অভাব নেই। কিন্তু তাঁদের বাসায় কি বাঘ আছে? কেউ কি অবসর পেলে পোষা বাঘের সঙ্গে ফুটবল খেলেন? ফাইক বোলকিয়াহ কিন্তু খেলেন!