সেই 'কামড়-কাণ্ড' নিয়ে মুখ খুললেন সুয়ারেজ

গত বিশ্বকাপের সেই ‘কামড়-কাণ্ড’—রেফারির দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন কিয়েলিনি। দাঁত ধরে বসে আছেন সুয়ারেজ। ছবি: টুইটার
গত বিশ্বকাপের সেই ‘কামড়-কাণ্ড’—রেফারির দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন কিয়েলিনি। দাঁত ধরে বসে আছেন সুয়ারেজ। ছবি: টুইটার

গত বিশ্বকাপে ইতালির জর্জো কিয়েলিনিকে ‘ড্রাকুলা’ কায়দায় কামড় বসিয়ে দিয়েছিলেন উরুগুইয়ান ফরোয়ার্ড লুইস সুয়ারেজ। বিশ্ব অবাক হয়ে দেখেছিল এই ‘কামড়-কাণ্ড’। ফলে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন ৯টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ। আরেকটি বিশ্বকাপ আসন্ন। বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড সেই কামড়-কাণ্ড নিয়ে এত দিন পর মুখ খুলেছেন।

সংবাদমাধ্যম প্লেয়ার্স ট্রিবিউন-এ বার্সা সতীর্থ জেরার্ড পিকের কাছে খোলা মনেই সব বলেছেন সুয়ারেজ। ২০১৪ বিশ্বকাপ শুরুর আগে থেকেই সুয়ারেজকে কেনার চেষ্টায় ছিল বার্সেলোনা। ইতালির বিপক্ষে সেই ম্যাচে কামড়-কাণ্ড ঘটানোয় সুয়ারেজের বার্সেলানা-যাত্রাই হুমকির মুখে পড়ে গিয়েছিল। সুয়ারেজ নিজেই নাকি ব্যাপারটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন। তিনি ভেবেছিলেন, তাঁর বার্সায় যোগ দেওয়ার আশা বোধ হয় শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু বার্সেলোনার তরফ থেকে সুয়ারেজ যখন শুনলেন আশা শেষ হয়নি, তখন ঠিক কী মনে হয়েছিল উরুগুয়ে স্ট্রাইকারের?
সুয়ারেজের ভাষ্য, ‘ভেবেছিলাম সব শেষ হয়ে গেছে। সেই ঘটনার কয়েক দিন পর, জুবি (আন্দোনি জুবিজারেতা, বার্সেলোনার তৎকালীন ফুটবল পরিচালক) ও সভাপতির সঙ্গে আমার কথা হয়। তাঁরা আমাকে শান্ত থাকার পরামর্শ দিয়ে বলেছিলেন, বার্সেলোনা এখনো আমার ব্যাপারে আগ্রহী। বলতে কোনো সমস্যা নেই, কথাটা শুনে কেঁদেছি। কারণ যা ঘটিয়েছিলাম, তারপর নিজের ওপর বিশ্বাস রাখাই কঠিন। কিন্তু ওরা (বার্সা) ব্যাপারটা মেনে নিয়েছিল। সত্যি হলো, বার্সা আমার সঙ্গে এ পর্যন্ত দারুণ আচরণ করেছে এবং আমি তাদের প্রতি সব সময় কৃতজ্ঞ থাকব।’
কিয়েলিনির কাঁধে কামড় দিয়ে যে বিপদে পড়তে যাচ্ছেন, সেটি সুয়ারেজ তাৎক্ষণিকভাবেই বুঝতে পেরেছিলেন। সাক্ষাৎকারে তাঁর ভাষ্য, ‘ঘটনার পরপরই বুঝতে পেরেছিলাম। প্রায় ১০ মিনিট পর গোডিন (জয়সূচক) গোলটা করল। আমি কিন্তু বাকিদের মতো সেভাবে উদ্‌যাপন করতে পারিনি। কী ঘটতে পারে, সেটা নিয়ে চিন্তায় ছিলাম।’
ম্যাচ শেষে লকার রুমে (ড্রেসিংরুম) ঢুকেও সবার আগে স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছিলেন সুয়ারেজ, ‘সে বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে ওখানেই ছিল, জিজ্ঞেস করল, তুমি কী কাণ্ডটা ঘটিয়েছ! তখন অন্যান্য সময়ের মতো খুব স্বাভাবিকভাবেই বাস্তবতা মেনে নিতে চাইনি। অস্বীকার করেছি, কেঁদেছি। তবে কিছুক্ষণ পর সবার উদ্‌যাপনে আমিও স্বাভাবিক হয়ে যাই। তবে সবাই নিজেদের ফোনে চোখ রেখেছে, ঘটনাটির প্রতিক্রিয়া কী ঘটতে পারে তা জানার জন্য।’
বার্সা যেমন সুয়ারেজের ওপর আস্থা রেখেছে, তেমনি ৩০ বছর বয়সী ফরোয়ার্ডও সেই আস্থার দারুণ প্রতিদান দিচ্ছেন। লিগে রিয়াল সোসিয়েদাদের মাঠে বার্সার ৪-২ ব্যবধানের জয়ে অবদান রেখেছেন জোড়া গোল করে। বার্সার হয়ে শেষ ৬ ম্যাচে তাঁর গোলসংখ্যা ৮! এবার লিগে সর্বোচ্চ ১৭ গোল করা লিওনেল মেসির চেয়ে মাত্র ৩ গোল ব্যবধানে পিছিয়ে দ্বিতীয় সুয়ারেজ।