৮৬৮ পাস, দুর্বার সিটি

দারুণ ফর্মে রয়েছে শিষ্য। আগুয়েরোকে তাই বুকে টেনে নিলেন গার্দিওলা। ছবি: এএফপি
দারুণ ফর্মে রয়েছে শিষ্য। আগুয়েরোকে তাই বুকে টেনে নিলেন গার্দিওলা। ছবি: এএফপি
  • শেষ ষোলো প্রথম লেগে বাসেলের মাঠে ৪-০ গোলে জিতেছে সিটি।
  • চ্যাম্পিয়নস লিগ নকআউট পর্বে প্রতিপক্ষের মাঠে কোনো ইংলিশ ক্লাবের এটাই সবচেয়ে বড় ব্যবধানের জয়।

সুইস সুপার লিগের চ্যাম্পিয়ন এফসি বাসেলের কাছে ইউরোপিয়ান আসর নতুন কিছু নয়। ১৯৯৯-২০০০ মৌসুম থেকেই ইউরোপের ময়দানে নিয়মিত খেলছে দলটি। সুইজারল্যান্ডের যেকোনো ক্লাবের তুলনায় চ্যাম্পিয়নস লিগে তাঁরা সবচেয়ে বেশিবার খেলেছে। মঙ্গলবার রাতে এই বাসেলকে নিয়েই ম্যানচেস্টার সিটি ছেলেখেলা করেছে তাঁদেরই মাঠে!

চ্যাম্পিয়নস লিগ শেষ ষোলোয় আসলে কোনো দলই দুর্বল নয়। বাসেলের মতো দল তো নয়ই। কিন্তু সেন্ট জ্যাকব পার্কে পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা স্বাগতিকদের বুঝিয়ে দিয়েছেন, চ্যাম্পিয়নস লিগে তাঁদের এখনো অনেক কিছু শেখার আছে। পাসিং ফুটবলের কথাই ধরুন। গোটা ম্যাচে ৭৪ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে মোট ৮৬৮ পাস খেলেছে সিটি। বাসেলের ২৬ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে খেলেছে ২৯৪ পাস। খেলার পরিসংখ্যান থেকেই ম্যাচের ফল সম্পর্কে ধারণা মেলে। প্রথম লেগে বাসেলকে ৪-০ গোলে সিটি স্রেফ উড়িয়ে দিয়েছে।

চ্যাম্পিয়নস লিগের নকআউট পর্বে প্রতিপক্ষের মাঠে কোনো ইংলিশ ক্লাবের এটাই সবচেয়ে বড় ব্যবধানের জয়। প্রথমার্ধেই সিটিকে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন ইকাই গুন্ডোগান, বের্নাদো সিলভা ও সার্জিও আগুয়েরো। প্রথমার্ধে গার্দিওলার দল এই তিন গোল করেছে মাত্র ৯ মিনিটের ব্যবধানে!

১৪ মিনিটে কেভিন ডি ব্রুইনের কর্নার থেকে হেডে গোল করেন জার্মান মিডফিল্ডার গুন্ডোগান। এ মৌসুমে সিটির হয়ে ১৯টি গোলে সহায়তা বেলজিয়ান মিডফিল্ডার ডি ব্রুইন, প্রিমিয়ার লিগে যা সর্বোচ্চ। গুন্ডোগান গোল করার চার মিনিট পরই রহিম স্টার্লিংয়ের ক্রস থেকে কোনাকুনি শটে লক্ষ্যভেদ করেন সিলভা।

এরপর ২৩ মিনিটে বাসেল গোলরক্ষককে নড়ার সুযোগটুকু পর্যন্ত না দিয়ে ২২ গজ দূর থেকে আচমকা শটে গোল করেন আগুয়েরো। চ্যাম্পিয়নস লিগের এ মৌসুমে প্রতিপক্ষের মাঠে চার ম্যাচের সব কটিতেই গোল পেলেন আর্জেন্টাইন এ স্ট্রাইকার। আসরটিতে কোনো ইংলিশ দলের হয়ে প্রথম একই কীর্তি গড়েছিলেন ত্রিনিদাদের সাবেক স্ট্রাইকার ডুইট ইয়র্ক (১৯৯৮-৯৯ মৌসুমে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে)। নতুন বছরের এ পথ পর্যন্ত ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগ বিচারে গোল করায় আগুয়েরো কিন্তু বাকিদের চেয়ে এগিয়ে। ২০১৮ সালে ১১ ম্যাচে তাঁর গোলসংখ্যা ১৪।

বিরতির পর ৮ মিনিটের মাথায় গুন্ডোগানকে দিয়ে গোলও করিয়েছেন আগুয়েরো। তাঁর পাস থেকে একজনকে কাটিয়ে উঁচু শটে নিজের দ্বিতীয় গোল তুলে নেন গুন্ডোগান। হাঁটুর চোটে প্রায় নয় মাস মাঠের বাইরে থাকার পর গত সেপ্টেম্বরে ফিরেই দলে ধীরে ধীরে নিয়মিত হচ্ছেন গুন্ডোগান। এ ম্যাচে ৮২ শতাংশ সফল পাস দেওয়ার পাশাপাশি ৮৬ শতাংশ ট্যাকল জেতাই বলে দেয় ছন্দে ফিরছেন গুন্ডোগান। তাঁর দল সিটিও ছন্দে রয়েছে মৌসুমের শুরু থেকেই।

গত মৌসুমে ৫৬ ম্যাচে ৩৩ জয়ের মুখ দেখেছিল সিটি। অথচ এবারের মৌসুমে গার্দিওলার শিষ্যরা এ পর্যন্ত ৪১ ম্যাচেই ৩৪ জয় তুলে নিয়েছে। এর মধ্যে প্রতিপক্ষের মাঠে ২১ ম্যাচে তাঁদের জয় ১৬টি—ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের মধ্যে যা পিএসজির সঙ্গে যুগ্মভাবে সর্বোচ্চ। আগামী ৭ মার্চ নিজেদের মাঠে ফিরতি লেগে বাসেলের মুখোমুখি হওয়ার আগেই কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনাল দেখছেন সিটি কোচ গার্দিওলা, ‘দারুণ ফল। কোয়ার্টার ফাইনালে আমরা প্রায় পৌঁছে গিয়েছি।’