রক্ষণাত্মক মরিনহোয় বিরক্ত পগবা?

টটেনহাম-ইউনাইটেড ম্যাচে মরিনহোর সঙ্গে পগবার এই তর্কেই শুরু গুঞ্জনের।  ফাইল ছবি
টটেনহাম-ইউনাইটেড ম্যাচে মরিনহোর সঙ্গে পগবার এই তর্কেই শুরু গুঞ্জনের। ফাইল ছবি

প্রিমিয়ার লিগে সর্বশেষ তিন ম্যাচের দুটিতেই হেরেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। টটেনহাম ও নিউক্যাসলের মাঠে ম্যাচ দুটিতে দ্বিতীয়ার্ধে পল পগবাকে উঠিয়ে নিয়েছিলেন ইউনাইটেড কোচ হোসে মরিনহো। ওই ম্যাচ দুটির মাঝে নিজেদের মাঠে হাডার্সফিল্ডের সঙ্গে ম্যাচে ইউনাইটেড জিতেছে, তাতে পগবাকে শুরুর একাদশে রাখেননি ইউনাইটেড কোচ।

ওপরের তথ্যগুলো কি কোনো ইঙ্গিত দেয়? ইউরোপের সংবাদমাধ্যমকে তো দেয়। কিছুদিন ধরেই গুঞ্জন শুরু হয়েছে, মরিনহো-পগবার মধ্যে সবকিছু ঠিকঠাক চলছে না। যদিও গতকাল হাডার্সফিল্ডের সঙ্গে এফএ কাপের ম্যাচটির আগের সংবাদ সম্মেলনে মরিনহো দাবি করে গেছেন, এসব গুঞ্জন সর্বৈব মিথ্যা। কালকের ম্যাচটিতে অবশ্য পগবা না খেলার কারণ কোনো দ্বন্দ্ব নয়, বরং অসুস্থতা।

ফ্রেঞ্চ দৈনিক লে’কিপ-এর প্রতিবেদন থেকেই যত গুঞ্জনের শুরু। তাদের ভাষ্য, মরিনহো তাঁকে মাঠের যে পজিশনে খেলান, রক্ষণে বাড়তি মনোযোগ দেওয়ার যে দায়িত্ব তাঁর কাঁধে চাপিয়ে দেন, তা মোটেই পছন্দ নয় পগবার। এ-ও লিখেছে, দুই বছর আগে রিয়াল মাদ্রিদের আগ্রহ উপেক্ষা করে ইউনাইটেডে ফেরার সিদ্ধান্তটা নিয়েও নাকি এখন অনুশোচনা হচ্ছে ২৫ বছর বয়সী ফ্রেঞ্চ মিডফিল্ডারের! যে কারণে হঠাৎ করেই গত দুয়েক দিনে ‘পগবা টু রিয়াল মাদ্রিদ’ গুঞ্জনটাও আবার ফিরে এসেছে।

সব ঝামেলার মূলে মাঠে পগবার খেলার অবস্থানই। এমনিতেই চোট কাটিয়ে ফেরার পর থেকে ফর্ম ভালো নয় তাঁর। তার ওপর ইউনাইটেডে পগবাকে খেলতে হচ্ছে ৪-২-৩-১ ছকে মিডফিল্ডের দুজনের একজন হিসেবে। নিচ থেকে খেলা গড়ে দেওয়া, পাশাপাশি রক্ষণেও এক চোখ রাখার দ্বৈত দায়িত্ব। কিন্তু জুভেন্টাসে যে দুর্দান্ত পগবাকে দেখা গেছে, তিনি খেলতেন ৪-৩-৩ ছকে মিডফিল্ডের বাঁ পাশে। রক্ষণ দায়িত্ব অন্যদের, মাঝমাঠ থেকে বল টেনে নিয়ে আক্রমণে যাওয়াই ছিল তাঁর মূল কাজ। ইউনাইটেডে ‘জুভেন্টাসের পগবা’কে দেখতে না পাওয়ার পেছনে মরিনহোর কৌশলকেই অনেকে মূল কারণ মানছেন।

এসবের সঙ্গে ওপরের ছবির পেছনের গল্পটা যোগ করে নিন। টটেনহামের বিপক্ষে ম্যাচের ছবি এটি। মরিনহো কিছু একটা বলছিলেন, যেটি নিয়ে অনেকক্ষণ সেদিন তর্ক করেছেন পগবা। ওপরের সব মিলিয়ে মরিনহো-পগবা দ্বন্দ্বের গুঞ্জন ছড়াতে আর কী লাগে!

তবে মরিনহো সেটি মানতে নারাজ। ইউনাইটেড কোচ উল্টো ধুয়ে দিয়েছেন সাংবাদিকদের, ‘আপনারা আসলে শব্দ ব্যবহারে খুব ভালো। কারণ আপনারা যখন লেখেন “অনেক গুঞ্জন চলছে”, সেখানে আপনাদের আসলে লেখা উচিত “অনেক মিথ্যা কথা লেখা হচ্ছে। ” ও (পগবা) নিজেও মেনে নিয়েছে গত কয়েক ম্যাচে ও খুব একটা ভালো খেলেনি। আমাদের সম্পর্ক ভালো চলছে না-এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমাদের মধ্যে যোগাযোগ নেই-এটাও মিথ্যা। মাঠে ও কোথায় খেলবে, এ নিয়ে আমরা মতৈক্যে পৌঁছাতে পারছি না, এটাও বড় মিথ্যা কথা।’

মরিনহোর কথাটা সত্যি হলেই খুশি হবেন ইউনাইটেড-ভক্তরা। স্কাই স্পোর্টস।