নো দিতে দিতেও দেননি আম্পায়ার!

এমন জয়ের পর এ উদ্‌যাপন ছাড়া চলে! ছবি: শামসুল হক
এমন জয়ের পর এ উদ্‌যাপন ছাড়া চলে! ছবি: শামসুল হক

সাকিব আল হাসানই সবচেয়ে সুন্দরভাবে এ ম্যাচের সারাংশ করে দিয়েছেন। বলেছেন, একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ থেকে এর চেয়ে বেশি কিছু আশা করা যায় না। ইনিংসের শেষের আগের বলে জয়, এমন কিছু বলতেই পারেন। কিন্তু না, ম্যাচের সব দুর্দান্ত ঘটনাকে ছাপিয়ে গেছে যে দুর্ঘটনা, সেটিই আসলে বাধ্য করেছে সাকিবকে অমন কিছু বলতে।

শেষ ওভারে ১২ রান দরকার ছিল। এমন অবস্থায় স্ট্রাইকে মোস্তাফিজুর রহমান। প্রথম বলে বাউন্সার, ব্যাটে-বলে হলো না। দ্বিতীয় বলে উদানার বাউন্সার। এবারও ব্যাটে বল লাগাতে পারেননি মোস্তাফিজ, কিন্তু পড়িমরি করে দৌড় ঠিকই দিলেন। এবং অন্য প্রান্তে রানআউট হলেন। ৪ বলে ১২ রান দরকার—এটুকুই উত্তেজনায় রাখল টিভি পর্দার দিকে তাকিয়ে থাকা দর্শকদের। লম্বা বিজ্ঞাপন বিরতির কারণে কারও জানার উপায় ছিল না মাঠে কী ঘটছিল।

টিভিতে ম্যাচ আসতেই সবাই বিস্মিত। মাঠে মাহমুদউল্লাহর আশপাশে বাংলাদেশের দুজন অতিরিক্ত খেলোয়াড়। সীমানা–দড়ির পাশে সাকিব আল হাসান। একটু পরেই মাঠে জড়ো হলেন আরও কজন।

মাঠে মাহমুদউল্লাহ উত্তেজিত কণ্ঠে কথা বলছেন আম্পায়ারদের সঙ্গে। মাঠ থেকে এর মধ্যে ব্যাটসম্যানদের চলে আসার ইঙ্গিতও দিচ্ছেন সাকিব। কী হয়েছিল হঠাৎ? ম্যাচ শেষে তামিম বললেন, ‘আমরা লেগ আম্পায়ারকে নো বলের সিদ্ধান্ত নিতে দেখলাম (শেষ মুহূর্তে উনি হাত নামিয়ে নিয়েছেন)। আমরা সে সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করছিলাম। আমর ব্যাপারটা সুন্দরভাবে শেষ করতেই চেয়েছিলাম। তবে এ ব্যাপারটা নিয়ে আর কোনো বাজে কিছু সৃষ্টি করতে চাই না।’

মাহমুদউল্লাহই এমন মুহূর্তে দলকে জয় এনে দিয়েছেন। ওই মুহূর্তে ৩ বলে তাঁর ১২ রানই এক বল থাকতে জিতিয়ে দিয়েছে দলকে। মাহমুদউল্লাহ অবশ্য ব্যাপারটা নিয়ে অতটা ভাবতে চাইলেন না, ‘ভুল বোঝাবুঝিটা সৃষ্টি হয়েছিল। কারণ, আমি ভেবেছিলাম প্রথম বলটাই বাউন্সার ছিল। তবে আমাদের এটা ভুলে যাওয়া উচিত। ম্যাচে এমন ঘটেই।’

সাকিব তো দলকেই মাঠ থেকে ডেকে পাঠিয়েছেন। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ম্যাচটা হেরেই যেত। ভাগ্যিস, আবেগ নিয়ন্ত্রণ করেছিল দল। সাকিবও ভুল স্বীকার করে নিলেন, ‘এসব ঘটে। মাঝে মাঝে আবেগের কাছে অন্য সবকিছু হার মানে। কিন্তু একজন অধিনায়ক, নেতা হিসেবে আমাকে আরেকটু সাবধান হতে হবে। পরবর্তীতে আরেকটু সাবধান থাকব। কিন্তু সংক্ষিপ্ত সংস্করণ, এত উত্তেজনা, আবেগ সবকিছু ভাসিয়ে নিয়েছিল। আমাদের মাঝে সব সময়ই মাঠে এ রকম বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকে। মাঠের বাইরে আমরা সবাই বন্ধু।’