মেসি-সুয়ারেজের দুই মিনিটের জাদু

শেষ মুহূর্তের গোলের পর মেসির উল্লাস। ছবি:  রয়টার্স
শেষ মুহূর্তের গোলের পর মেসির উল্লাস। ছবি: রয়টার্স
  • সেভিয়ার সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করে বার্সেলোনা।
  • ম্যাচ শেষের দুই মিনিট আগে প্রথম গোল করেন সুয়ারেজ।
  • লা লিগায় অপরাজিতই রইল বার্সেলোনা।

৮৭ মিনিট পর্যন্ত ২-০ গোলে পিছিয়ে ছিল বার্সেলোনা। নিজেদের মাঠে সেভিয়া যখন বিরাট বড় এক জয়ের ক্ষণ গুনছে, ঠিক সে সময়ই ঝড় তুললেন লুইস সুয়ারেজ ও লিওনেল মেসি। ৮৮ মিনিটে সুয়ারেজ আর ৮৯ মিনিটে মেসি গোল করে দল অপরাজেয়-রেকর্ড অক্ষুণ্ন রাখলেন।
গত ১৩ মাস ধরে বার্সেলোনা লা লিগার কোনো ম্যাচ হারেনি। গত বছর এপ্রিলে মালাগার বিপক্ষে হারার পর টানা ৩৭ ম্যাচে অপরাজিত তারা। আর একটি ম্যাচ না হারলেই লা লিগার রেকর্ডে নিজেদের নাম লেখানো হয়ে যাবে। ১৯৮০ সালে ৩৮ ম্যাচ অপরাজিত ছিল রিয়াল সোসিয়েদাদ। কিন্তু আর একটু হলেই সব ভেস্তে দিতে বসেছিল ফ্রাঙ্কো ভাসকেজের ও লুইস মুরিয়েলের দুই গোল। ভাগ্যিস মেসি ছিলেন!
প্রথম একাদশে খেলেননি। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে বসে ছিলেন ডাগ আউটে। বুধবার রোমার বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালটা মাথায় রেখেছিলেন কোচ ভালভার্দে। কিন্তু দল ২-০ গোলে পিছিয়ে থাকার সময় আর থাকতে পারেননি। মাঠে নামলেন। শেষ অবধি ত্রাণকর্তাও হলেন।
ম্যাচের প্রথমার্ধে খেলায় এগিয়ে ছিল সেভিয়াই। একের পর এক আক্রমণে বার্সার রক্ষণে চিড় ধরছিল বারবারই। ৩৬ মিনিটে রক্ষণের ভুলেই প্রথম গোল পায় সেভিয়া। গোল করেন ভাসকেজ। ৪৪ মিনিটে পিকে একটা সুযোগ পেয়েও সমতা ফেরাতে পারেননি। দ্বিতীয়ার্ধে সেভিয়া আরও চেপে ধরে বার্সাকে। ৫০তম মিনিটে সেভিয়াকে ২-০ গোল এগিয়ে দেন মুরিয়েল। সমর্থকেরা দারুণ একটা জয় দেখছিলেন চোখের সামনেই।

আজকের ম্যাচে দুই জাদুকর। নামগুলো নিশ্চয় বলে দিতে হবে না! ছবি: রয়টার্স
আজকের ম্যাচে দুই জাদুকর। নামগুলো নিশ্চয় বলে দিতে হবে না! ছবি: রয়টার্স

৬০ মিনিটে মেসি নামেন। এ সময় যেন কিছুটা প্রাণ ফিরে পায় হতোদ্যম বার্সা। মেসি যে নেমেই জ্বলে উঠেছেন—এটা বলা যাবে না। ১০-১৫ মিনিট কোনো শটই নিতে পারেননি। ৭৬ মিনিটে একটা সুযোগ মেসি পেয়েছিলেন বটে, কিন্তু তাঁর শট পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।
ম্যাচের শেষ ১০ মিনিট বার্সা যেন নিজেদের আসল ছন্দ খুঁজে পেয়েছিল। ৮৮ মিনিটে গোল করলেন সুয়ারেজ। ব্যবধান কমানো গেছে! হার কি? বার্সা-ভক্তরা তখন ম্যাচের আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছেন। কিন্তু গোল করে বসলেন মেসি ৮৯ মিনিটে। বড় বাঁচা বেঁচে গেল বার্সা।
ম্যাচ শেষে ভালভার্দে মেতে থাকলেন তাঁদের ত্রাণকর্তাকে নিয়েই, ‘যদি আপনার দলে মেসির মতো ফুটবলার থাকে এবং সে না খেলে, তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন পার্থক্যটা। বোঝা যাবে মেসি কতটা গুরুত্বপূর্ণ। সে এমনই একজন খেলোয়াড় যে বল ধরলেই ম্যাচের ভাগ্য বদলে যায়।’