পাকিস্তানের হোম ভেন্যু হতে পারে বাংলাদেশ?

পাকিস্তানের হোম ভেন্যুও হতে পারে শেরেবাংলা স্টেডিয়াম? প্রথম আলো ফাইল ছবি
পাকিস্তানের হোম ভেন্যুও হতে পারে শেরেবাংলা স্টেডিয়াম? প্রথম আলো ফাইল ছবি

নিজ দেশে অনেক দিন ধরেই নির্বাসিত পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। ২০০৮ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কা দলের ওপর সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলার পর দু-একটা ম্যাচ বা সিরিজ ছাড়া সেখানে আর তেমন কোনো আন্তর্জাতিক দল যায়নি। অনেক দিন ধরেই পাকিস্তান বিকল্প হোম ভেন্যু হিসেবে আরব আমিরাতকে ব্যবহার করছে। আমিরাত নিজেদের ক্রিকেট নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করবে এবারের শীতে। তাহলে? কোথায় হবে পাকিস্তানের হোম ম্যাচগুলো? বিকল্প হিসেবে যে দেশগুলোর কথা পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) ভাবছে, এর মধ্যে বেশ ভালো বিবেচনায় আছে বাংলাদেশ।

এমন খবর দিয়েছে ক্রিকইনফো। ক্রিকেটের ওয়েবসাইটটি লিখেছে, পিসিবি যে বিকল্পগুলো ভাবছে তার মধ্যে ভালোভাবে আছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশে তারা শ্রীলঙ্কার মতো ক্রিকেটীয় পরিবেশ পাবে। বাড়তি পাওনা হলো, এখানে পাকিস্তান সমর্থকদের সংখ্যা শ্রীলঙ্কার চেয়ে অনেক বেশি। তবে এই মুহূর্তে সমস্যা হলো, পিসিবি ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সম্পর্ক আপাতত ভালো যাচ্ছে না। গত বছর পিসিবি বাংলাদেশ সফর বাতিল ঘোষণা করেছে, কারণ এর আগে বিসিবি পাকিস্তান সফর করতে রাজি হয়নি। এটা একটা বাধা হতে পারে। বাধা হতে পারে বাংলাদেশের নিজস্ব ক্রিকেট সূচি। ঘরোয়া সিরিজের পাশাপাশি বিপিএলের মতো বড় টুর্নামেন্টও আয়োজন করে বিসিবি। ফলে মাঠ ফাঁকা পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে।

পিসিবির প্রথম পছন্দ হিসেবে অবশ্য বাংলাদেশ নেই। বরং সে তালিকায় তারা বেশি ভাবছে মালয়েশিয়াকে। এ বছর অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ দুটি তারা মালয়েশিয়ায় আয়োজন করার ব্যাপারে খুব আগ্রহী। মালয়েশিয়ার জাতীয় দল সেভাবে আন্তর্জাতিক মঞ্চে জায়গা করে না নিলেও এখানে বেশ কিছু সফল বড় ক্রিকেট আয়োজন হয়েছে। আইসিসি ট্রফি, যুব বিশ্বকাপ, বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ত্রিদেশীয় সিরিজ আয়োজন করেছে দেশটি।

মালয়েশিয়াকে ভেন্যু হিসেবে পেতে পাকিস্তানের জন্য সমস্যা হলো, দেশটি কখনো টেস্ট আয়োজন করেনি। তা ছাড়া দেশটির আন্তর্জাতিক স্বীকৃত স্টেডিয়াম একটিই। আর অক্টোবর থেকে মার্চ, পাকিস্তানের এই ব্যস্ত হোম সিজনে কুয়ালালামপুরে অনেক বৃষ্টিও হয়।

পিসিবির আরেক বিকল্প হিসেবে শ্রীলঙ্কার কথা ভাবছে। শ্রীলঙ্কার আর্থিক সংকটে ভোগা বোর্ড পিসিবিকে ভাড়ায় তাদের স্টেডিয়ামগুলো ব্যবহার করতেও দিতে পারে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এখানে নিজেদের একটি হোম সিরিজও খেলেছে পাকিস্তান, ২০০২-০৩ মৌসুমে। তবে শ্রীলঙ্কা আর বাংলাদেশকে ভেন্যু হিসেবে পাওয়ার পথে পাকিস্তানকে একই সমস্যায় পড়তে হবে। শ্রীলঙ্কার নিজস্ব ব্যস্ততা এবং তাদের টি-টোয়েন্টি লিগের আয়োজন।

শুধু এশিয়ায় নয়, পাকিস্তান ইংল্যান্ডের মতো দেশকেও নিজেদের হোম ভেন্যু হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। সেই বিকল্পও ভাবছে পিসিবি। যদিও ইংল্যান্ডের ব্যস্ততা বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার চেয়ে বেশি। ইংল্যান্ডে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জেতা পাকিস্তানের জন্য দেশটিকে স্বাগতিক ভেন্যু হিসেবে ব্যবহারে উৎসাহিত করতে পারে ২০১৯ বিশ্বকাপও। ইংল্যান্ডেই হবে পরের ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ। ইংল্যান্ডে নিয়মিত খেললে পেস-নির্ভর বোলিং আক্রমণের পাকিস্তান বাড়তি সুবিধা পাবে বৈকি।

পাকিস্তান ভাবছে কাতারের কথাও। যদিও কাতার আর আরব আমিরাত দুই জায়গাতেই ম্যাচ আয়োজন বেশ খরচার ব্যাপার। দর্শকও তেমন মেলে না।

সব মিলিয়ে পাকিস্তান বেশ ঝামেলার মধ্যেই আছে। কোথায় আয়োজন করবে তারা নিজেদের হোম সিরিজগুলো? এদিকে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেছেন, পিসিবি এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক কোনো প্রস্তাব তাঁদের দেয়নি।

পিসিবি যে নিজেই এখনো চূড়ান্ত করতে পারছে না কোন দেশকে ক্রিকেটের হোম বানাবে তারা!