মেসি-রোনালদো ছাড়াও এল ক্লাসিকোয় নজরে থাকবে যে বিষয়গুলো

এল ক্লাসিকো মানেই তো এ দুজনের লড়াই। ফাইল ছবি
এল ক্লাসিকো মানেই তো এ দুজনের লড়াই। ফাইল ছবি
>
  •  ন্যু ক্যাম্পে রিয়াল মাদ্রিদের মুখোমুখি হবে বার্সেলোনা
  •  বাংলাদেশ সময় আজ রাত ১২টা ৪৫ মিনিটে শুরু, খেলা দেখাবে সনি টেন টু

বার্সেলোনা-রিয়াল মাদ্রিদ ম্যাচ। তবে পরিচিত এল ক্লাসিকো নামেই। এর মধ্যেই লা লিগা চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেছে বার্সেলোনা, আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলাও নিশ্চিত হয়ে গেছে বার্সার। বার্সার এ মৌসুমে আর পাওয়ার কিছু নেই। অন্যদিকে লা লিগা থেকেও প্রাপ্তির কিছু নেই বলে রিয়ালও আপাতত চ্যাম্পিয়নস লিগকেই পাখির চোখ করেছে। তাই কাগজের হিসাবে এ ম্যাচ অতটা গুরুত্বপূর্ণ নয়।
ভুল হলো, এল ক্লাসিকোর গুরুত্ব কখনোই কম হতে পারে না। গার্ড অব অনার কিংবা ইনিয়েস্তার বিদায়ের মতো ইস্যুগুলো না থাকলেও এবারের এল ক্লাসিকো থেকে চোখ সরাতে পারতেন না কেউই। তবে দেখে নেওয়া যাক আজকের ম্যাচে কোন বিষয়গুলো থাকবে আলোচনায় :

এ ম্যাচ থেকে বার্সেলোনার প্রাপ্তি?
অপরাজিত থেকে লিগ শিরোপা জিততে চায় বার্সেলোনা। লা লিগায় এমন কীর্তি কারও নেই। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার শেষ কীর্তি আন্তোনিও কন্তের জুভেন্টাসের। লিগ জয়ের পর লিওনেল মেসিও জানিয়েছেন এ লক্ষ্যের কথা। ভালভার্দে ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এ ম্যাচ থেকে প্রাপ্তির কথা বলতে গিয়ে বলেছেন, ‘এ যাত্রা যেন অব্যাহত থাকে, ওদের জয়বঞ্চিত করতে, ওদের হারাতে। আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেছি, এরপরও এল ক্লাসিকোর জন্য প্রস্তুত। আমরা জানি, এ ম্যাচের মূল্য কী, কতটা গুরুত্বপূর্ণ।’

রিয়ালের প্রাপ্তি কী?
সম্মান ও আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়া। মৌসুমের শুরুতে টানা দুই এল ক্লাসিকো জিতে উড়ন্ত সূচনা হয়েছিল রিয়ালের। কিন্তু লিগে সে ফর্ম ধরে রাখতে পারেনি জিদানের দল। আর বার্সেলোনার কাছে বার্নাব্যুতে ৩-০ ব্যবধানে হারে লিগ শিরোপা জয়ের আশাটা শেষ হয়েছে রিয়ালের। বার্নাব্যুর হার তাই ন্যু ক্যাম্পের জয় দিয়ে ভুলিয়ে দিতে চায় মাদ্রিদের দলটি। আর এ ম্যাচে জয় পেলে বার্সেলোনার অপরাজেয় যাত্রায় ছেদ ফেলা যাবে। সে সঙ্গে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালের জন্য বাড়তি আত্মবিশ্বাসও মিলবে।

ইনিয়েস্তার এটাই শেষ এল ক্লাসিকো। ছবি: রয়টার্স
ইনিয়েস্তার এটাই শেষ এল ক্লাসিকো। ছবি: রয়টার্স

ইনিয়েস্তা থাকবেন তো?
ক্যারিয়ারের শেষ ক্লাসিকো খেলছেন আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা। কিন্তু মাঠে নামবেন তো? এ প্রশ্ন জাগছেই। কারণ শারীরিকভাবে বার্সেলোনাকে সর্বোচ্চ দিতে পারছেন না বলেই বার্সেলোনা ছাড়ছেন। এল ক্লাসিকোর মতো ম্যাচে শারীরিক ও মানসিকভাবে সর্বোচ্চটাই ব্যয় হয় একজন ফুটবলারের। ভালভার্দে তাই নিশ্চয়তা দিতে পারেননি এ ব্যাপারে, ‘আশা করি সে প্রস্তুত। আমি ওর সঙ্গে কথা বলব, দেখব কেমন করছে। সে যদি ভালো বোধ করে, তাহলে খেলবে। কিন্তু সে জানে এমন ম্যাচে খেলতে হলে কোন পর্যায়ে থাকতে হয়।’ ইনিয়েস্তা না থাকলে দর্শক হতাশ হবেন, সেটা জানা। তবে রিয়াল মাদ্রিদও হতাশ হবে। কারণ, জিদান বলেছেন ইনিয়েস্তাকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে চান তাঁরা।

আক্রমণ ও রক্ষণে রিয়ালের মূল ভরসা এ দুজনই। ছবি: রয়টার্স
আক্রমণ ও রক্ষণে রিয়ালের মূল ভরসা এ দুজনই। ছবি: রয়টার্স

কাদের নিয়ে দল সাজাবেন জিদান?
মৌসুমের বাকি সময়টা রিয়াল সবই করবে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল মাথায় রেখে। লিগে এটাই রিয়ালের সর্বশেষ বড় ম্যাচ। ফলে এ ম্যাচ দিয়েই ফাইনালের প্রস্তুতি সারতে চাইবেন জিনেদিন জিদান। সে পরিকল্পনায় বাঁধ দিচ্ছেন ইসকো। চোট পাওয়ায় আজ স্কোয়াডেই নেই এই মিডফিল্ডার। ফলে একাদশে সুযোগ মিলতেও পারে গ্যারেথ বেলের। বাজারে গুঞ্জন, এটাই শেষ এল ক্লাসিকোও হয়ে উঠতে পারে ওয়েলশ ফরোয়ার্ডের।
চোট ঝামেলায় আছেন ভারান, নাচো ও কারভাহালও। রক্ষণের ডান দিকটা হয়তো আজও উইঙ্গার ভাসকেজকে সামলাতে হতে পারে। অবশ্য জিদানের খেলোয়াড় অদলবদল করে খেলানোর যে অভ্যাস, তাতে ইসকোর চোটও বেলের একাদশে জায়গা পাওয়ার নিশ্চয়তা দিচ্ছে না। শুধু ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো আর রামোস-মার্সেলোই তাঁদের জায়গা নিয়ে নিশ্চিন্ত।

ম্যাচের ১৭ মিনিটে কী ঘটবে?
এল ক্লাসিকো মানেই চরম উত্তেজনা। খেলার মাঠে, রাজনৈতিক ময়দানে। কাতালোনিয়ার স্বাধীনতা আন্দোলনের সবচেয়ে বড় প্রচার হিসেবে ধরে নেওয়া হচ্ছে এবারের ক্লাসিকোকে। অনেক রাজনৈতিক কর্মী পুরো ন্যু ক্যাম্পকে হলুদ রঙ্গে রাঙানোর পক্ষে কথা বলেছেন। স্বাধীনতাকামী কাতালানরা তাঁদের প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে এ রংকেই বেছে নিয়েছেন। আর প্রতি অর্ধের ১৭ মিনিটে স্বাধীন কাতালোনিয়ার পক্ষে স্লোগান দেওয়া হবে।

বার্সেলোনার ভরসা গোলবন্যা বইয়ে দেওয়া এ জুটি। ছবি: রয়টার্স
বার্সেলোনার ভরসা গোলবন্যা বইয়ে দেওয়া এ জুটি। ছবি: রয়টার্স

ম্যাচে এগিয়ে থাকবে কারা?
এ ম্যাচে পরিষ্কার ফেবারিট বার্সেলোনা। লিগে এখনো অপরাজিত তারা। বাজির দরেও এগিয়ে কাতালানরা। তবে জিদান-রামোস ফ্যাক্টর এগিয়ে রাখছে রিয়ালকে। কোচ ও অধিনায়ক হিসেবে ক্যাম্প ন্যুতে এখনো হারেননি দুজন।