অস্ট্রেলিয়ার মনোভাব দুঃখজনক বলছে বিসিবি

>বাংলাদেশকে আতিথেয়তা দেবে না অস্ট্রেলিয়া, বিষয়টিকে হতাশাজনক মনে করছে বিসিবি
অস্ট্রেলিয়া সফরে এর আগেও পরিচিত ভ্যেনুতে খেলার সুযোগ পায়নি বাংলাদেশ।
অস্ট্রেলিয়া সফরে এর আগেও পরিচিত ভ্যেনুতে খেলার সুযোগ পায়নি বাংলাদেশ।

এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশ দুবার পূর্ণাঙ্গ সফরে গিয়েছে অস্ট্রেলিয়ায়। ২০০৩ ও ২০০৮ সালে হওয়া দুটি সফরই হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ‘অফসিজন’ জুলাই-আগস্টে। এমসিজি, সিডনি, ব্রিসবেন, অ্যাডিলেডের মতো বিখ্যাত ভেন্যুতে নয়; বাংলাদেশকে খেলতে হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চলে, কিছুটা অপরিচিত দুই মাঠ কেয়ার্নস ও ডারউইনে।

এবারও একই সূচি ছিল। অফসিজনে আগস্টে কেয়ার্নস ও ডারউইনে খেলবে বাংলাদেশ। কিন্তু সফরটার পাশে বড় প্রশ্নচিহ্ন বসেছে অনেক আগেই। এ বছরের শুরুতেই ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ) বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) জানিয়ে দেয়, অস্ট্রেলিয়ার চ্যানেলগুলো ফুটবলের মৌসুমে ক্রিকেট সিরিজ সম্প্রচার করতে চায় না। এই সিরিজ তাদের জন্য তাই আর্থিকভাবে লাভজনক হবে না।


বিসিবি তবুও চেষ্টা চালিয়েছে । কিন্তু ইতিবাচক কোনো ফল আসেনি। যদিও সিএ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে সফর বাতিল নিয়ে কিছু জানায়নি। তবে আজ ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার ওয়েবসাইটে খবর প্রকাশিত হয়েছে, এটির বিকল্প হিসেবে ২০২০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে একটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ আয়োজন করতে তারা আগ্রহী। বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী যদিও জানিয়েছেন, সম্ভাব্য টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিয়ে তাঁদের কিছু জানা নেই। তবে জানালেন, সিএ বিসিবিকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, এ বছর সম্ভব না হলেও পরের এফটিপিতে কিছু বাড়তি ম্যাচ খেলে এটা পুষিয়ে দেবে।

আর্থিকভাবে লাভজনক হবে না শুধু এই যুক্তিতে বাংলাদেশকে আতিথেয়তা দেবে না অস্ট্রেলিয়া, বিষয়টি হতাশ করেছে বিসিবিকে। এত দিন এ নিয়ে সরাসরি কিছু না বললেও বিসিবির প্রধান নির্বাহী এ ঘটনাকে আজ ‘দুঃখজনক’ই বললেন। দুপুরে নিজাম উদ্দিন সংবাদমাধ্যমকে বললেন, ‘তারা তাদের দিকটা দেখছে, আর্থিক বিষয়টি বিবেচনা করছে। অবশ্যই এটা দুঃখজনক। আমরা আমাদের দেশে বিভিন্ন সময়ে যে সিরিজগুলো আয়োজন করে থাকি, সব সময়ই যে লাভজনক হয়, তা নয়। অনেক সময় আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে গিয়ে অনেক সিরিজ-টুর্নামেন্ট আমরা আয়োজন করি। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড যদি এই ক্ষতি সামলে নিতে পারে আশা করি বড় বোর্ডগুলোও পারবে।’

বিসিবির প্রধান নির্বাহীর কথাতে পরিষ্কার, টাকাপয়সায় তাঁরাও এখন খুব একটা পিছিয়ে নেই। এই সচ্ছলতা থেকেই লাভ-লোকসানের কথা না ভেবে অনেক সময় উদারতার পরিচয় দিয়ে বিসিবি সিরিজ আয়োজন করে থাকে। বিসিবি যদি করতে পারে, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া কেন পারবে না?

প্রশ্ন হতে পারে, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া এই উদারতা বাংলাদেশের প্রতি কবে পুরোপুরি দেখিয়েছে? নিজেদের দেশে বাংলাদেশকে ডেকেছে অফসিজনে। খেলতে দিয়েছে অখ্যাত সব মাঠে। বাংলাদেশেও খেলতে এসেছে অনেক জল ঘোলা করে। তবে কি সিএর সঙ্গে বিসিবির ক্রিকেটীয় সম্পর্কটা এখনো পোক্ত নয়? নিজাম উদ্দিন চৌধুরী তা মনে করেন না, ‘সেটা ঠিক নয়। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া নানা সময়ে বিসিবিকে সহযোগিতা করেছে। টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর তাদের সঙ্গে কিছু দ্বিপক্ষীয় প্রতিশ্রুতি ছিল। অনেক কর্মসূচিতে তারা আমাদের সহযোগিতা করেছে। এই যে সহযোগিতা করেছে, তাতে আমাদের সম্পর্ক থাকবে, ভবিষ্যতে আরও উন্নতি হবে।’