পিএসজির নতুন কোচ 'মাথা গরম' টাচেল

>উনাই এমেরির স্থলে পিএসজির নতুন কোচ টমাস মিচেল। ‘ফুটবলে কোচই সব’—এই মতবাদে বিশ্বাসী তিনি। মাথা গরম হিসেবেও পরিচিতি আছে তাঁর।

ওস্তাদ কে, তুমি না আমি? আগামী মৌসুমে পিএসজিতে এই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে পারেন নেইমার। প্যারিসের ক্লাবটিতে প্রথম মৌসুমেই এডিনসন কাভানির সঙ্গে লেগে গিয়েছিল তাঁর। কাভানিকে বুঝিয়ে দিয়েছেন, এখানে রাজত্ব চলবে একজনেরই। এমনকি কোচ উনাই এমেরি পর্যন্ত এ নিয়ে কিছু করতে পারেননি। তবে এমেরির জায়গায় নতুন কোচ হয়ে এলেন যিনি, তাঁর মাথা গরম বলে পরিচিতি আছে। ফুটবলে কোচই সব—এই মতবাদে বিশ্বাসী টমাস টাচেল দায়িত্ব নিয়েছেন পিএসজির।
পিএসজিকে ঘরোয়া ট্রেবল জেতানোর পরও বিদায় নিতে হয়েছে এমেরিকে। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব নিয়েছেন টাচেল। সর্বশেষ বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের দায়িত্বে ছিলেন এই জার্মান। পিএসজি চেয়ারম্যান নাসের আল খেলাইফি বুঝিয়ে দিয়েছেন, যা তিনি চান, সেটা নিয়ে পেয়ে ছাড়েন। নেইমারকে চেয়েছেন, পেয়েছেন। কিলিয়ান এমবাপ্পেকে রিয়াল মাদ্রিদের নাকের ডগা থেকে দলে ভিড়িয়েছেন। এখন তাঁর চাই চ্যাম্পিয়নস লিগের গৌরব। এমেরি পারেননি। এক মৌসুমে তিন শিরোপাও তাই পিএসজির জন্য যথেষ্ট নয়।
কিন্তু টাচেলকে নিয়োগ দেওয়ার খবর নেইমার-ভক্তদের জন্য উদ্বেগের। এই কোচ এর আগেও নিজ দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছেন। তাঁর কথার ওপর কথা চলে না। নেইমারকেও চলতে হবে টাচেলের মতো করে। বড় তারকাদের সঙ্গে কোচের অহংয়ের লড়াই ফুটবলে নতুন কিছু নয়। টাচেল পা রাখতে না রাখতেই শুরু হয়ে গেছে এ আলোচনা। কারণটা অবশ্যই গত মৌসুমে ফ্রি কিক নিয়ে কাভানি-নেইমারের প্রকাশ্য দ্বন্দ্বের স্মৃতি।
২০১৭ সালে ডর্টমুন্ডকে জার্মান কাপ জেতানোর মাত্র তিন দিন পর বরখাস্ত হয়েছিলেন। তখন ক্লাবের প্রধান নির্বাহীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল চরম খারাপ। এর আগের বছর ক্লাবের বড় তারকাদের একজন ম্যাট হামেলস দল ছাড়েন মূলত কোচের সঙ্গে শীতল সম্পর্কের কারণে। কাপ ফাইনালের আগে সংবাদ সম্মেলনে ক্লাবের অধিনায়ক কোচের প্রকাশ্য সমালোচনা করেছিলেন নুরি শাহিনকে দলে না রাখার জন্য।
টাচেলের মাথা গরমের ইতিহাস আছে এর আগের ক্লাব মেইঞ্জে থাকার সময়েও। তাঁর অধীনে খেলার অভিজ্ঞতা থেকে ইভান ক্লাসনিচ বলেছিলেন, ‘উনি কঠিন মানুষ। আরও অনেকে আমার সঙ্গে একমত হবে। তিনি সেসব খেলোয়াড়কে পছন্দ করেন না, যারা প্রশ্ন তোলে বা কোনো বিষয়ে মত দেয়। তার কথা যারা মুখ বুজে মেনে নেয়, তারাই তাঁর প্রিয় খেলোয়াড়।’
এমনকি তাঁর গুরু পেপ গার্দিওলার সঙ্গে এক পানশালায় দেখা করতে গিয়ে ফুটবলের ট্যাকটিকস নিয়ে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করেছিলেন। এই গল্পও জার্মান ফুটবলে বেশ পরিচিত। বয়সে বেশ তরুণ ৪৪ বছর বয়সী এরই মধ্যে আলাদা নজর কেড়েছেন তাঁর কোচিং ও কৌশলের কারণে। আর্সেনালের মতো বড় ক্লাব তাঁকে চাইছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত টাচেল বেছে নিলেন পিএসজি।
এখন নেইমারকে তিনি কীভাবে সামলান, সেটাই দেখার।