সাকিব-মুশফিকদের উত্তরসূরি কি পাওয়া গেল?

প্রিমিয়ার লিগে উত্তীর্ণ বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ছবি: সংগৃহীত
প্রিমিয়ার লিগে উত্তীর্ণ বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ছবি: সংগৃহীত
>২০১১ সালে প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেট থেকে অবনমন হয় বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। এরপর পাঁচ মৌসুম প্রথম বিভাগ লিগে খেলে আবার প্রিমিয়ারে নাম লেখাল সাকিব-মুশফিকদের প্রতিষ্ঠানটি।

‘সাকিব-মুশফিক ভাইয়েরা পারলে আমরা কেন পারব না?’ এই প্রতিজ্ঞাটাই কি মনের মধ্যে গেঁথে গিয়েছিল একদল তরুণের? যাঁদের মধ্যে এমন সাফল্যের তীব্র তৃষ্ণা, তাঁরা সফল না হয়ে পারেন না! সফল হয়েছেন, উদ্যমী এই তরুণদের হাত ধরেই প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগে রানার্সআপ হয়ে পাঁচ মৌসুম পর ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে ফিরেছে খেলোয়াড় তৈরির কারখানা বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি)।

প্রায় এক যুগ আগে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে সাকিব আল হাসান-মুশফিক রহিমেরা বিকেএসপির জার্সিতে মাঠ দাপিয়ে বেড়াতেন। তাঁদের বিদায়ের পর হাল ধরেছিলেন নাসির হোসেন, এনামুল হকেরা। কিন্তু এরপর থেকেই একটা শূন্যতা সৃষ্টি হওয়ায় ২০১১ সালে অবনমন হয় দলটির। পরে টানা পাঁচ মৌসুম প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগে খেললেও ওঠা যাচ্ছিল না আর প্রিমিয়ারে। অবশেষে সাত বছর পর খেলোয়াড় তৈরির প্রতিষ্ঠানটির পতাকা উড়ল ঘরোয়া ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পর্যায়ে।

একটি নতুন প্রজন্মই নাকি বদলে দিয়েছে বিকেএসপির এই দলটিকে। ব্যাট হাতে সামনে থেকে যার নেতৃত্ব দিয়েছেন শামীম পাটোয়ারি। আর দুর্দান্ত অলরাউন্ড নৈপুণ্য দেখিয়েছেন অধিনায়ক আবদুল কাইয়ুম। পুরো দলের সঙ্গে এই দুই শিষ্যের কথা সামনে তুলে আনলেন দলের কোচ মাসুদ হাসান, ‘আমাদের এই দলটি খুবই সুসংগঠিত। তাদের মধ্যে ভালো কিছু করার একটা তাড়না আছে। পুরো দলটিই ভালো। বিশেষ করে অধিনায়ক তুহিন ও শামীম পাটোয়ারি দুর্দান্ত খেলেছে।’ মাসুদের সঙ্গে দলটির সহকারী কোচ হিসেবে ছিলেন সোহেল আনোয়ার।

পাঁচ মৌসুম পরে বিকেএসপি দলের প্রিমিয়ারে উত্তীর্ণ। এর পেছনে কোন বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে, এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা গেল বিকেএসপি কলেজের অধ্যক্ষ লে. কর্নেল ইমরান ইবনে রউফের কথা। মূলত ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়া দেখার দায়িত্ব তাঁর কাঁধে থাকলেও খেলার মাঠে নিয়মিত মুখ তিনি। সাবেক ক্রিকেটার বলেই কি না, মাঝেমধ্যে ব্যাট-বল হাতে তুলে নেন কলেজের এই অধ্যক্ষ। খেলোয়াড়দের উজ্জীবিত করার জন্য পুরো কোচিং স্টাফের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। সব ক্রিকেটারের মুখেই শোনা গেল তাঁর প্রশংসা। ইমরান অবশ্য কৃতিত্ব ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন সবার সঙ্গে, ‘এই সাফল্যটি আমাদের সকল কোচ ও ছাত্রদের কঠোর পরিশ্রমের ফসল। আমরা সবাই ক্রিকেটারদের বুঝিয়েছি, তোমাদের অনেক বড় পর্যায়ে খেলার যোগ্যতা আছে। তোমরা নিজেদের প্রমাণ করে দেখাও।’

সেটি তাঁর ছাত্ররা দেখিয়েছেনও। এবার প্রিমিয়ার লিগে আলো ছড়ানোর পালা।