যেখানে মিলে গেছেন পেলে-ম্যারাডোনা

পেলে-ম্যারাডোনার মধ্যে এমন সম্প্রীতি খুব কমই দেখা গেছে। ছবি: এএফপি
পেলে-ম্যারাডোনার মধ্যে এমন সম্প্রীতি খুব কমই দেখা গেছে। ছবি: এএফপি
>বিশ্বকাপ, দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থের পর্দা ওঠার আর মাত্র ২১ দিন বাকি। দুরু দুরু বুকে ফুটবলপ্রেমীরা ক্ষণগণনা শুরু করে দিয়েছেন নিশ্চয়। শুরু হয়েছে প্রথম আলো অনলাইনেরও ‘কাউন্ট ডাউন’। প্রতিদিন ধারাবাহিকভাবে ক্ষণগণনা নিয়ে একটি বিশেষ রচনা থাকছে। আজ থাকছে ‘২১’ সংখ্যাটি নিয়ে

সর্বকালের সেরা কে? এই প্রশ্নের জবাবে ফুটবল বিশ্ব আজও দুভাগে বিভক্ত। এক ভাগে পেলের সমর্থক, অন্য ভাগে ডিয়েগো ম্যারাডোনার। সমর্থকদের মতো এই দুই কিংবদন্তির মধ্যেও কখনো সেভাবে বনিবনা হয়নি। একই বিশ্বে থেকেও দুজন যেন ‘দুই ভুবনের দুই বাসিন্দা’! কিন্তু বিশ্বকাপ, হ্যাঁ এই বিশ্বকাপ দুজনকে মিলিয়ে দিয়েছে একই দিনে!

১৯৭০ বিশ্বকাপ ফাইনালে ইতালিকে ৪-১ গোলে হারিয়েছিল ব্রাজিল। এ ম্যাচের ১৮ মিনিটে ব্রাজিলের হয়ে প্রথম গোলটি করেছিলেন পেলে। বিশ্বকাপে এটাই ছিল ‘কালোমানিক’-এর শেষ গোল। সেদিন ছিল ২১ জুন। দুই যুগ পর ১৯৯৪ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে প্রথম ম্যাচে গ্রিসের মুখোমুখি হয়েছিল আর্জেন্টিনা। এ ম্যাচে আর্জেন্টিনার ৪-০ ব্যবধানের জয়ে গোল করেছিলেন ম্যারাডোনা। পরের ম্যাচে নাইজেরিয়ার বিপক্ষেও খেলেছিলেন তিনি। কিন্তু গোল পাননি। এরপর তো ডোপ টেস্টে ধরা পড়ে নিষিদ্ধ হলেন।

আর তাই গ্রিসের বিপক্ষেই গোলটাই হয়ে যায় ম্যারাডোনার বিশ্বকাপ ক্যারিয়ারের শেষ গোল। সেই বছর দিনপঞ্জির পাতা উল্টে দেখতে পারেন গ্রিস-আর্জেন্টিনা ম্যাচের দিনটাও ছিল ২১ জুন। অর্থাৎ ফুটবল অন্তত একটি ব্যাপারে মিলিয়ে দিয়েছে পেলে-ম্যারাডোনাকে—বিশ্বকাপে দুজনের শেষ গোলই একই দিনে!

বিশ্বকাপে ইতালি তৃতীয় শিরোপা জিতেছে স্পেনে ১৯৮২ সালে। সেবার ফাইনালে পশ্চিম জার্মানিকে ৩-১ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল দিনো জফের ইতালি। দেশটির ইতিহাসে অন্যতম সেরা এই গোলরক্ষক ও অধিনায়ক তত দিনে চল্লিশের কোটা টপকে গেছেন। দিনো জফ-পাওলো রসিদের সেই দলে ডিফেন্ডার ছিলেন জিউসেপ্পে বারগোমি। পরবর্তী সময়ে ইন্টার মিলানের কিংবদন্তি বনে যাওয়া বারগোমির তখন ১৮ বছরের তরুণ। জফ ও বারগোমি মিলে সেই বিশ্বকাপে একটি রেকর্ড গড়েছিলেন ইতালির হয়ে।
বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন কোনো দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে সর্বোচ্চ বয়সের ব্যবধানটা আজও ’৮২-র ইতালির দখলে। জফ ও বারগোমির মধ্যে বয়সের ফারাক ছিল ২১ বছরের কিছু বেশি। এ ছাড়াও বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ ড্রয়ের রেকর্ডটাও ইতালির—২১ ম্যাচ।

ব্রাজিল ছাড়া বিশ্বকাপ কেউ কল্পনা করতে পেরেছেন? সম্ভবত না। কারণ, ব্রাজিল এই সুযোগটা কাউকে দেয়নি। বিশ্বকাপের ইতিহাসে একমাত্র দল, যাঁরা এ পর্যন্ত সব কটি টুর্নামেন্টের চূড়ান্ত পর্বে খেলেছে। রাশিয়া বিশ্বকাপে ব্রাজিল যেদিন মাঠে নামবে, সেদিন তাদের এই রেকর্ডের পাশে লেখা হবে—টানা ২১তম টুর্নামেন্ট!

১৯৫৪ বিশ্বকাপকে অনেকে মনে রেখেছেন গোলের জন্য। ২৬ ম্যাচের এই টুর্নামেন্টে গোল হয়েছিল ১৪০টি! ম্যাচ প্রতি গোলগড় ৫.৩৮! বিশ্বকাপের ইতিহাসে কোনো টুর্নামেন্টে এত বেশি গোল আর দেখা যায়নি। আর এই বিশ্বকাপেই ন্যূনতম তিনটি করে গোল করেছেন—এমন খেলোয়াড় ছিলেন ২১ জন!