রোমেরোকে হারিয়ে ফেলা বড় ধাক্কা মনে করেন মাচেরানো

গত বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে তুলেছিলেন রোমেরো। ফাইল ছবি
গত বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে তুলেছিলেন রোমেরো। ফাইল ছবি
>

অনুশীলনে চোটের কারণে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেছেন সার্জিও রোমেরো। বদলি হিসেবে ডাকা হয়েছে নাহুয়েল গুজমানকে। যদিও হাভিয়ের মাচেরানো মনে করেন, রোমেরোর শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়।

গত বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের পেনাল্টি শ্যুটআউটের কথা মনে আছে? গোলপোস্টের নিচের রেখা ধরে হেঁটে দুই পোস্টে লাথি কষতেন সার্জিও রোমেরো। এরপর শিকারে থাবা বসানোর অপেক্ষায় থাকা বাঘের মতো উবু হয়ে বসতেন। আর এভাবেই হল্যান্ডের বিপক্ষে ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন টাইব্রেকারের দুটি শট। একেকটা শট ঠেকাতেন, আর জার্সির বুকে বসানো আর্জেন্টিনার লোগো দিতেন খামচি। ভামোস ভামোস বলে চিৎকার করে চুমু আঁকতেন নিজের গ্লাভস জোড়ায়।

দলের প্রতি, দেশের প্রতি রোমেরোর এই পাগলাটে আবেগ আলাদা করে নজর কেড়েছিল গতবার। সেই রোমেরোকে এবার দেখা যাবে না গোলপোস্টের নিচে। গত বিশ্বকাপে নিজেকে নিংড়ে দেওয়া আরেক খেলোয়াড় হাভিয়ের মাচেরানো বলছেন, আর্জেন্টিনা শুধু একজন খেলোয়াড় হারায়নি। হারিয়ে ফেলেছে একজন নেতা!

গত বিশ্বকাপে রোমেরোর অমন পারফরম্যান্স কাছ থেকে দেখার পর তাঁকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে নিয়ে গিয়েছিলেন বিশ্বকাপের পর ইংলিশ ক্লাবটির দায়িত্ব নেওয়া লুই ফন হাল। ক্লাবটির প্রথম পছন্দের গোলরক্ষক না হলেও অর্পিত দায়িত্ব ভালোমতোই সামলেছেন। ভালো ফর্মে থেকেই এসেছিলেন বিশ্বকাপের ক্যাম্পে। সেখানেই অপ্রত্যাশিত চোট ছিটকে দিল আর্জেন্টিনার নাম্বার ওয়ানকে।

নাহুয়েল গুজমানকে বিকল্প হিসেবে ডাকা হয়েছে। কিন্তু মাচেরানো মনে করেন, এই শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়, ‌‘রোমেরোর চোট অনেক বড় একটা ধাক্কা। শুধু তো ফুটবলার হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবেও ওকে আমরা মিস করব। ওই এই দলের নেতা হয়ে ছিল ১০ বছর ধরে।’

তবে মাচেরানো এও মনে করেন, সামনে বিশ্বকাপ। এখন আর পেছন ফিরে তাকানোর সুযোগ নেই, ‘ফুটবলে অনেক কিছুই ঘটবে। এখন গুজমানকে স্বাগত জানিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আমরা অপ্রত্যাশিত এক ধাক্কা খেয়েছি। তবে আমাদের এই বিশ্বাস আছে, কোচ উপযুক্ত ২৩ খেলোয়াড়ের ওপর আস্থা রাখবেন।’

মাচেরানোর জন্য এই বিশ্বকাপও বিশেষ আবেগের। এই টুর্নামেন্ট খেলেই জাতীয় দলের দীর্ঘ ক্যারিয়ারকে বিদায় জানাবেন। এই বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার পক্ষে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ডও হয়ে যাবে তাঁর। গতবার ফাইনালে একটুর জন্য পারেনি আর্জেন্টিনা। পারেনি শিরোপার হাহাকার ঘোচাতে। টানা তিনটি টুর্নামেন্টের ফাইনালে ওঠাও তাই অতৃপ্তিই এনে দিচ্ছে বেশি। মাচেরানো বলছেন, ‘কখনো কখনো ফুটবলে এমন কিছু ঘটে যেটা আপনার-আমার বোধের বাইরে। আমরা জানি, বিশ্বকাপ কতটা কঠিন। তবে আমরা বিশ্বকাপে লড়াই করতেই যাব। আমার জন্য এটাই শেষ সুযোগ। আশা করি আমরা প্রত্যাশা পূরণ করতে পারব। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সবাই যেন লড়াকু এক আর্জেন্টিনা দলকেই দেখতে পায়।’