বল টেম্পারিংয়ের কলঙ্কের চাপে গর্ভপাত ঘটেছে ক্যানডিস ওয়ার্নারের

ওয়ার্নার পরিবার। বল টেম্পারিংয়ের জন্য এখন তাদের সুখের ঘরে দুঃখের আগুন। ছবি: এএফপি
ওয়ার্নার পরিবার। বল টেম্পারিংয়ের জন্য এখন তাদের সুখের ঘরে দুঃখের আগুন। ছবি: এএফপি
>দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কেপটাউন টেস্টে বল টেম্পারিংয়ে জড়িত থাকায় নিষিদ্ধ হন ডেভিড ওয়ার্নার। ওয়ার্নার এবং তাঁর পরিবারকে নিয়ে তখন নানা রকম অপমানজনক কথা বলেছে সবাই। ক্যানডিস ওয়ার্নার জানিয়েছেন, সে সময় মানুষের নানা কটূক্তির জন্য প্রবল মানসিক চাপ আর উড়োজাহাজে করে কষ্টসাধ্য ফ্লাইটের জন্যই এই গর্ভপাত।

বল টেম্পারিংয়ে জড়িত থাকার শাস্তি পাচ্ছেন ডেভিড ওয়ার্নার। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া তাঁকে ১২ মাসের জন্য নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু পারিবারিকভাবে যে আঘাত তিনি পেয়েছেন, তার কাছে এই শাস্তি কিছুই না। দোষ স্বীকার করে গত মার্চে ওয়ার্নারের অশ্রুসিক্ত সংবাদ সম্মেলনের সপ্তাহ খানেক পরই গর্ভপাত ঘটেছে তাঁর জীবনসঙ্গী ক্যানডিস ওয়ার্নারের।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কেপটাউন টেস্টে বল টেম্পারিংয়ের জন্য অভিযুক্ত হন স্টিভেন স্মিথ, ক্যামেরন ব্যানক্রফট ও ওয়ার্নার। এই ঘটনায় তিন ক্রিকেটারকেই নিষিদ্ধ করে দেশে ফিরিয়ে আনে সিএ। ক্যানডিস জানিয়েছেন, সে সময় প্রবল মানসিক চাপ আর উড়োজাহাজে করে কষ্টসাধ্য ফ্লাইটের জন্যই এই গর্ভপাত।

অস্ট্রেলিয়ার এক নারী সাময়িকীতে ক্যানডিস বলেছেন, ‘ডেভকে ডেকে জানাই রক্ত ঝরছে। আমরা জানতাম গর্ভপাত ঘটছে। একে অপরকে জড়িয়ে ধরে দুজনেই কেঁদেছি। এই গর্ভপাতটা আসলে একটি ভয়ংকর সফরের মর্মান্তিক সমাপ্তি।’

ক্যানডিস সেই সাময়িকীকে আরও বলেছেন, ‘বল টেম্পারিং নিয়ে জনতার নানা অপমানজনক কথা সহ্য করার পরীক্ষা দিতে গিয়ে এই খেসারত গুনতে হয়েছে। ওই মুহূর্ত থেকে আমরা সিদ্ধান্ত নিই, আর কখনো কোনো কিছুকে আমাদের জীবনে এভাবে প্রভাব ফেলতে দেব না।’

ক্যানডিস আরও বলেন, ‘আমরা খুব সুখে ছিলাম। জানতাম, আরেকজন খুদে ওয়ার্নার আসছে। বাচ্চাটা আমাদের কাছে কতটা আকাঙ্ক্ষিত ছিল, সেটা বোধ হয় দুজনের কেউই বুঝতে পারি না।’

ওয়ার্নার পরিবারে দুটি সন্তান রয়েছে। তিন বছর বয়সী আইভি মে ও দুই বছর বয়সী ইন্ডি রে। ক্যানডিস জানিয়েছেন, কেপটাউনে যাওয়ার পর বুঝতে পারেন তিনি অন্তঃসত্ত্বা। বল টেম্পারিংয়ের ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে স্মিথ ও ব্যানক্রফটদের সঙ্গে ফিরতে চেয়েছিলেন ওয়ার্নার। কিন্তু তাঁদের দুজনকে আলাদা ফ্লাইটে দেশে পাঠানো হয়। আর ওয়ার্নার এবং তাঁর পরিবারকে পাঠানো হয় আরেকটি ফ্লাইটে, যেটা ছিল লম্বা সময়ব্যাপী এবং কষ্টকর।

ক্যানডিস বলেন, ‘আমরা বেশ কষ্টকর এবং সবচেয়ে দীর্ঘ ফ্লাইটে এসেছি। কেউ জানত না আমি অন্তঃসত্ত্বা। ডেভ আমাকে নিরাপদ রাখতে সম্ভাব্য সব চেষ্টাই করেছে। ও ভয় পাচ্ছিল, এর চেয়ে বেশি চাপে পড়লে আমাদের অনাগত শিশুর বিপদ হবে। আমাদের নিশ্চিত করা হয়েছিল, বিমানবন্দর থেকে আমরা নির্বিঘ্নেই বেরিয়ে যেতে পারব। কিন্তু গণমাধ্যমকে দেখার পর ভীষণ ভেঙে পড়ি—বিশেষ করে ২৩ ঘণ্টা ফ্লাইটের পর। বিশ্ব তো জানত না, আমি তৃতীয় বাচ্চা বহন করছি।’