দাম ও চাহিদায় শীর্ষে ব্রাজিলের জার্সি

গুলিস্তান সমবায় সুপার মার্কেটে উঠে গিয়েছে বিশ্বকাপের জার্সি। ছবি প্রথম আলো
গুলিস্তান সমবায় সুপার মার্কেটে উঠে গিয়েছে বিশ্বকাপের জার্সি। ছবি প্রথম আলো
হাজার হাজার মাইল দূরে বিশ্বকাপ ফুটবল। বাংলাদেশে তবু উত্তেজনার পারদ থাকে অনেক উঁচুতে। সমর্থকদের প্রিয় দেশের পতাকায় সজ্জিত হয়ে যায় পুরো দেশ। নানান পতাকার ভিড়ে সবচেয়ে উজ্জ্বল থাকে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের পতাকা। ফলে জার্সির বাজারগুলোতেও এই দুই দেশের জার্সির চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি


‘ভাই, ব্রাজিল না আর্জেন্টিনা?’

প্রশ্নটা কানে এল দোকানের সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই। বিশ্বকাপ ফুটবলের ধামাকা বেজে উঠলেই প্রশ্নটি সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হয় বাংলাদেশে। ৩২টি দল অংশ নিলেও বাংলাদেশ বিভক্ত হয়ে যায় ফুটবলের দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশকে নিয়ে। রাশিয়া বিশ্বকাপের ঢোলে বাড়ি পড়ার আর তিন সপ্তাহ বাকি থাকায় শুরু হয়ে গিয়েছে সেই জানা প্রশ্ন।

জার্সির বাজারে ঢুকলে এ প্রশ্ন শুনতে হয় আরও বেশি। কোন দলের সমর্থক বেশি? এ বিতর্কের উত্তর দেওয়া সম্ভব নয় জার্সির বাজার ঘুরে। তবে বাজারে নাকি ব্রাজিলের জার্সির দাম ও চাহিদা দুটোই বেশি।

ইতিমধ্যে বিশ্বকাপের দলগুলোর জার্সিতে ছেয়ে গেছে স্পোর্টস মার্কেটগুলো। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, জার্মানি, পর্তুগালসহ বিভিন্ন দেশের জার্সিতে ঢেকে যাওয়া দোকানগুলো যেন জাতিসংঘের শাখা অফিস! সঙ্গে দেশগুলোর বাহারি পতাকা আছেই। রাস্তাঘাটেও দেখা যাচ্ছে পতাকা বিক্রির হিড়িক। সব মিলিয়ে ঢাকায় ভালোভাবেই টের পাওয়া যাচ্ছে বিশ্বকাপের আমেজ। প্রতি বিশ্বকাপেই যা হয়!

বাজারে এবার কোন দেশের জার্সির চাহিদা বেশি? গুলিস্তানের সমবায় টুইন টাওয়ার মার্কেটের স্পোর্টস সেন্টারের দোকানি আলমগীর হোসেনের দাবি, ব্রাজিলের জার্সির চাহিদাই এখনো বেশি। আর অন্যান্য যেকোনো দেশের তুলনায় পাঁচবারের বিশ্বকাপজয়ী দলটির জার্সির দামও নাকি বেশি। কারণ? ‘ব্রাজিলের জার্সি বাজারে এসেছে বেশি দিন হয়নি। এখন পর্যন্ত সবগুলো দোকান ওঠাতেও পারেনি ব্রাজিলের জার্সি। ফলে চাহিদার তুলনায় বাজারে জার্সি কম। দামও তাই বেশি।’ পাঁচ শ থেকে শুরু করে হাজার টাকাতেও নাকি বিকোচ্ছে জার্সি।

সে তুলনায় আরেক সমর্থকপুষ্ট দল আর্জেন্টিনার জার্সির দাম তুলনামূলক কম। কারণ হিসেবে অর্থনীতির তত্ত্ব—প্রচুর জোগানকে—সামনে আনলেন আলমগীর, ‘আর্জেন্টিনার জার্সি বাজারে ছাড়া হয়েছে দুই মাসেরও বেশি সময় আগে। ফলে জার্সি অনেক আগেই বাজারে চলে এসেছে। তাই দামও অনেক কম।’ ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে দুবারের বিশ্বকাপজয়ী দলের জার্সি।

মূলত বিশ্বকাপের কয়েক দিন আগে থেকে শুরু হয় বিশ্বকাপ ‘মেগা ধামাকা’। তবে এবারের বিশ্বকাপ উন্মাদনা রমজানের কারণে কম হতে পারে বলে মনে করছেন জার্সি ব্যবসায়ীরা। সে হিসাবে এবার জার্সি আগের তুলনায় কম বিক্রি হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন রমনা স্পোর্টসের মালিক আবদুল মতিন, ‘জার্সি বিক্রি হওয়া শুরু হয় মূলত বিশ্বকাপের ১৫ দিন আগে। কিন্তু এবার তো রমজান। তাই এবার জার্সি কম বিক্রি হতে পারে বলে মনে হচ্ছে।’

ব্যবসা নিয়ে শঙ্কা থাকলেও দোকানগুলোর বিশ্বকাপ উদ্যমে কোনো ঘাটতি নেই। ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার পাশাপাশি জার্মানি ও পর্তুগালের জার্সির চাহিদা মাথায় রেখেই সেজে উঠছে মার্কেটগুলো। ফুটবল বিশ্বকাপ বলে কথা!