লিভারপুল গোলরক্ষক কারিয়াস হত্যার হুমকি পাচ্ছেন

মাঠের ভুলে এখন হত্যার হুমকি পাচ্ছেন লিভারপুল গোলরক্ষক লরিস কারিয়াস
মাঠের ভুলে এখন হত্যার হুমকি পাচ্ছেন লিভারপুল গোলরক্ষক লরিস কারিয়াস
>

ফুটবল মাঠে ব্যর্থ হতেই পারেন কেউ। সেই ব্যর্থতায় দলও হারতে পারে। কিন্তু তাই বলে হত্যার হুমকি! চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে দুটো বাজে গোল খাওয়ার খেসারত দিচ্ছেন লিভারপুল গোলরক্ষক লরিস কারিয়াস।

চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালের পর লিভারপুল সমর্থকদের কাছে করজোড়ে ক্ষমা প্রার্থনা করলেন লরিস কারিয়াস। ক্ষমা না চেয়ে উপায়ও ছিল না এই জার্মান গোলরক্ষকের। রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে লিভারপুলের ৩-১ গোলে হারে তাঁর ‘ভূমিকা’ যে প্রবলই। করিম বেনজেমা ও গ্যারেথ বেলকে যে দুটি গোল তিনি ‘উপহার’ দিয়েছেন, তাতেই শিরোপার মীমাংসাটা হয়ে গেছে। আত্মগ্লানিতে ভুগে সমর্থকদের কাছে ক্ষমা তিনি চাইতেই পারেন। কিন্তু ফুটবল মাঠের ব্যর্থতা লিভারপুল গোলরক্ষকের জীবন দুর্বিষহই করে তুলেছেন। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে চলছে নানা ধরনের ট্রল। পুরো ব্যাপারটা ট্রলে সীমাবদ্ধ থাকলেও হতো, কিন্তু কারিয়াস যে রীতিমতো হত্যার হুমকি পাচ্ছেন!

ফেসবুকে এক মন্তব্যকারী মন্তব্য করেছে, ‘আমি প্রার্থনা করি, কারিয়াসের মৃত্যু ক্যানসারে হোক!’ আরেক মন্তব্যকারীর মন্তব্য আরও ভয়াবহ, ‘তাঁর পুরো পরিবার মরুক।’ নিজের সন্তানের মৃত্যুর হুমকিও পেয়েছেন কারিয়াস, ‘আমি ওর মেয়েকে হত্যা করতে চাই।’

কী ভয়াবহ সব হুমকি! মার্সেসাইড পুলিশ অবশ্য কারিয়াসকে দেওয়া হুমকিগুলো খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। হুমকি দানকারীদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছে তারা।

পুলিশের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে কারিয়াসকে দেওয়া হুমকিগুলো নজরে এসেছে। যেকোনো ধরনের হুমকি ও বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য আমরা তদন্ত করে দেখব।’

যাঁকে নিয়ে ঘটনা, সেই কারিয়াস তো শনিবারের ফাইনালের পর রাতে ঘুমাতেই পারেননি। নিজের মুখেই লিভারপুল গোলরক্ষক জানিয়েছেন তাঁর মানসিক অবস্থার কথা, ‘বিশ্বাস করুন, শনিবারের পর থেকে আমি দুই চোখের পাতাই এক করতে পারিনি। চোখ বন্ধ করলেই আমার চোখের সামনে ভেসে উঠছে সেই দুঃস্বপ্নময় মুহূর্তগুলো। আমি সবার কাছে নিজের ভুলের জন্য ক্ষমাপ্রার্থী।’

লিভারপুল কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ অবশ্য পাশেই দাঁড়িয়েছেন কারিয়াসের, ‘আমি এটা নিয়ে কী বলব, কীই-বা বলতে পারি! সবাই তো দেখেছেন। যে ভুল দুটি কারিয়াস করেছে, সেটা সত্যিই ভয়াবহ। সবচেয়ে বড় কথা ভুল দুটো হলো এমন একটা ম্যাচে, দারুণ একটা মৌসুম কাটানোর পর। আমি মনে করি দ্বিতীয় গোলটা (বেলের) এসেছে প্রথম গোলের (বেনজেমা) কারণেই। প্রথম গোলটা যেভাবে হয়েছে, এ ধরনের ম্যাচে সেই দুঃস্বপ্ন থেকে নিজেকে বের করে নিয়ে আসা সত্যিই খুব কঠিন।’

চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে যে দুটি গোল কারিয়াস হজম করেছেন, সেগুলো পেশাদার ফুটবলে খুব বেশি একটা দেখা যায় না। বেলের দূরপাল্লার শট থেকে গোল খেয়েছেন, যেটা খুব সহজেই লুফে নিতে পারতেন তিনি। সতীর্থকে হাত দিয়ে পাস দিতে গিয়ে বেনজেমার মুখে খাবার তুলে দিয়েছেন। ম্যাচ শেষে কারিয়াসের কান্নাভেজা দুই চোখ লিভারপুল সমর্থকদের ক্ষাভটা প্রশমন করলেও আক্ষেপটা কিন্তু তাদের রয়েই যাচ্ছে।