মন্ত্রী নন, 'গোলরক্ষক' হাসানুল হক ইনু!

‘গোল হতে দেব না’ এই পণ করেই মাঠে নামতেন গোলরক্ষক হাসানুল হক ইনু। ঢাকা স্টেডিয়াম থেকে তোলা ছবিটি সংগৃহীত
‘গোল হতে দেব না’ এই পণ করেই মাঠে নামতেন গোলরক্ষক হাসানুল হক ইনু। ঢাকা স্টেডিয়াম থেকে তোলা ছবিটি সংগৃহীত

‘আরে পিন্টু ভাই কেমন আছেন?’ হলরুমে ঢুকতেই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টুকে উদ্দেশ করে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল ইক ইনুর কুশল বিনিময়। পিন্টুর জবাবের মধ্যেই সে আড্ডায় যোগ দিলেন প্রতাপ শংকর হাজরা, নওশেরুজ্জামান, আবু ইউসুফ, শেখ মোহাম্মদ আসলাম, হাসানুজ্জামান বাবলু, শফিকুল ইসলাম মানিকেরা। ফুটবলাকাশের চেনা মুখগুলোকে কাছে পেয়ে হাত বাড়িয়ে কুশলাদি বিনিময়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন ইনু। এখানে তাঁর পরিচয় মন্ত্রীর নয়; তাঁর পরিচয় ‘গোলরক্ষক ইনু’।

অনেকের হয়তো জানা নেই বর্তমান তথ্যমন্ত্রী ছিলেন শীর্ষ সারির একজন ফুটবলার। মোহামেডান স্পোর্টিং ও ওয়ারীর মতো বড় ক্লাবের গোলরক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন। শুধু ফুটবলার নন; ছিলেন অ্যাথলেটও। খেলোয়াড়ি জীবনের বন্ধু ও ছোট ভাইদের কাছে পেয়ে ইনু যেন আজ ডুব দিলেন স্মৃতির সাগরে।

সবাইকে আজ এক ছাতার নিচে এনেছিল একটি বই। যা বাংলাদেশের ১০০ তারকা ফুটবলার নিয়ে লেখা ‘ফুটবলের গল্প ফুটবলারদের গল্প’। প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি মাসুদ আলমের রচিত বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের মিলনায়তনে আজ কে না ছিলেন! স্বাধীনতা-পূর্ব ও পরবর্তী সময়ে মাঠকাঁপানো পিন্টু, ইনু, সালাউদ্দিন থেকে শুরু করে কয়েক বছর আগে মাঠ দাপিয়ে বেড়ানো আলফাজ, আরমানেরাও। এঁদের জীবনের গল্প দিয়েই সাজানো ‘ফুটবলের গল্প ফুটবলারদের গল্প’।

বই মোড়ক অনুষ্ঠানে বাঁ থেকে আশরাফউদ্দিন আহমেদ চুন্নু, বশির অাহমেদ,মাসুদ আলম (লেখক), হাসানুল হক ইনু, কাজী সালাউদ্দিন, জাকারিয়া পিন্টু। ছবি: প্রথম আলো
বই মোড়ক অনুষ্ঠানে বাঁ থেকে আশরাফউদ্দিন আহমেদ চুন্নু, বশির অাহমেদ,মাসুদ আলম (লেখক), হাসানুল হক ইনু, কাজী সালাউদ্দিন, জাকারিয়া পিন্টু। ছবি: প্রথম আলো

সাম্প্রতিক সময়ে দেশের ফুটবলের অবস্থা খারাপ হলেও বাংলাদেশের ফুটবলের একটা ঐতিহ্য আছে। একসময় ফুটবল মানেই কানায় কানায় ভরে উঠত স্টেডিয়াম। ফুটবলারদের ছিল আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা। সেই ইতিহাসকে সংরক্ষণ করার জন্যই কয়েক বছরের প্রচেষ্টায় বইটি লিখেছেন মাসুদ। যার প্রচ্ছদে আছে ১৯৭৩ সালে মালয়েশিয়ার মারদেকা কাপে অংশগ্রহণ করতে যাওয়া বাংলাদেশ জাতীয় দলের প্রথম ছবি।

মাসুদের এই শুভ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সবাই। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকা ইনু বলেন, ‘খেলোয়াড় হিসেবে কেমন ছিলাম, তা তো আর নিজে বলতে পারব না। তবে বইয়ে ১০০ জনের তালিকায় যখন আমি আছি, ভালোই হয়তো খেলতাম। বইটি ইতিহাস হয়ে থাকবে।’

দেশের ১০০ তারকা ফুটবলার নিয়ে লেখা বইয়ে নিজেকে দেখতে পেরে বর্তমান ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনও মহা খুশি, ‘১০০ জন ফুটবলারের মধ্যে আমি আছি, খুবই আনন্দের। আজ ফুটবলের অনেকের সঙ্গে অনেক দিন পর দেখা হয়ে খুব ভালো লাগছে।’
সালাউদ্দিনের শেষ কথাটিই যেন বইয়ের কথা,‘সবাইকে এক মলাটের মধ্যে নিয়ে আসা।’